রুমানিয়ার ভিসা নিয়ে টালবাহানা, হুমকির অভিযোগ
রুমানিয়ায় লোভনীয় কাজ দেওয়ার কথা বলে বাংলাদেশি কর্মীদের কাছ থেকে তিন থেকে চার লাখ টাকা নেয় তারা। এমন কর্মীর সংখ্যা ৭০ থেকে ৭৫ জন বলে দাবি করছেন অভিযোগকারীরা। কিন্তু দেড়-দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তারা ভিসা পাননি। ওই কর্মীরা এখন টাকা ফেরত চাইছেন।
অভিযোগকারীদের একজন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মো. রাশেদ মোল্লা। চলতি বছরের ১৫ মার্চ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ওই রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেন তিনি
রাশেদ মোল্লা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অভিযোগ করার পর আমি আমার টাকা ফেরত আনতে তাদের অফিসে যাই। কিন্তু টাকা না দিয়ে তারা উল্টো আমাকে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়েছে।
অন্য অভিযোগকারী লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা মিজান উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে তারা আমার কাছ থেকে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা আদায় করেছে। মাঝখানে ভারতের ভিসা করিয়েছে। ভারত ঘুরে এলাম, অথচ ভিসা পেলাম না। এখন মনে হচ্ছে, তারা প্রতারণা করছে। তারা শুধু হয়রানি করে যাচ্ছে। কাজের কাজ কিছুই করছে না।’
মিজান উদ্দিন বলেন, ‘সুদে ছয় মাসের জন্য ধার করে এই টাকা জোগাড় করেছি। ভেবেছিলাম রুমানিয়া গিয়ে আয় থেকে এই ধারের টাকা পরিশোধ করব। এখন উল্টো প্রতি মাসে ১৫ হাজার করে টাকা দিতে হচ্ছে। আয়রোজগার না থাকায় এই ঋণের বোঝা টানব কী করে, বুঝতে পারছি না!’
আরেক ভুক্তভোগী কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বাসিন্দা শিহাব উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি রুমানিয়া যাওয়ার জন্য তিন লাখ টাকা দিয়েছি তাদের। ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে টাকাগুলো দিয়েছি। তারা আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে।’
তিনি বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারিতে তারা (এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপ বিডি) আমাদের বলল যে মার্চের ১০ তারিখের মধ্যে কাজ না হলে টাকা ফেরত দেবে। এরপর বলল এপ্রিলের ১০ তারিখের মধ্যে ভিসা না হলে টাকা ফেরত দেবে। এখন তো আমাদের ফোনই ধরে না। এরা আমাদের দুই বছর ধরে আটকে রেখেছে। টাকা-পাসপোর্ট কোনোটাই ফেরত দিচ্ছে না। অন্য কোনো দেশেও যেতে পারছি না।’
এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করছেন এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপ বিডির স্বত্বাধিকারী মো. লোকমান শাহ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে কোনো হুমকি দিইনি। এখান থেকে রুমানিয়ার ভিসা প্রতিনিধিদল হুট করে চলে যাওয়ায় ভিসা নিয়ে সমস্যা হয়েছে। এটা আমার আয়ত্তের মধ্যে ছিল না। তবে আজ (১৮ এপ্রিল) থেকে এই সমস্যা আর থাকছে না। কিছুক্ষণ আগে আমার রুমানিয়ার দূতাবাসের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের কর্মীরা ২৯ এপ্রিল থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাবেন। তখন থেকে যাঁরা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেবেন, তাঁরাই ভিসা পাবেন।’
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’