বোমা আতঙ্ক আর তীব্র ক্ষুধায় কাটছে গাজাবাসীর ঈদ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঃ
সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের চাঁদ উঠেছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায়। কিন্তু ঈদের সেই আনন্দ তাদের মাঝে নেই। তীব্র ক্ষুধা নিয়ে বোমা ও গুলির আতঙ্কে তাদের সময় কাটাতে হচ্ছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হাজার হাজার রকেট ছুড়ে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এতে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৪০০ জন। এরপরেই বছরের পর বছর ধরে গাজায় চলা সামরিক পদক্ষেপ জোরালো করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে প্রাণ হারিয়েছে ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, আহত ৭২ হাজারেরও বেশি। হতাহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক। এমন অবস্থায় বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হচ্ছে।
বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিমদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানেই আনন্দ। সকালে নতুন জামা পরে নামাজ, বাড়িতে বাহারি খাবার। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে আড্ডা। সব মিলে ঈদ হয়ে উঠে পূর্ণ। কিন্তু গাজার মুসলিমদের কাছে ঈদ এমন নয়। এখানে প্রতি মুহূর্তে বেঁচে থাকার লড়াই করতে হয়। বোমার আঘাতে আনন্দ আজ তাদের চূর্ণ।
মাথার ওপর ছাদ নেই, ক্ষুধা নিবারণের খাবার নেই-এমন বাস্তবতায় আজ গাজাবাসীদের ঈদ পালন করতে হচ্ছে। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর এসেছে কাঙ্খিত সেই ঈদ। রোজার দিনগুলোও ছিল দুর্বিষহ। ত্রাণ সংস্থাগুলো উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয়ের কথা বলে আসছে। ইসরায়েলের অনবরত বোমাবর্ষণে গাজা আজ এক মৃত্যু উপত্যকা। এই ধ্বংসযজ্ঞে অনাহারে ভুগছে লাখো ফিলিস্তিনি। ক্ষুধার তাড়নায় ঘাস খেয়ে ইফতার করেছেন তারা।
গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান ছয় মাস পেরিয়ে গেছে। ঈদের আনন্দ করার কোনো জায়গাই সেখানে অবশিষ্ট নেই। পুরো গাজা এখন এক ধ্বংসস্তুপ। ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রেহাই পায়নি মসজিদ, পার্ক, ঐতিহাসিক ভবন কিছুই। অন্তত ২০০ পুরাকীর্তি ধ্বংস করেছে তারা।
তবে এর মাঝেও ঈদের আনন্দ খুঁজছেন গাজাবাসী। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ নিজের বসতবাড়ি হারিয়েছেন। তারপরও শিশুদের কথা ভেবে তারা ঈদের বাজার করতে গেছেন। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজার কয়েকটি মার্কেটে ঈদের আনন্দ খুঁজতে কেনাকাটা করছেন। ধ্বংসস্তূপের সামনেই বসেছে অস্থায়ী বাজার। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করছেন গাজাবাসী।
মাথার ওপর ছাদ নেই। কিন্তু মায়ের ভালোবাসা তো আছে। খোলা আকাশের নিচে সেই মায়েরা বাচ্চাদের জন্য তৈরি করছেন ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী কেক ও মিষ্টান্ন।