ঈদে তাহিরপুর সীমান্তে তৎপর চোরাচালানীরা

নিউজ ডেস্ক: বিজিবির সুনামগঞ্জ সিও’র কঠোর নজরদারী ও তৎপরতা থাকায় দীর্ঘদিন ধরে চোরাচালানীদের শক্তিশালী গ্রুপ কোনঠাসা। তবে কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে আবারও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে চিহ্নিত চোরাচালানীদের শক্তিশালী গ্রুপ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট ও পাহাড়ি ছড়া দিয়ে কয়লা, চুনাপাথর, মদ, গাঁজা, ইয়াবা ট্যাবলেট, গরু, ঘোড়াসহ বিভিন্ন মালামাল পাচারে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। তাই দেশ, যুবসমাজ ও সরকারের রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে বিজিবির আরো দুরদর্শী, বিচক্ষণ ও কঠোর নজরধারীর প্রয়োজন বলে মনে করেন ব্যবসায়ী ও জেলাবাসী।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সীমান্তের লাউড়েরগড় থেকে বাগলী পর্যন্ত সীমান্তের চিহ্নিত চাঁদাবাজ, বিজিবি, পুলিশ, সাংবাদিক, স্থানীয় ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের সোর্স পরিচয়ধারী চোরাচালানী ও বিজিবির দায়েরকৃত মামলার আসামিদের রয়েছে একটি শক্তিশালী গ্রুপ। চোরাচালানীরা তাদের সহযোগিতা নিয়ে পুলিশ, বিজিবি, সাংবাদিকদের নামে চাঁদা তুলে সীমান্তের গরিব-অসহায় দিনমজুর লোকদের দিয়ে রাতের আঁধারে মোটা অংকের টাকা দিয়ে কয়লা, চুনাপাথর, মদ, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা ট্যাবলেট, গরু, ঘোড়াসহ বিভিন্ন অবৈধ মালামাল ভারত থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নিয়ে আসছে। পরে সেগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। বিজিবি’র টহল দল কিছু মালামাল আটক করলেও এর সাথে জড়িত চোরাচালানীরা আটক না হয়ে থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। অনেক সময় বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ ও র‌্যাব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মদ, ইয়াবা, গাঁজাসহ ব্যবসায়ীদের আটক করছে। ফলে দীর্ঘ ২ যুগ ধরে চোরাচালানীরা সীমান্তে রাম রাজত্ব কায়েম করে কোটিপতি হয়েছে।

সীমান্তে বসবাসকারী স্থানীয় জিয়া, নয়নসহ এলাকাবাসীর কাছ থেকে আরো জানা যায়, চোরাচালানীরা কিছু সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তিদের দৈনিক ও মাসিক চাঁদা দেয়। ফলে তারা সীমান্তের অবৈধ কাজের সংবাদ প্রকাশ না করে বিজিবিকে ম্যানেজ করে তাদের সাথে থেকে রাতারাতি আলাদিনের চেরাগ পাওয়ার মতো গাড়ি, বাড়ি, দোকান করেছে, ছেলে-মেয়েদের সিলেটে নামীদামী স্কুলে লেখাপড়া করাচ্ছে। তারাই আবার ভালো সেজে বিজিবির সিওসহ প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাদের সাথে ছবি তুলে দানশীল সেজেছে। তাদের আয়ের উৎস কী? কোথা থেকে আসে তাদের এত টাকা? তাদের খুঁটির জোর কোথায়? একটু যাচাই করলেই ফাঁস হবে এসব প্রশ্নের উত্তর।

সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই বলেন, আমাদের চোখের সামনে সব হচ্ছে। যে এক/দুইজন সাংবাদিক চোরাচালানীর নাম উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশ করে ও চোরাচালান করার সময় বিজিবিকে খবর দেয়, তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক নামধারী চাঁদাবাজ, চোরাচালানী, ক্ষমতাশীল লোকজন এবং বিভিন্ন মামলার আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশ ও বিজিবিসহ অন্যান্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে নানাভাবে মনগড়া কল্পকাহিনী বলে।

কঠোর নজরদারী করার কারণে সুনামগঞ্জ বিজিবি’র সিওকে ধন্যবাদ জানিয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষন করে স্থানীয় ব্যবসায়ী শফিকুল, নজরুলসহ বড়ছড়া, ছারাগাঁও ও বাগলী শুল্ক স্টেশনের ব্যবসায়ীরা জানান, চোরাচালানীদের কাছ থেকে মাসোহারা নিচ্ছে এমন সাংবাদিক নামধারীদের নাম বিভিন্ন সময় পত্রিকায় আসে এবং মামলাও আছে। চোরাচালান বন্ধে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (২৮ বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মো. মাকসুদুল আলম বলেন, ‘সীমান্তে আমাদের কঠোর নজরদারী রয়েছে। কোনো অন্যায়কারীকে ছাড় দেওয়া হবে না। কঠোরভাবে তাদের দমন করা হবে।’

এ বিভাগের অন্যান্য