পেকুয়ায় শ্রমিক দলের দুপক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

কক্সবাজারের পেকুয়ায় সিএনজি, টেম্পু, অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের লাইন দখলকে কেন্দ্র করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন শহিদুল ইসলাম ওরফে শওকত (৩৬) নামের এক শ্রমিক দল নেতা। এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুজন।

সোমবার রাত ১১ টার দিকে পেকুয়া বাজারের পশ্চিম পাশে ওয়াপদা অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শওকত উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি সদর ইউনিয়নের ভোলাইয়াঘোনা এলাকার মৃত শফিউল আলমের ছেলে।

আহতরা হলেন— নিহত শওকতের ছোট ভাই মোহাম্মদ শাকের (২৭) ও চাচাতো ভাই মোহাম্মদ তারেক (২৩)। তাদেরকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পেকুয়া সদর পশ্চিম জোন শ্রমিক দলের দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, অপর পক্ষটির নেতৃত্ব দেন সাবেক সহসভাপতি বদিউল আলম ও সাজ্জাদুল ইসলাম। এই দুটি পক্ষ যথাক্রমে পেকুয়া উপজেলা শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুনুর রশিদের অনুসারী।

শ্রমিকদলের অন্তত ৬-৭জন নেতা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে শ্রমিক দলের দুপক্ষই পেকুয়া সিএনজি, টেম্পু, অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের লাইন দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। এর জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ছুরিকাঘাতের ঘটনাটি ঘটেছে।

শ্রমিকদলের নেতারা আরও বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে গত রোববার রাতে শহিদুল ইসলাম শওকত এবং সাজ্জাদুল ইসলামের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পেকুয়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ পর্যন্ত গড়ায়। তিনি গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে দুইপক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে বিরোধ মীমাংসা করে দেন এবং বিশৃঙ্খলা করলে দল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন।

এরপর রাত আটটার দিকে ভোলাইয়াঘোনা রাস্তার মাথায় সাজ্জাদুল ইসলামের এক চাচাতো ভাইকে মারধর করেন শওকত ও তার ভাই শাকের। এ ঘটনার জের ধরে সাজ্জাদুল ইসলামের লোকজন দলবদ্ধ হয়ে শওকত, সাকের ও তারেকের ওপর আক্রমণ করে। এতে তিনজনই ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন।

পরে স্থানীয় লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনেরা আহতদের উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় শওকতকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছালে শওকত মারা যান।

শওকতের আত্মীয়-স্বজনেরা জানিয়েছেন, লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ সেখান থেকে পেকুয়া নেওয়া হবে।

এ বিষয় জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, হতাহত ও হামলাকারী-সবার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। এখানে শ্রমিক সংগঠনের কোনো বিষয় সম্পৃক্ত নেই। আমার সঙ্গে যে ওসমানের বিরোধের কথা বলা হচ্ছে, সেই ওসমানের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। হামলার কথা শুনে আমি আর ওসমান দুজনে একসঙ্গে হাসপাতালে গিয়েছি।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, হামলার কথা শুনার পরই ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছি। কারা খুন করেছে, কী কারণে এবং কেন খুন করা হয়েছে সব কিছুর তথ্য আমরা সংগ্রহ করছি। লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য