ভালুকা থেকে অপহৃত সমন্বয়ক সিলেটে উদ্ধার
সিলেটের সময় ডেস্ক :
ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে অপহৃত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. মামুন মিয়া ওরফে রামিমকে ২ দিন পর বুধবার রাত ৯টায় সিলেটের বাহুবল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
মামুন মিয়া নেত্রকোনার দূর্গপুরের শ্রীপুর গ্রামের মো. মগবুল হোসেনের ছেলে। তিনি উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের জামিরদিয়া এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করে একই এলাকার নোমান কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডে কর্মরত ছিলেন।
গত সোমবার ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের জামিরদিয়া এলাকা থেকে তিনি নিখোঁজ হন। ওই ঘটনায় মামুনের ভাই মো. ইসলাম উদ্দিন মঙ্গলবার রাতে ভালুকা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
উদ্ধারের পর স্থানীয়দের কাছে মামুনের দেওয়া বক্তব্যে জানা যায়, গত সোমবার রাত ১০টার দিকে ডিউটি শেষে কর্মস্থল থেকে বের হয়ে কর্মস্থলের কাছেই উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের জামিরদিয়া গ্রামের বাসায় ফিরছিলেন তিনি। পথিমধ্যে লিচু বাগানের কাছে অজ্ঞাত তিন ব্যক্তি পেছন দিক থেকে ডাক দেয় এবং তার ভাড়া বাসায় তার সঙ্গে ব্যাচেলর হিসেবে থাকতে চায়। পরে আরও দুইজন ওই স্থানে উপস্থিত হয়ে তার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। পরে তাকে ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে ও অপহরণ করে নিয়ে যায়। অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ২ দিন একটি ঘরে আবদ্ধ করে রাখে।
জনৈক বড় ভাই অপহরণকারীদের মোবাইলে নির্দেশ দেয় মামুনকে হত্যা না করে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। পরবর্তীতে তারা একটি হায়েস গাড়িতে করে নিয়ে হাত-পা বেঁধে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সুনামগঞ্জের বাহুবল উপজেলার বাগানবাড়ি এলাকায় ফেলে রেখে যায়। ওই সময় কয়েকজন পথচারী তাকে সড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখেও সহায়তা করেননি।
চিৎকার শুনে রিয়াজ আল মঞ্জুর নামে বাসচালক মামুনকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে বাহুবল সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। অপহরণকারী মামুনকে হাত-পা বেঁধে মারধর করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ভালুকায় তোফাজ্জল হত্যার ব্যাপারে নানা প্রশ্ন করেন।
তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় ভিডিও ধারণ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ায় তাকে অপহরণ করা হয় বলে মামুন দাবি করেন।
প্রসঙ্গ, গত ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তোফাজ্জল হোসেন নিহত হন। তোফাজ্জল নিহত হওয়ার ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন মামুন। ওই ঘটনায় কোনো মামলা না হওয়ায় মামুন বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের অধিকাংশদের বাড়ি উপজেলার হবিরবাড়ি এলাকায়।
নিহত তোফাজ্জল নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার পিজাহাতি গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
ভালুকা মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবির জানান, সিলেটের বাহুবল উপজেলার রাস্তার পাশ থেকে স্থানীয়রা মামুনকে উদ্ধার করেন। তাকে আনার জন্য জিডির তদন্ত কর্মকর্তা সিলেটে গিয়েছেন। মামুনকে নিয়ে আসার পর বিস্তারিত বলা যাবে।