জাবির হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বহিরাগত এক দম্পতিকে ডেকে এনে হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলসংলগ্ন জঙ্গলে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও বহিরাগত যুবক মামুন (৪৫)। তাঁদের মধ্যে মোস্তাফিজ মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক।
এদিকে রবিবার সকাল সাড়ে ৭টায় শাখা ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান সাভার মডেল থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন। এ ঘটনায় অপর অভিযুক্ত বহিরাগত যুবক মামুন পলাতক রয়েছেন।
এ ছাড়া এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্তদের পালাতে সহযোগিতাকারী তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের হাসানুজ্জামান, ৪৬ ব্যাচের সাগর সিদ্দিকী এবং বোটানি বিভাগের ৪৭ ব্যাচের সাব্বির হোসেন।
জানা যায়, ওই দম্পতির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন অভিযুক্ত মামুন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসেন তিনি।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, ‘মামুন ভাই আমাদের বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনি আমার স্বামীর মাধ্যমে ফোন দিয়ে আমাকে তাঁর রেখে যাওয়া জিনিসপত্র নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বলেন। আমি তাঁর জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে যাই। তখন তিনি আমাদের বাসায় থাকবেন না বলে জানান। এ ছাড়া তিনি মীর মশাররফ হোসেন হলের মোস্তাফিজ ভাইয়ের কাছে থাকবেন বলেও জানান। এরপর মামুন ভাই আমার কাছ থেকে তাঁর জিনিসপত্র নিয়ে হলে রেখে আসেন। পরে আমার স্বামী অন্যদিক থেকে আসবে বলে আমাকে হলের সামনে থেকে পাশের জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে যায়। তাঁর সঙ্গে মোস্তাফিজ ভাইও ছিল। তখন তাঁরা আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, আমরা শাস্তির ব্যবস্থা করব।’
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত আব্দুর রাসিক বলেন, ‘ভুক্তভোগী থানায় উপস্থিত হয়ে ঘটনা জানিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে ঘটনা জানাজানি হলে রাত ২টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হয়েছিলেন। ‘নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’, ‘ধর্ষকমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।