নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ নামে কর্মসূচি পালন করবে তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল কাদের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

সমন্বয়ক জানিয়েছেন, জাতির এই দুর্দিনে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অপরাধে শহীদ, আহত, পঙ্গু ও গ্রেপ্তার হওয়া সবার স্মরণে আগামীকাল দেশব্যাপী ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

গণহত্যা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল শুক্রবার মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া, শহীদদের কবর জিয়ারত, মন্দির, গির্জাসহ সব উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন ও জুমার নামাজ শেষে ছাত্র-জনতার গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
 

বাংলাদেশের সব স্তরের নাগরিককে আগামীকালের ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের প্রাণের জন্মভূমি আজ এক মহাসংকটকাল অতিক্রম করছে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা হামলা পরিচালনা করে শান্তি প্রিয় ছাত্র-জনতার রক্তে রাজপথকে রঞ্জিত করছে।

কারো পরিচয় শিক্ষার্থী হলে তার ফোন চেক করে অত্যাচার-নির্যাতন চালানোর মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড অথচ আজ ছাত্র হওয়া যেন অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক সমাজও রক্ষা পাচ্ছে না তাদের নির্যাতনের হাত থেকে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করতেও ছাড়ছে না।
শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সমর্থনকারী ছাত্র-জনতা কাউকে পেলেই গ্রেপ্তার ও এর মাধ্যমে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। পরবর্তীতে বাছাই করে পাড়া মহল্লায় রেইড দিয়ে গণগ্রেপ্তারের নামে গ্রেপ্তার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে তারা। গুম করার হুমকি দিয়ে আদায় করছে মোটা অঙ্কের অর্থ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় জন সমন্বয়কসহ অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ কেন্দ্রীয় ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয় থেকে ছেড়ে দিলেও এখনো ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আক্তার হোসেন, সমন্বয়ক আরিফ সোহেলসহ অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে কারাগার ও রিমান্ডে নির্যাতন করছে।

জুলুম-নির্যাতনে নিষ্পেষিত ছাত্র-জনতা মুক্তির প্রহর গুনছে। অসংখ্য ছাত্র-জনতা হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়ে। অনেক ছাত্র ও সাধারণ মানুষ চোখ, কান, হাত, পা কিংবা শরীরের অন্য কোনো অঙ্গ হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছে।
 

আজ ছাত্রসমাজ ঘরে শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না। প্রতিমুহূর্তে কাটাতে হচ্ছে গ্রেপ্তার ও গুম হওয়ার আতঙ্কে। শহীদ ও গুম হয়ে যাওয়া মানুষের স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠছে বাংলার আকাশ বাতাস। এ ছাড়া আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলীর ওপর ক্যাম্পাসের ভেতরে হামলা করেছে পুলিশ নামক সন্ত্রাসীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষিকা শেহরীন আমিন মোনামী ও নুসরাত জাহান চৌধুরীর গায়েও হাত তুলেছেন পুলিশের কিছু কর্মকর্তা। এই ঘৃণ্য হামলার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এ বিভাগের অন্যান্য