প্রচারণার শেষ পর্যায়ে সংঘাতের আশংকা
স্টাফ রিপোর্টার
খুব জটিল পরিবেশ পরিস্থিতি ছাড়াই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও জেলার কোথাও কোন অঘটন ঘটেনি।
কিন্তু পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণার শেষ পর্যায়ে নাশকতা বা সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে আশংকা দেখা দিয়েছে। একাধিক প্রার্থীও আশংকা করছেন প্রচারণায় নাশকতা করতে পারে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে ঘায়েল করতে নানা ধরনের অপচেষ্টা হতে পারে।
পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ বলেন,‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে করার জন্য সবধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমরা চাই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হোক। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যখনই কোন এলাকায় ঝামেলার খবর পাওয়া যাবে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ’
ইতোমধ্যে বিশ্বম্ভপুরে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীদের উপর হামলার খবর পাওয়া গেছে।
জামালগঞ্জের হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা নিয়ে নির্বাচন বিষয়ে রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিশেষ আইনশৃংখলা সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শামীম আল ইমরান বলেছেন,‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচন জামালগঞ্জে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ওখানে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্য সময়ের চেয়ে বেশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন প্রয়োজন। ৩ চেয়ারম্যানসহ ভাইস চেয়ারম্যান পদ মিলিয়ে ২০ জন প্রার্থী এই উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।’
সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ এই বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব দেবার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মাথায় বিশ্বম্ভরপুরের ফতেপুর ইউনিয়নের সাতগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী সভা শেষে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা করে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা সফর উদ্দিনের কর্মী সমর্থকরা। হামলায় তিনজন আহত হয়। তাদেরকে রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমদ মানিক বলেন,‘ স্বতন্ত্র প্রার্থী সফর উদ্দিনের কর্মী-সমর্থকরা ইচ্ছে করেই রবিবার সন্ধ্যায় আমাদের কর্মীদের উপর হামলা করেছে। আমরা আশংকা করি নৌকার বিজয় ঠেকাতে তারা আবার যে কোন ঘটনা ঘটাতে পারে। নৌকার কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের মাঝে ভয়-ভীতি সৃষ্টির করার লক্ষে তারা যে কোন পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সফর উদ্দিন পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন,‘আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা আমার কর্মী সমর্থকদের উপর আক্রমণ করেছে। ’
এদিকে সোমবার বিকালে শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজেদের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা ও পোস্টার ছেড়ার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাড. অবনী মোহন দাস ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন চৌধুরী
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাড. অবনী মোহন দাস সন্ধ্যায় অভিযোগ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আল আমিন চৌধুরীর প্রায় দেড়শ থেকে দুইশত কর্মী মিছিল করে যাওয়ার সময় সেননগর ও দুর্লভপুরে তার কর্মী সমর্থকদের বাড়িঘরে ভাংচুর করেছে। আনারস প্রতীকের সকল পোস্টার-ব্যানার ছিড়ে ফেলেছে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসিকে অবগত করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। আনারস প্রতীকের কর্মী সমর্থকদের প্রতিনিয়তই হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে।
তবে পাল্টা অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আল আমিন চৌধুরী বলেন,‘ আমার কর্মী-সমর্থকরা জনসভায় আসার পথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা সেননগরে হামলা চালিয়েছে। ৫ জন আহত হয়েছে, তারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে। নৌকার সকল পোস্টার ছিড়ে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। আমরা এসবের ছবি তোলে রেখেছি। স্বতন্ত্র প্রার্থী বিভিন্ন এলাকায় আমার বিরুদ্ধে উত্তেজনাকর বক্তব্য দিচ্ছে, এসব প্রমাণও ভিডিও করে রাখা হচ্ছে। ’