সিলেট-তামাবিল সড়কের গর্তে আটকে থাকে পন্যবাহী ট্রাক
সিলেট-তামাবিল-জাফলং মহাসড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গেচুরে বেহাল হওয়ায় তামাবিল স্থল বন্দর দিয়ে আমদানী রপ্তানী ব্যাহত হচ্ছে। পর্যটক, ব্যবসায়ীরা ছাড়াও গোয়াইঘাট, কানাইঘাট ও জৈন্তা সহ তিন উপজেলাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। গত কয়েক বছর থেকেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের এই সড়কটির বেহাল অবস্থা। সময় মত যথাযথ সংস্কার না হওয়ায় চলতি বর্ষা মৌসুমে সড়কটি আরো ভেঙ্গে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন স্থানে স্থানে গর্তে আটকে থাকছে পন্যবাহী ভারী ট্রাক সহ বিভিন্ন ধরণের যানবাহন। তামাবিল স্থল বন্দরটি বছরে শত কোটি টাকার বেশী রাজস্ব আয় করে। কয়লা, পাথর চুনাপাথর, ফলমূল, মশলা সহ বিভিন্ন পণ্য আমদানী ও বিপুল পরিমাণ কনজ্যুমার আইটেম ও খাদ্যদ্রব্য ভারতে রপ্তানী হয়। এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে তামাবিল সড়কটিকে চারলেনে উন্নীত করা হবে শিঘ্রই। প্রধানমন্ত্রী গৃহীত এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শুধু দেশের গন্ডি নয়, ভারত এবং সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন এবং সিলেটের পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করবে। ইমরান আহমদ গত ৩০ আগস্ট সিলেট সার্কিট হাউজে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাথেও এ বিষয়ে কথা বলেন।
সিলেটস্থ সওজের নির্বাহী কর্মকর্তা উত্পল সামন্ত ইত্তেফাককে বলেন, শুক্রবাড়ীবাজার-হরিপুর-জৈন্তা-তামাবিল-বল্লাঘাট ১৭ কি.মিটার সড়কের উন্নয়ন কাজের জন্য ১৩৮ কোটি টাকা বরাদ্ধ হয়েছে। সূত্র মতে গত মাসের শেষ দিকে ঢাকায় সংশ্লিষ্ট পার্চেজ বিভাগ প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছে। সওজ কর্মকর্তা আরো বলেন, টু-লাইন বিশিষ্ট এই সড়কটি ফোর-লেনে উন্নীত করলেও যাতে কোন অপচয় না হয় তা লক্ষ্য রেখেই কাজ হবে। কর্মকর্তারা জানান, এই প্রকল্পে ‘এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেষ্টমেন্ট ব্যাংক’ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। চার লেনে উন্নীত করণে প্রকল্পের ডিপিপি তৈরীর কাজও শেষ।
পাথর কোয়ারি, পান-সুপারীর পুঞ্জি, প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক ৯ টি পর্যটন স্পট অবলোকন তামাবিল সড়কের উপর নির্ভরশীল। সড়ক পথে তামাবিল স্থলবন্দর হয়ে মেঘালয় রাজ্যের শিলং, গোহাটি এবং ভূটান যেতে হয়। ‘দেশের চাহিদার শতকরা প্রায় ৭৫ ভাগ কয়লা ও চুনাপাথর, বোল্ডার আমদানি ও অনেক পণ্য রপ্তানী হয় তামাবিল স্থল বন্দর দিয়ে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি এখন কোন সড়কই নয় এমন মন্তব্য করে সিলেট চেম্বারের সহ-সভাপতি ও সিলেট কয়লা আমদানী কারক সামিতির সাবেক সভাপতি এমদাদ হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, ‘ মাসে চার সহস্রাধিক পর্যটক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীর ভিড় লেগে থাকে এই বন্দরে। বছরে তামাবিল স্থল বন্দর একশ কোটি টাকার বেশী রাজস্ব আয় করে। এই অবস্থায় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।’
সিলেট-তামাবিল-জাফলং ৫৩ কিমি সড়ক সরেজমিনে দেখা যায়, স্থানে স্থানে ভাঙ্গা, বিরাট বিরাট গর্ত । সেখানে আটকে থাকে যানবাহন। শুক্রবাড়ীবাজার, হরিপুর বিশেষ করে জৈন্তাপুর-তামাবিল ১৩ কিমি সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। জৈন্তা, গোয়াইঘাট, কানাইঘাটের কয়েক লাখ বাসিন্দা,পর্যটক এ নিয়ে প্রচন্ত বিরক্ত। ব্যবসায়ীরা বলেন, তামাবিল রপ্তানি বন্দরের কাছের দেড় কিলোমিটার সড়কে না চলা যায় যানবাহনে না চলা যায় হেটে। ফলে পণ্য পরিবহন খাতে খরচও বেড়েছে কয়েকগুণ।