ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের বাধা

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি ও অব্যাহত নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছয়টি ছাত্রসংগঠন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে বাধা দেন।

আজ সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল শেষে বিক্ষোভকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল-গালিব ও তার অনুসারীদের সঙ্গে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

এ বিষয়ে নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, ‘বিক্ষোভ মিছিলের পর বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য প্রদানের আগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বাধা সৃষ্টি করেন। যে দেশে গণতন্ত্রের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই, সে দেশে তো তারা বাধা দেবেই—এ বিষয়ে তাদের লাইসেন্সও রয়েছে। সরকারের কাছ থেকেই তারা এই অধিকার পেয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব হোসেন বলেন, ‘ধর্ষণের প্রতিবাদে আমরা বিক্ষোভ মিছিল করছিলাম। এ সময় আমাদের বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা প্রদান করে। আমরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা মনে করি, ধর্ষণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন, এটি সামনে আরও বেগবান হবে। ছাত্রলীগের বাধাকে উপেক্ষা করে আমাদের কার্যকলাপ সামনে এগিয়ে যাবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি রায়হান আলি বলেন, ‘কোন দেশ আছে যে, সরকারপ্রধানকে প্রশ্নের মুখোমুখি করা যাবে না। “শেখ হাসিনার কাছে জবাব চাই”—এমন স্লোগান নাকি আমরা দিতে পারব না। ২০২০ সালে সিলেটের এমসি কলেজে ধর্ষণ, ২০১৮ সালে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধর্ষণের ঘটনা আমরা দেখেছি। কিন্তু এগুলোর একটারও বিচার হয় না। এদের সাথে জড়িত কারা? ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরাই এসব কাজে লিপ্ত। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলেই আমাদের বাধা প্রদান করা হয়।’

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ‘কতিপয় ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীর নামে কটূক্তিমূলক কথা এবং ছাত্রলীগের নামে বিতর্কিত স্লোগান দিচ্ছিলেন। ক্যাম্পাসে সরকার ও ছাত্রলীগের নামে স্লোগান দিতে মানা করেছি। ব্যক্তির দায় কখনো সংগঠন নেবে না। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের যে সকল নেতাকর্মীরা এ ধর্ষণের ঘটনার সাথে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছে এবং তাদেরকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের কাছে আমি অনুরোধ জানিয়েছি, এ ক্যাম্পাস আমার, আপনার সবার। ক্যাম্পাসকে স্থিতিশীল রাখতে আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে।’

বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন রাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল নাইমসহ নাগরিক ছাত্র ঐক্য, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র যুব আন্দোলন, ছাত্র গণমঞ্চ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতাকর্মীরা।

উল্লেখ্য, গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাবির মীর মশাররফ হোসেন হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জাবি শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিকবিষক সম্পাদকসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

এ বিভাগের অন্যান্য