স্বৈরাচারের দোসরদের ষড়যন্ত্রে সতর্ক থাকুন
সিলেটের সময় ডেস্ক :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের দোসরদের নানামুখী যড়যন্ত্র থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, চক্রান্ত হলে দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে। আগামীতে বিএনপি দেশে উৎপাদন ও উন্নয়নের রাজনীতি চালু করতে চায়। গতকাল বিকালে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জনগণের প্রতি এই আহ্বান জানান তিনি। বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, একমাত্র রাজনৈতিক সরকারের পক্ষেই জনগণের সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। সেজন্য প্রয়োজন জনগণের সমর্থন। দেশের জনগণের সমর্থনে আমরা সে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেলে সেদিনও আপনাদের সমস্যার কথা আমাদের মনে থাকবে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গোপালপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম রুবেল। বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বেনজীর আহমেদ টিটো, হাসানুজ্জামান শাহীন, ফরহাদ হোসেন ইকবালসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা। প্রায় ৩৫ মিনিটের বক্তব্যে তারেক রহমান টাঙ্গাইল জেলার বিখ্যাত নানা পণ্যের সম্ভাবনা নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক মুক্তি হলে দেশ এগিয়ে যাবে। প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার দূরে থেকে আপনাদের সঙ্গে কথা বললেও সব সময়ই আমার মন পড়ে আছে আপনাদের মাঝেই। দেশে থাকতে আপনাদের ভূয়াপুর, গোপালপুরের ওপর দিয়ে আমাকে প্রায়ই যেতে হতো দেশের উত্তরাঞ্চলে। সুতরাং আপনারা আমার মনের একটা বিরাট জায়গা দখল করে আছেন। তারেক রহমান বলেন, আমি জানি টাঙ্গাইলের শাড়ি আর চমচমের কথা। যদিও টাঙ্গাইলের শাড়ির সঙ্গে আপনাদের পাশের উপজেলা দেলদুয়ারের নাম সবাই বলে। কিন্তু আমি জানি, এই গোপালপুরেও টাঙ্গাইলের বিখ্যাত শাড়ি তৈরি হয়। এখানকার মা-বোনেরা সুতা রং করেন, সেগুলো শুকান আর মাকুতে ভরেন এবং ভাইয়ারা সেটা তাঁতে লাগিয়ে অসাধারণ সুন্দর শাড়ি তৈরি করেন। তিনি বলেন, আপনারা তাঁতের কারখানা আরও বাড়ান, দেলদুয়ারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে। প্রতিযোগিতা হলে সবারই মান উন্নত হবে। আমি জানি সুতার দাম, রঙের দামের সঙ্গে আপনারা কুলিয়ে উঠতে পারেন না। আবার ঠিকমতো বাজারজাতও করতে পারেন না। আল্লাহ যদি কখনো আপনাদের সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দেন, তাহলে ভবিষ্যতেও এ কথা ভুলব না।
তারেক রহমান বলেন, এই এলাকার আরেকটি উল্লেখযোগ্য পণ্য হলো চমচম। পৃথিবীর মানুষ জানে চমচম মানেই টাঙ্গাইল আর পোড়াবাড়ি। এখানকার দুধ আর পানি দিয়ে যে চমচম তৈরি হয়, সেটা পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যাবে না। কিন্তু এখানেও সমস্যা, নদীতে পানি নেই, দুধের দাম চড়া, আমার গরিব ভাইবোনদের জন্য দাম সহনীয় নয়। আমরা যদি সুযোগ পাই দেশে গবাদিপশুর সংখ্যা যেমন বাড়াব, তেমনি বন্ধ খাল আর নদী আবারও খনন করব। এই চমচম বাংলাদেশের গি পেরিয়ে টিনজাত হয়ে পৃথিবীর সব কোনায় পৌঁছে যাবে। এ ছাড়া তিনি পাট ও পাটজাত দ্রব্যের উৎপাদন, ফলনশীল বীজ আবিষ্কার, এসব পণ্য ব্যবহার ও বাজারজাতকরণের বর্তমান দুরবস্থা ও ভবিষ্যতের করণীয় সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেন। পাশাপাশি মধুপুরের আনারস উৎপাদন বৃদ্ধিসহ আনারসের জুস, জ্যাম, জেলি ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য উৎপাদন এবং বিশ্বব্যাপী তার বাজারজাতকরণের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন।
তারেক রহমান আরও বলেন, ভূমিহীন মানুষের সংখ্যাও এখানে অনেক বেশি। এসব দিকে নজর দিতে হবে। সবার আরেকটি বড় সমস্যা হলো যমুনা নদীর ভাঙন, বিশেষ করে ভূয়াপুর উপজেলায়। এ ব্যাপারে অনেক বাস্তবমুখী আর স্থায়ী পরিকল্পনার কথা ভাবতে হবে।