ফ্রি ওয়াইফাই জোন হচ্ছে সিলেট নগরীর ৬২ এলাকা
নিউজ ডেস্ক: বিনামূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা দিতে ফ্রি ওয়াইফাই জোন হচ্ছে সিলেট শহরের গুরুত্বপূর্ণ ৬২ এলাকায়। ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের আওতায় এই সুবিধা মিলবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের কার্যাদেশ হয়ে গেছে, চলতি জুলাই মাসেই কাজ শুরু হবে। এরপর আগামী নভেম্বর থেকে নগরবাসী এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে সিলেট ঘুরতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকরাও বিনামূল্যের এ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
প্রাথমিক অবস্থায় পরীক্ষামূলকভাবে ৬২টি ওয়াফাই জোন করা হচ্ছে জানিয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, বিনামূল্যে ওয়াইফাই জোন দেখভালের জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ এবং সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। তিন মাস পর পর এই কমিটি বৈঠক করে প্রকল্পের মূল্যায়ন ও দেখভাল করবে। এই উদ্যোগ সফল হলে পর্যায়ক্রমে পুরো সিটি এলাকা ফ্রি ওয়াইফাইয়ের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে বিনামূল্যে ওয়াইফাই জোন স্থাপন কাজের টেন্ডার আহ্বানের পর কার্যাদেশ হয়ে গেছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।
ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের উপ-পরিচালক মধুসুদন সাহা বলেন, নগরের ৬২টি এলাকা ও কক্সবাজারের ৩৫টি এলাকায় বিনামূল্যে ওয়াইফাই সুবিধা চালুর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি টাকা। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর একবছর এসব ওয়াইফাই জোন দেখভাল করবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। পরবর্তীতে এগুলো তদারকি করবে সিটি কর্পোরেশন।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে নগরের চৌকিদেখিতে ১টি, আম্বরখানা পয়েন্টে ৪টি, দরগা গেটে ২টি, চৌহাট্টায় ৩টি, জিন্দাবাজারে ৪টি, বন্দরবাজার ফুটওভার ব্রিজ এলাকায় ৩টি, হাসান মার্কেট এলাকায় ৫টি, সুরমা ভ্যালি রেস্ট হাউস এলাকায় ২টি, সার্কিট-হাউস জালালাবাদ পার্ক এলাকায় ৩টি, ক্বিন ব্রিজের দুই প্রান্তে ৬টি, রেলওয়ে স্টেশনে ৪টি, বাস টার্মিনালে ৩টি, কদমতলী পয়েন্ট ও সংলগ্ন এলাকায় ৫টি, হুমায়ুন রশীদ চত্বরে ৩টি, আলমপুর পাসপোর্ট অফিস এলাকায় ২টি, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় এলাকায় ৩টি, সিলেট শিক্ষাবোর্ডে ২টি, উপশহর রোজভিউ পয়েন্টে ২টি, শহাজালাল উপশহর ই-ব্লক ও বি-ব্লকে ১টি করে ২টি, টিলাগড় পয়েন্টে ৩টি, এমসি কলেজ এলাকায় ২টি, শাহী ঈদগাহ এলাকায় ৩টি, কুমারপাড়া এলাকায় ৩টি, কুমারপাড়া সড়কে ২টি, দক্ষিণ বালুচরে ১টি, টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ১টি এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে ১টি এক্সেস পয়েন্ট থাকবে।
এছাড়া নগরের নাইওরপুল পয়েন্টে ২টি, মিরাবাজার সড়কে ১টি, রায়নগর এলাকায় ১টি, সোবহানীঘাট পুলিশ স্টেশন এলাকায় ২টি, ধোপাদিঘীরপাড় বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যানে ১টি, বন্দরবাজার জামে মসজিদ এলাকায় ২টি, নয়াসড়ক পয়েন্ট ও সংলগ্ন এলাকায় ৪টি, কাজীটুলা এলাকায় ২টি, চৌহাট্টা সড়কে ৩টি, হাউজিং এস্টেট সড়কে ১টি, সুবিদবাজারে ১টি, মিরের ময়দানে ১টি, পুলিশ লাইন সড়কে ১টি, রিকাবীবাজার জেলা স্টেডিয়ামে ২টি, মদন মোহন কলেজ এলাকায় ১টি, মির্জাজাঙ্গাল সড়ক এলাকায় ২টি, পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট এলাকায় ১টি, খুলিয়াপাড়া এলাকায় ১টি, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি এলাকায় ১টি, তালতলা হোটেল গুলশান এলাকায় ১টি, কাজিরবাজার সেতু এলাকায় ১টি, কাজিরবাজার সড়কে ২টি, খোজারখলা সিলেট ট্যাকনিক্যাল কলেজ এলাকায় ১টি, বাগবাড়ি ওয়াপদা মহল্লা এলাকায় ১টি, পাঠানটুলায় ১টি, মদিনা মার্কেট পয়েন্টে ২টি, শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গেটে ২টি এবং ওসমানী মেডিকেল কলেজ এলাকায় ১টি এক্সেস পয়েন্ট থাকবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এসব এক্সেস পয়েন্টের প্রতিটিতে একসঙ্গে ৫০০ জন যুক্ত থাকতে পারবেন। এরমধ্যে একসঙ্গে ১০০ জন উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। প্রতিটি এক্সেস পয়েন্টের চতুর্দিকে ১০০ মিটার এলাকায় ব্যান্ডউইথ থাকবে ১০ মেগাবাইট/সেকেন্ড।
সংশ্লিস্টরা জানান, বিনামূল্যে ওয়াইফাই সুবিধা ভোগ করতে হলে প্রত্যেককে নিরাপত্তার জন্য মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে যুক্ত হতে হবে। যুক্ত হওয়ার প্রথম ধাপে মোবাইল বা ল্যাপটপে নিজের নাম, মোবাইল নম্বর দিতে হবে। ফিরতি এসএমএসে একটি কোড আসবে। সেই কোড ইনপুট করলেই লগইন সম্পন্ন হবে। ফিল্টারিং করা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। আর ডাউনলোডে থাকবে সীমাবদ্ধতা। ব্যবহারকারীর সব তথ্য জমা থাকবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ডাটাবেসে।