মাভাবিপ্রবি’তে ৩ তলার ছাদ থেকে ছাত্রকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ
সিলেটের সময় ডেস্ক :
টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপের ওপর সভাপতি গ্রুপের হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় এক সমর্থককে তিন তলার ছাদ থেকে ফেলে মারাত্মক আহত করার অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবীর।
গতকাল মঙ্গলবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।আহতরা হলেন- বিএনবি বিভাগের সোহানুর রহমান সোহান, আইসিটি বিভাগের জয় ধর, ক্যামিস্ট্রি বিভাগের সজিব শেখ, অর্থনীতি বিভাগের সৌরভ, মিনার, নাঈম রাজ, আইসিটি বিভাগের সৌরভ, টেক্সটাইল বিভাগের তামীম।
এদের মধ্যে সোহানকে তিন তলার ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে এবং বাকিদের দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে বলে জানা যায়। আহতদের টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
আহতরা জানান, রাতের খাবার পর তারা হলের (জননেতা আব্দুল মান্নান হল) ছাদে বসে গল্প করছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মানিক শীলের অনুসারী সাফি মোরসালিন, আবিদ, রকি, ছাত্রদল সমর্থিত ইদ্রিস, রবিউল, রুবেল, বিশ্বজিৎ, অপুর নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসী দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় অন্তত ৭-৮ জন আহত হয়। এ সময় সোহানকে তিন তলার ছাদ থেকে ফেলা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আহতরা আরও জানান, সোহানকে হাসপাতালে পাঠানো হলে ডাক্তার জানান, তার কোমর ভেঙে গেছে ও দুই পায়ের হাড় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। পরে তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়া পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের রকি গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ জননেতা আব্দুল মান্নান হলে তল্লাশি চালিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মানিক শীল ও তার অনুসারীদের কক্ষ থেকে অন্তত ২০টি লোহার রড, দুটি চাপাতি উদ্ধার করে।
জানতে চাইলে ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর রাখতে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি।
এদিকে ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মানিক শীল ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদিকুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুভূতি সাপেক্ষে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেই। এই বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি, মামলা পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ঘটনার পর জননেতা আব্দুল মান্নান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আশরাফ হোসাইন তালুকদার জানান, ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।