মদিনা মার্কেটের ফুটপাতে ‘মাছবাজার’ প্রতিদিন ১৫ হাজার টাকার চাঁদা উত্তোলন

সিলেটের সময় ডেস্ক :

সিলেট নগরীর অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা মদিনা মার্কেটের ফুটপাত দখল করে বসানো হয়েছে মাছ এবং সবজির বাজার। এতে করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং পথচারীদের মারাত্মক অসুবিধা হচ্ছে। তারা ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে না পেরে বাধ্য হয়ে গাড়ির রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে। ফলে তারা যে কোন সময় ভয়ংকর দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। মদিনা মার্কেটের আসপাশ এলাকায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু নামি দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী মদিনা মার্কেট দিয়ে চলাচল করেন।

ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে না পারায় স্কুল এবং মাদ্রাসা ছুটির সময় মদিনা মার্কেট পয়েন্টে সৃস্টি হয় ব্যাপক যানযট। অভিভাবক এবং সাধারণ মানুষ বার বার দাবি জানাচ্ছেন ফুটপাতকে দখল মুক্ত করার। এই দাবীর প্রেক্ষিতে গতবছর লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেও অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি।

মদিনা মার্কেট পয়েন্টের পশ্চিম পাশে এবং পূর্ব পাশে বড় দুটি মাছবাজার থাকলেও মাছ ব্যবসায়ীরা সেখানে বসেন না। লামাকাজি থেকে আসা ছমরু মিয়া নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর দৈনিকসিলেটডটকমকে তিনি একশত টাকার একটি রসিদ দেখিয়ে বলেন আমরা অবৈধভাবে এখানে বসিনি। বৃহত্তর মদিনা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির অনুমতি নিয়ে এবং চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করছি। একটু পরেই তার কথার সত্যতা পাওয়া গেলো। বৃহত্তর মদিনা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে এক যুবককে দেখা গেলো রসিদ দিয়ে চাঁদা সংগ্রহ করতে। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা গেলো প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা এভাবে চাঁদা তোলা হয়।

অবৈধ ভাবে চাঁদা সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বৃহত্তর মদিনা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুস সত্তারের মোবাইলে দুপুর ১২টা ১৬ মিনিটে কল দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরে সাধারণ সম্পাদক বাবলু খানের সাথে কথা হয়। তিনি রসিদ দিয়ে চাঁদা নেয়ার কথা স্বীকার করেন।

তিনি জানান, ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা টাকা মার্কেটের চৌকিদার, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যায় আর্থিক সহায়তা দেয়া হয় এই টাকা থেকে। আপনারাতো এই ফুটপাত লিজ নেননি তা হলে কোন বলে রসিদ দিয়ে টাকা চাঁদা তুলছেন ?

এমন প্রশ্ন করলে সাধারণ সম্পাদক বাবলু খান আমতা আমতা করে বলেন, এই টাকা শুধু আমরা তুলছি না ১৯৯৮ সাল থেকে এভাবে তোলা হচ্ছে। টাকা তোলার কথাটি আমাদের গঠনতন্ত্রে রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে কথা বললে, তিনি দৈনিকসিলেটডটকমকে বলেন, সরকারী কোন জায়গা থেকে এভাবে চাঁদা তোলা মোটেই বৈধ নয়। ফুটপাত দখলমুক্ত করতে কোন ধরণের ছাড় দেয়া হবে না।

৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সাবেক প্যানেল মেয়র মখলিছুর রহমান কামরানের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তিনি জানান, ফুটপাত দখল করে মাছবাজার সবজিবাজার এটা মেনে নেয়া যায়না। আমরা সিসিকের পক্ষ থেকে ইতেপূর্বে অভিযান পরিচালনা করে এসব মাছ সবজি জব্দ করেছিলাম। মেয়র মহোদয়ের সাথে আলাপ করে মদিনা মার্কেটের ফুটপাত দখল মুক্ত করতে আবারও অভিযান পরিচালনা করবো।

এ বিভাগের অন্যান্য