আমরাও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাই, কিন্তু…

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘নির্বাচন চলছে, আমরাও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাই। ভোট দিতে চাই। তাহলে কেন নিজেদের জীবন বিপন্ন করে নির্বাচন বিরোধী আন্দোলন করছি। কারণ, সরকার আগামী ৭ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন করে ফেললে দেশের উপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসবে। বাংলাদেশ বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কাজেই দেশের অস্তিত্ব ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ রক্ষায় আমাদেরকে এই আন্দোলন করতে হচ্ছে।’

আজ বুধবার বেলা পৌনে ১২টায় শান্তিনগর মোড়ে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে পথসভা শেষে শান্তিনগর মোড়, মালিবাগ ও মৌচাক এলাকায় লিফলেট বিতরণ করে গণঅধিকার পরিষদ।

এ সময় নুর বলেন, ‘আপনারা দেখছেন পুলিশ আমাদের এখানে দাঁড়াতে দিচ্ছে না। বার বার শেষ করতে বলছে, মাইক ব্যবহার করতে নিষেধ করতেছে। একটা রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি কতক্ষণ চলবে, কী বক্তব্য হবে তাও পুলিশ ঠিক করে দিবে? মনে হচ্ছে দেশে পুলিশি শাসন চলছে। আমরা দোয়া করি, শেখ হাসিনা ডামি প্রধানমন্ত্রী আর পুলিশ প্রধান ফুল মন্ত্রী হোক। বাংলাদেশের নির্বাচনে এমপি হওয়ার মনোনয়ন বিক্রি হয় ভারতে। এমনকি এই নির্বাচনে প্রার্থী নিজেই বলে আমি ভারতের প্রার্থী। নির্বাচন কী হবে, ভোটের হার সবই ঠিক হয়ে গেছে। শুধু রাষ্ট্রের কয়েকহাজার কোটি টাকার প্রার্থী, ডিসি-এসপিসহ বিভিন্ন জনকে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে দিতেই ৭ জানুয়ারি ভোটের নাটক। এভাবে কতিপয় ডিসি, এসপি, কতিপয় নেতা শত কোটি, হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। আর সাধারণ মানুষ বাজারে গিয়ে সবজি কিনলে মাংস কিনতে পারে না, একটা সবজি কিনলে তেল কিনতে পারে না। আর তারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এই লুটপাটের ধারা অব্যাহত রাখতেই আগামী ৭ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন।’

তিনি বলেন, আমরা জনগণকে এই ভারতীয় মদদের একতরফা নির্বাচন বর্জনের কথা বলছি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যেমে এই সরকারের পতন ঘটানো হবে।

এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ‘আমরা জনগণের কাছে যাচ্ছি। জনগণ আমাদেরকে বলছে, যে খেলায় রেফারি নাই, প্রতিদ্বন্দ্বী টিম নাই, সে খেলায় তারা অংশগ্রহণ করবে না। তাহলে ওবায়দুল কাদের সাহেব কি খেলা খেলবে? ডামি খেলা, স্বতন্ত্র খেলা? ফাঁকা মাঠে গোল দিবে?’

তিনি বলেন, ‘হায়রে নির্বাচন! আমি প্রধানমন্ত্রীকে একটি প্রশ্ন করতে চাই, ডামি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়েছেন, আওয়ামী লীগ জিতলে ডামি প্রধানমন্ত্রী কে হবে? রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করে দেশের রাজনীতি ধ্বংস করছে ভারত। ভারত চায় না বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকুক। তাই আগামীতে যাতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয় এবং ভারত বলতে পারে তোমরা তো দেশ চালাতে পারছো না, আসো তোমাদের অঙ্গ রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করি। তাই একতরফা নির্বাচনকে বৈধতা দিয়ে যাচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি।’

রাশেদ বলেন, ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর দ্যা ইকোনোমিস্ট লিখেছিল, পাকিস্তান হবে দুর্বল ও ক্ষয়িষ্ণু রাষ্ট্র আর বাংলাদেশ হবে ভারতের মক্কেল। আজকে তাই প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের সবকিছু ভারতের নিয়ন্ত্রণে। আওয়ামী লীগের ৮৭ শতাংশ প্রার্থী কোটিপতি। জনগণের ভ্যাট ট্যাক্সের ৯২ হাজার কোটি টাকা তারা লোপাট করেছে। এবারও সেই লোপাটের জন্যই ভূয়া নির্বাচন করতে যাচ্ছে। আমরা জনগণকে বলবো, ৭ জানুয়ারি ভুয়া নির্বাচন বর্জন করুন।’

গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, রবিউল হাসান, যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, সহ সভাপতি নাহিদ উদ্দিন তারেক, শ্রমিক নেতা মাহবুবুল হক শিপন প্রমুখ।

এ বিভাগের অন্যান্য