ওসমানীনগর মা-শিশু হত্যার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ গ্রেপ্তার
সিলেটের ওসমানীনগরে গণধর্ষণের পর শিশু সন্তানসহ দিপু মালাকার (৩৫) নামে নারীকে হত্যার ঘটনায় ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ ইজিবাইক চালক রিয়াজকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে নেত্রকোনার কেন্দুয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (ওসি- তদন্ত) মাঈন উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গণধর্ষণের পর মা-শিশুকে হত্যার ঘটনায় জড়িত চারজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবশেষ ঘটনার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ রিয়াজকে নেত্রকোনা থেকে আজ সকালে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার রিয়াজ ময়মনসিংহের গৌরীপুরের কালীজুড়ি গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে। সে ওসমানীনগরের গদিয়ারচর এলাকায় বসবাস করে আসছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।
এর আগে গত মঙ্গলবার এই ডাবল মার্ডারের সাথে সম্পৃক্ত সন্দেহে আরো ৩ ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
তারা হলেন, জখলু মিয়া (২২), নজরুল ইসলাম (২৭) ও জয়নাল মিয়া (২৭) হত্যার দায় স্বীকার করে নিজেরা জড়িত বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ মার্চ সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার একরাই হাওর থেকে শিশুসহ নারীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত দিপু মালাকার হবিগঞ্জের মাধবপুর মালাকার পাড়ার মৃত দেবেন্দ্র মালাকারের স্ত্রী।
এর আগে ১৭ মার্চ রাত ১০টার দিকে ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার বাড়িতে যাওয়ার পথে ইজিবাইক চালক রিয়াজসহ চার ঘাতক মিলে দিপু মালাকারকে অপহরণ করেন। অপহরণের পর তারা ওই নারীকে উপজেলার একরাই হাওরে নিয়ে রাতভর শিশুর সামনে মাকে গণধর্ষণ করেন।
পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওড়না পেঁচিয়ে দিপুকে হত্যার পর সাক্ষী না রাখতে সাত বছরের শিশু বিকাশ মালাকারকেও শ্বাসরোধে হত্যা করেন চার ঘাতক। হত্যার পর মরদেহ হাওরে পানিতে কচুরিপানায় ঢেকে রাখে। পরদিন রাতে গিয়ে চার ঘাতক মিলে মরদেহের উপর লবণ ছিটিয়ে আসে-যাতে শনাক্ত করা না যায়।
গত ২৪ মার্চ বিকেল সাড়ে ৩টায় ওসমানীনগরের একরাই হাওর থেকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে দিপু মালাকার ও শিশু বিকাশের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ উদ্ধারকালে নিহত নারীর পরনে ছিল সালোয়ার কামিজ।
মরদেহ শনাক্ত করে ২৬ মার্চ নিহতের বড় ছেলে বিজয় মালাকার বাদী হয়ে ওসমানীনগর থানায় অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোমবার (২ এপ্রিল) ওসমানীনগর উপজেলার গদিয়ারচর থেকে জখলুর মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি উপজেলার গুল্মকাপন এলাকার জবেদ আলীর ছেলে। তারই তথ্যমতে মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) ভোরে গদিয়ারচর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে নজরুল ইসলামকে ও একই গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে জয়নাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার (০৩ এপ্রিল) সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আদালতে এ তিনজন হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।