সিলেটে অপরাধী ধরবে ‘গোয়েন্দা ক্যামেরা’!

নিউজ ডেস্ক: ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) ক্যামেরার আওতায় আসছে সিলেট নগরী। অত্যাধুনিক এই ক্যামেরা শুধু চিত্রধারণই নয়, সনাক্ত করবে অপরাধীদের। ক্যামেরার গোয়েন্দা চোখ ফাঁকি দিয়ে পালাতে পারবে না কোন দাগি অপরাধী। চোরাই গাড়ি, মোটর সাইকেল উদ্ধার ও নগরীর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই ক্যামেরা। আগামী মাসেই প্রকল্পটি বুঝিয়ে দেওয়া হবে পুলিশকে।

সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) সূত্র জানায়, চুরি, ছিনতাই, রাহাজানিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডের লাগাম টানতে এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ১১০টি স্থানে আইপি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। ‘ডিজিটাল সিলেট সিটি’ প্রকল্পের আওতায় অত্যাধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ এসব ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। এসব ক্যামেরার মধ্যে ১০টিতে আছে ‘ফেইস রিকগনিশন’ ফিচার। এই ফিচারের মাধ্যমে পুলিশের তালিকাভুক্ত যেকোনো অপরাধীর গতিবিধি সহজেই সনাক্ত করা সম্ভব হবে।

এই ফেইস রিকগনিশন ক্যামেরার আওতায় আসা ব্যক্তিদের ছবি নিজস্ব সার্ভারের সাথে মিলিয়ে দেখবে আইপি ক্যামেরা। ক্যামেরায় ধরা পড়া কারো ছবি যদি সার্ভারে থাকা অপরাধীর ছবির সাথে মিলে যায়, তবে তাৎক্ষণিক সিগন্যাল বেজে ওঠবে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। এর ফলে ওই অপরাধী কোন এলাকায় আছে, তা সহজেই জেনে তাকে পাকড়াও করা সহজ হবে পুলিশের জন্য। শুধু অপরাধী সনাক্তই নয়, অত্যাধুনিক এসব ক্যামেরায় থাকা ‘অটো নাম্বার প্লেট রিকগনিশন’ ফিচার ব্যবহার করে যেকোনো যানবাহনের গতিবিধিও পর্যবেক্ষণ করতে পারবে পুলিশ। এক্ষেত্রে অপরাধে সংশ্লিষ্ট কোনো যানবাহনের নাম্বার দিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে নগরীতে সেটির অবস্থান সনাক্ত করতে পারবে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, সিলেট নগরীর প্রবেশপথসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ফেইস রিকগনিশন ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয়েছে বাকি ক্যামেরাগুলো। নগরীর ক্বিনব্রিজ, সুরমা পয়েন্ট, কোর্ট পয়েন্ট, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, সুবিদবাজার, টিলাগড় প্রভৃতি স্থানে বসানো এসব ক্যামেরা বর্তমানে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ তদারকি করছে। চীনের হুওয়ায়ে এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যামেরা ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ সরবরাহ করেছে। এসব ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য সিলেট নগরীর কোতোয়ালী থানার দ্বিতীয় তলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বসানো হয়েছে। এ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে থাকবেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর মধুসূদন চন্দ বলেন, ‘আইপি ক্যামেরা বসানোর মধ্য দিয়ে সিলেট ডিজিটাল সিটি হওয়ার পথে পা রাখলো। নগরীতে ১১০টি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এগুলো গতানুগতিক ক্যামেরা নয়, ছবি সংরক্ষণের পাশাপাশি আরও কিছু কাজ করবে এগুলো।’

তিনি আরো বলেন, ‘বসানো ক্যামেরার মধ্যে ১০টি ফেইস রিকগনিশন করতে পারে। ডাটাইবেইসে ওয়ান্টেড ব্যক্তির ছবি দেওয়া থাকবে। ওই ব্যক্তি ক্যামেরার আওতায় আসলেই নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সিগন্যাল দেবে। আগামী মাসেই পুরো বিষয়টি পুলিশকে বুঝিয়ে দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে।’

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা বলেন, ‘অপরাধ নির্মুলের পাশাপাশি যানজট নিয়ন্ত্রণেও এসব ক্যামেরা সাহায্য করবে। কারো গাড়ি যদি চুরি হয়, সাথে সাথে পুলিশকে জানালে আইপি ক্যামেরার ডাটাবেইসে গাড়ির নাম্বার দেওয়া হবে। ওই গাড়ি ক্যামেরার আওতায় আসলেই সিগন্যাল দেবে। এতে চোরাই গাড়ি উদ্ধার করা সহজ হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আইপি ক্যামেরাগুলো হাই জেুলেশনের, নাইটভিশনযুক্ত। এগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে কাজ করে।’

এ বিভাগের অন্যান্য