সিলেটে পহেলা বৈশাখকে ঘিরে পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি, জেলা প্রশাসনের হুশিয়ারি

দরজায় কড়া নাড়ছে বাঙালির ঐতিহ্যের বর্ণিল বৈশাখ
স্টাফ রিপোর্টার
পহেলা বৈশাখ। বাঙালি সংস্কৃতির অনন্য এক উৎসব। বাংলা নতুন বছর ১৪২৬, শুরু হতে বাকি আর মাত্র এক সপ্তাহ। শুধু সংস্কৃতি নয়, এই উৎসবকে ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে নগরীতে। বৈশাখ ঘিরে চলছে জমজমাট প্রস্তুতি। নগরীর শপিংমল গুলো থেকে শুরু করে ছোট-বড় বিপনিবিতান গুলোতে কেনাকাটায় ধুম লেগেছে। পরিবার পরিজনসহ নানা রঙের নতুন পোশাকে নিজেকে সাজাতে ভিড় বাড়ছে ক্রেতার। লাল, সাদা, নীলসহ বাহারি রঙে নিজেকে সাজাতে খুঁজে ফিরছেন পছন্দের সেই পোশাকটি। জমকালো পাঞ্জাবি, দৃষ্টিনন্দন শাড়ি আর জামায় এবারেও তারা ফুটিয়ে তুলেছেন বাঙালিয়ানাকেই। ছোটদের জন্য রয়েছে সাদা-লালের বাহারি জামা, স্কার্ট, থ্রিপিসসহ বিভিন্ন ডিজাইনের দেশীয় পোশাক। নিজেদের পছন্দের শাড়ি, জামার সঙ্গে ম্যাচিং চুড়ি, মালা, দুল কিনতে অনেকে আবার ভিড় করছেন গয়নার দোকানে।

পহেলা বৈশাখের উৎসবে ক্রেতারাও পোশাক কেনার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিচ্ছেন দেশীয় পোশাককেই। আর তাই এই উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোর ব্যস্ততাও একটু বেশি। এদিকে বাঙালির আবহমান সংস্কৃতির উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে, নিরবিচ্ছিন্ন করতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তামূলক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা বলেন,, পহেলা বৈশাখকে ঘিরে গোটা পুলিশ প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব কেন্দ্রে করে সিলেট মহানগর জুড়ে মানুষের ঢল নামবে, মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা হবে- এসব বিষয়কে মাথায় রেখে বিশেষ পরিকল্পনা অনুযায়ী নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। নিরাপত্তার ব্যাপারে সামান্যতম ছাড় দিতেও নারাজ পুলিশতিন বলেন, পুরো নগরীর সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত করবে পুলিশ সদস্যরা।
জেলা পুলিশ সুত্র জানায়, সিলেট জেলায় সর্বত্র থাকবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। উপজেলার প্রতিটি মোড়ে মোড়ে, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে পুলিশ। একইসাথে র‌্যাব ও গোয়েন্দা সদস্যরাও পুলিশের সাথে কাজ করবে। পোশাকধারী পুলিশের সাথে সাথে সাদা পোশাকের পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যরা নগরীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কাজ করবেন। এক্ষেত্রে মঙ্গল শোভাযাত্রা, জনসমাগমস্থল, বৈশাখী মেলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবেন পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যরা।
এদিকে রঙ নিয়ে কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি বরদাশত করা হবে না বলে জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম। তিনি বলেন পহেলা বৈশাখে অপসংস্কৃতির চর্চা করা যাবেনা এ ধরনের কাজে কাউকে দেখা গেলে সাথে সাথে আটক করা হবে। বৈশাখের আনন্দের মধ্যে কোনো ধরনের উচ্ছৃঙ্খল কর্মকান্ড চলতে দেয়া হবে না বলেও হুশিয়ারি করেন।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা বলেন, পহেলা বৈশাখকে ঘিরে পুলিশ বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যেই সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গোয়েন্দা সদস্যরা কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এদিকে পহেলা বৈশাখে ভুভুজেলা বাজানো, মোটরসাইকেলে দলবদ্ধভাবে হর্ণ বাজিয়ে জনবিরক্তি সৃষ্টি, খোলা ট্রাকে শহরজুড়ে বাদ্য বাজিয়ে প্রদক্ষিণ এসব কাজকে নিষিদ্ধ করার কথা বলেন ।

তিনি জানান, নগরীতে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানমালায় পুলিশ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সবকয়টি মঙ্গল শোভাযাত্রার সামনে-পেছনে থাকবে পুলিশের নিরাপত্তা। কবি নজরুল অডিটোরিয়াম, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, এমসি কলেজ, সরকারি কলেজ, শ্রীহট্ট সংস্কৃত কলেজ, মিরাবাজারে উদীচী’র অনুষ্ঠানসহ সকল বৈশাখী অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করবে পুলিশ। মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় নববর্ষে পুলিশ কাজ করবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হবে না

এ বিভাগের অন্যান্য