বাংলাদেশ-ভারতের সমস্যা ও সম্ভাবনা একই: শাবিতে শিক্ষামন্ত্রী

‘রাজনৈতিক সীমানার দিক থেকে ভারত ও বাংলাদেশ আলাদা হলেও ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, জ্ঞানচর্চাসহ বিভিন্ন দিক থেকে আমরা আলাদা নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ২৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও উপাচার্যদের অংশগ্রহণে আয়োজিত উপাচার্যদের আন্তজার্তিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিক্ষাক্ষেত্রে এই সম্মেলন এক নতুন দ্বার উন্মোচন করবে। আমাদের সাথে ভারতের হয়তো রাজনৈতিক সীমানা থাকতে পারে কিন্তু আমরা ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, জ্ঞানচর্চাসহ এ সকল দিক থেকে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আর এ ধরনের আয়াজনে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তসম্পর্ক বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন দ্বার উন্মোচন হবে।’

শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের ও ভারতের সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো একই। এজন্য আমাদের পারষ্পারিক সহযোগিতা, সমন্বয় ও সম্পৃক্ততার মাধ্যমে একসাথে কাজ করতে হবে। আমাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় একসাথে এগিয়ে যেতে হবে। দুই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে জানা তিনি।

এসময় তিনি এ সম্মেলনকে ‘বুদ্ধিজীবীদের মিলনমেলা’ উল্লেখ করে আরো বলেন, আজ এ উদ্যোগের মাধ্যেমে বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জ্ঞান বিজ্ঞানে শাখা প্রশাখা যারা পরিচালনা করে তারা এক সাথে হয়েছে। এ ধরণের আয়োজনের ফলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার দ্বার উন্মোচন হবে বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

এসময় শিক্ষার অনুকুল পরিবেশ তৈরি করতে হবে বলে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ‘দেশের সামাজিক  ব্যাধি তথা মাদক, দূর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ দূর করতে হবে। আর এ গুলো দূর করে আমাদের শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ তৈরি ও বজায় রাখতে হবে।

এছাড়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শুধু ডিগ্রিধারী নয় বরং আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়্যারমান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, আসামের গোহাটি বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মৃদুল হাজারিকা, সম্মেলনের ভারতীয় সমন্বয়ক ও মেঘালয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের আচার্য মাহবুবুল হক।

এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়্যারমান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, ভূ-প্রকৃতির দিক থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আন্তসম্পর্ক বিদ্যমান। আমাদের সাথে ভারতের ভাষা, সংস্কৃতিসহ অনেকদিক থেকে মিল রয়েছে। এ ধরণের সম্মেলনের ফলে আমাদের মধ্যে আন্তসম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এপ্লায়েড সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবুল মুকিদ মোহাম্মদ মোকাদ্দেছ ও সদস্য সচিব ও সিএসই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড.এম জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।

এছাড়া সম্মেলনে সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ ও ভারতের শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অব ভাইস চ্যান্সেলরস’ এই শিরোনামে আয়োজিত এ সম্মেলনে ভারতের ১৫টি ও বাংলাদেশের ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও উপাচার্যগণ অংশগ্রহণ করেন। যা বাংলাদেশে ১ম বারের মতো এ ধরণের আন্তজার্তিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ‘কমিউনিকেশন, কনসেনশাস এন্ড কো-অপারেশন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত এ সম্মেলনে বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চশিক্ষা, মৌলিক গবেষণা, উদ্ভাবনী কার্যক্রম, শিক্ষাপ্রশাসন ও ভূ-রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে এ অনুষ্ঠানে। এসময় দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে ২৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ তাদের বিশ্ববিদ্যালয় সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।

এ বিভাগের অন্যান্য