সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৪ আসনে প্রবীনদের চেয়ে প্রচারনায় এগিয়ে নবীনরা।
আগামী ২০১৮ সালের শেষ দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে জোর তৎপরতায় মেতে উঠেছেন সিলেট-৪ (জৈন্তা গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনে নির্বাচনে সাংসদ পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সিলেট-৪ আসনের সর্বত্র যেন একটা নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। চায়ের টেবিল থেকে শুরু করে বিয়ের অনুুষ্ঠানে-সব খানেই নির্বাচনী আলোচনা। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নানা রকম পোষ্ট দিচ্ছেন অনেকেই। কেউ কেউ তো এখন থেকেই নেমে গেছেন প্রচারণায়। নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরতে তাদের প্রানান্তকর চেষ্টা ভোটারদের মাঝে প্রানচাঞ্চল্য ফিরিয়ে দিয়েছে। জানা যায়, সিলেট-৪ আসনে নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদের প্রার্থীরা ভোটের আগে দলীয় মনোনয়ন পেতে নামতে হচ্ছে আরেক ভোটে। কারণ সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার আগে দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে নিতেই খুব বেশী চেষ্টা করছেন সম্ভাব্য সাংসদ প্রার্থীরা।
বিশেষ করে বড় দুই দল মহাজোট ও ২০ দলীয় জোটে সাংসদ পদ নিয়ে শুরু হয়েছে স্নায়ুযুদ্ধ। বড় দুই দলেরই শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী হওয়ায় ইতিমধ্যে তাদের মধ্যে শুরু হয়েছে অন্যরকম লড়াই। প্রত্যেকেই নিজেকে দলের মনোয়নপ্রাপ্তির জন্য নিজের যোগ্যতা প্রকাশ করতে নিয়েছেন বিভিন্ন পন্থা। কেন্দ্রীয় লবিং-এর পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন সব প্রার্থীই। তবে পিছিয়ে নেই ছোট দলগুলোও। তারাও তাদের পক্ষে চালাচ্ছেন সরব প্রচারণা। ২০ দলীয় জোটের শরীক দলের প্রার্থীরা ও সাংসদ পদে নির্বাচন করতে সরব প্রচারণায় মেতে উঠেছে। অন্যদিকে ২০ দলিয় জোটের অন্যতম শরীক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম এবং জাতিয় পার্টি সাংসদ পদে প্রার্থী দিচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেতে ২ জন প্রার্থীই চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদসদস্য ইমরান আহমেদ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক আহমদ। বিএনপি থেকে সাবেক সাংসদ বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হুসেন সেলিম ছাড়াও সিলেট জেলা বিএনপির সহ- সভাপতি গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের টানা দুইবারের চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরি। ২০ দলীয় জোট থেকে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব শায়খুল হাদীস আতাউর রহমান আতাউর এবং জাতীয় পার্টি থেকে এ.টি.ইউ তাজ রহমান মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে
আওয়ামীলীগঃ- সিলেট ৪ আসনে বর্তমান এবং সাবেক ৫ বারের নির্বাচিত এমপি ইমরান আহমেদ, আগামী নির্বাচনে আবার প্রার্থীতার জন্য তৎপর রয়েছেন। তিনি প্রতিদিনই নির্বাচনী এলাকায় দলীয় কর্মকান্ড ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে সব সময় যোগদানের মাধ্যমে নিজের সরব উপস্থিতির জানান দিয়ে যাচ্ছেন। পিছিয়ে নেই ফারুক আহমদও, উনার ভক্তরা সর্বত্র প্রচারণায় মেতে উঠেছেন। জানান দিয়ে যাচ্ছেন তিনিও আওয়ামীলীগ থেকে একজন শক্তিশালী প্রার্থী। গত নির্বাচনে ও ফারুক আহমেদ শতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ইমরান আহমেদের সাথে প্রতিধন্ধিতা করছিলেন।
বিএনপিঃ- বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে সাবেক এমপি দিলদার হুসেন সেলিম, সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি গোয়াইনঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী,
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামঃ-
২০ দলীয় জোটের মনোনয়ন প্রত্যাশী শায়খুল হাদীস আতাউর ররহমান’র নাম জোরেশোরে শুনা যাচ্ছে। তিনিও জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকলেও
২০দলিয় জুটের মনোনয়ন পাবেন কি না তা নিয়ে চিন্তিত হিতাকাঙ্কি মহল। তবে জুট থেকে মনোনয়ন না পেলেও নিজ দল জমিয়তের
প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে আসছেন এমনটাও শুনাযাচ্ছে।
এদিকে মনোনয়ন পেয়ে যাবেন বলে আশাবাদি স্থানীয় নেতা করমীরা। কেননা দিলদার হুসেন সেলিমের বিরুদ্ধে তার নিজ দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীই। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে সিলেট ৪ আসনে অবকাঠামোগত উন্নয়নে সেলিমের গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা থাকলেও নিজ দলের নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহনযোগ্য বাড়াতে কিছুটা ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। বর্তমানে তিনি শারিরীক ও মানুষিক ভাবে কিছুটা অসুস্থ। তাই জনপ্রিয়তা থাকা সত্তেও নিজ দলের মনোনয়ন পেতে বেগ পেতে হবে বলে আশংকা করা যাচ্ছে। অপরদিকে আব্দুল হাকিম চৌধুরি ও ইতিমধ্যে গণসংযোগ করে আলোচনায় আসতে চাইলেও ত্রির্ণমুলে কোন সাড়া নেই।
জাতীয় পার্টিঃ-সংসদের বিরোধী দল হোসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে তেমন কারো নাম আলোচনায় না থাকলেও শেষ পর্যন্ত জাতীয়পার্টি থেকে প্রার্থী হতে পারেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এ.টি.ইউ তাজ রহমান কিংবা অন্য কেউ।