সুনামগঞ্জে বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী

নিউজ ডেস্ক:   ঋতু পরিবর্তনের প্রভাবে ও হঠাৎ করে ঠাণ্ডা ও গরমে সুনামগঞ্জে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১২ দিনে সদর হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৫৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩০০ জনই শিশু। আক্রান্তদের বেশির ভাগাই গ্রাম এলাকা থেকে এসেছেন।

শরতের শুরুতে দিন ও রাতের তাপমাত্রায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তিত অবহওয়ার সঙ্গে শিশুরা খাপ খাইয়ে নিতে না পারায় প্রথমে পাতলা পায়খানা ও পরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন চিকিৎসকরা। এছাড়াও মায়েদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব, অসচেতনতা ও অজ্ঞতার কারণে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। হাওরের পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার কারণেও ডায়রিয়া হচ্ছে বলে জানান হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়র্ডের শয্যা সংখ্যা ২৬টি হলেও শয্যার দ্বিগুণ সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শয্যা সঙ্কটের কারণে রোগীরা মেঝেতে শুয়েই চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে প্রতিটি ওয়ার্ডের বাথরুম ময়লায় পরিপূর্ণ ও ব্যবহারের অনুপোযোগী বলে রোগীদের অভিযোগ।

সদর উপজেলার লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের হামিদা খাতুন বলেন, ‘তার তিন মাসের ছেলে আবিদ হঠাৎ করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। গত তিন দিন ধরে তিনি হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ছেলেকে নিয়ে আছেন। ভর্তি হওয়ার দুইদিন পর সিট পেয়েছেন।’

মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামের নজির মিয়া বলেন,‘ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা কম থাকায় নার্সরা মেজেতে বিছানা করে দেন।’

দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের যোগিরগাও গ্রামের আলী হোসেন বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে কিছু ওষুধপত্র দিলেও বাকী ওষুধ বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনে আনতে হয়।’

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের চালবন গ্রামের মুক্তি মিয়া বলেন, ‘সকালে একবার আইয়া ডাক্তাররা রোগী দেইখা যায়, সারা দিনেও আর ডাক্তারের দেখা পাওয়া যায় না।’

রঙ্গারচর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের জমিলা খাতুন বলেন,‘তার নাতি মুনতাহাকে গতকাল বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। আজ সকালে ডাক্তার এসে রোগী দেখেছেন।’

সিনিয়র স্টাফ নার্স অপর্ণা রানী দাস জানান, তারা রোগীদের সাধ্য মতো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু রোগী অনুপাতে শয্যা কম হওয়ায় তাদের অনেক সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়।

হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন ডা. বিষ্ণু প্রসাদ চন্দ বলেন, ‘বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে গরম বেড়ে গেছে তাই ডায়রিয়া আক্রান্তের পরিমাণও বেড়েছে। তবে মায়েরা সচেতন থাকলে ডায়রিয়ার প্রকোপ কমবে।’

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালে ওষুধের কোনও সংকট নেই তবে ডাক্তারের সংকট রয়েছে। আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে প্রতিদিন বর্হিঃবিভাগে ৭০০ ও আন্তঃবিভাগে ৪০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ বিভাগের অন্যান্য