শাবি ভিসিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা, নিন্দা-প্রতিবাদ

নিউজ ডেস্ক: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি), কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, হিসাব পরিচালক ও প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল হাই এবং পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সিলেটের সিনিয়র সহকারী জজ (সদর) আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী এ এইচ ইরশাদুল হক মামলার বিষয়ে বলেন, গত ৭ ফেব্রুয়ারি শাবিপ্রবি’র শিক্ষকদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এর মাঝে স্বাস্থ্য বীমা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। কিন্তু এ স্বাস্থ্য বীমার ব্যাপারে বাদী পক্ষের আপত্তি সত্ত্বেও তাদের বেতন থেকে ২৭১ টাকা কেটে নেওয়ায় তারা এ মামলা দায়ের করেন। তারা এই বীমায় যেতে আগ্রহী নন কিন্তু জোর করে তাদের চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে গত ১২ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং যথাক্রমে-১৬৫/১৯ এবং ১৬৬/১৯। উভয় মামলায় ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, হিসাব পরিচালক ও প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মামলার বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তারা যেহেতু কোর্টে মামলা দায়ের করেছে, তাই এবিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করবো না। বিষয়টি আমরা আইনিভাবেই মোকাবেলা করবো।’

এদিকে মামলা দায়ের করায় পৃথকভাবে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দপ্তর প্রধান ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ কর্মকর্তা পরিষদ।

বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্বাস্থ্যবীমার দাবি জানিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আমরা বীমা কোম্পানির মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা নিয়েছি এবং সামনেও সেবা গ্রহণ করতে উচ্ছুক। তারা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্বার্থান্বেষী মহল ভাইস-চান্সেলর মহোদয় কর্তৃক স্বাস্থ্যবীমা সংক্রান্ত এই মহতি উদ্যোগকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করছে। আমরা তার নিন্দা জানাচ্ছি। স্বাস্থ্যবীমা নিয়ে স্বার্থান্বেষী মহলের এরূপ ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানান তারা।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের এই স্বাস্থ্যবীমার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সারা দেশে ১০০টির বেশি সরকারী ও বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যবীমার আওতায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তারা স্বাস্থ্যসেবা উপভোগ করবেন। চুক্তি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় এই বীমা কোম্পানিকে জন প্রতি ৬৫০০ টাকা প্রদান করবে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় অর্ধেক টাকা প্রদান করবে এবং শিক্ষক বা কর্মকর্তাকে অর্ধেক টাকা প্রদান করতে হবে। আর এই অর্ধেক টাকা হিসেবে প্রতি মাসে তাদের বেতন থেকে ২৭১ টাকা কর্তন করা হবে। চুক্তির সময় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন- ‘সকলের জন্য নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আজকের এই চুক্তি। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং কর্মচারীদের বীমা সেবার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।’

এদিকে ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে ভর্তির পরপরই স্বাস্থ্যবীমার আওতায় নিয়ে আসা হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য