দেশের সংকটকালে বাউল শিল্পীরা জাতিকে পথ দেখান :বদর উদ্দিন আহমদ কামরান
হযরত শাহজালাল (র.) বিভাগীয় বাউল সংসদ, সিলেট-এর কমিটি গঠন ও শপথ পাঠ
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেছেন, বাউল শিল্পী সমাজ ও রাষ্ট্রের অমূল্য সম্পদ, অহংকার। তারা শুধু মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য সংগীত পরিবেশন করেননি, দেশের সংকটকালে তারা জাতিকে পথের দিশা দেখান, এমনকি বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে বাউল শিল্পীদের রয়েছে অবিস্মরণীয় অবদান। লোকসংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে মানুষের প্রাণকে বাউল শিল্পীরা আরো বেশি জাগিয়ে তুলবেন এই কামনা করি।
হযরত শাহ্জালাল (রহ.) বিভাগীয় বাউল সংসদ, সিলেট-এর নবগঠিত কার্যকরী কমিটির গঠন ও শপথ পাঠ এবং আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘জাগো বাউল জাগো’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে লোকসংস্কৃতিকে রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংসদের নবনির্বাচিত সভাপতি বাউল ফকির মহাজন আফছান উদ্দিন। প্রথমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত ও লোকসংগীত শিল্পী সুষমা দাশ। উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত বৃহত্তর সিলেটের বাউলশিল্পীরা সংঘবদ্ধ হয়েছেন। এর মাধ্যমে তারা লোকসংস্কৃতি সাধনায় আরো বেশি ভূমিকা রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। সংসদের সাধারণ সম্পাদক বাউল শাহীনূর আলম সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ, কবি ও লোকসংস্কৃতি গবেষক প্রফেসর ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, মোল্লারগাঁও ইউপির চেয়ারম্যান ও সংসদের প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ্ব শেখ মকন মিয়া। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাউল বিরহী কালা মিয়া। অনুষ্ঠান উপলক্ষে হযরত শাহ্জালাল (রহ.) এর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ও আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন বাউল পরিষদের সদস্যবৃন্দসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত বাউল শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এবং অন্যান্য অতিথিবৃন্দের হাতে সংসদের স্মারক তুলে দেওয়া হয়। নবগঠিত কার্যকরী কমিটির শপথবাক্য পাঠ করান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সংসদের উপদেষ্টা বাউল মুহাম্মদ চন্দন মিয়া, বাউল ফকির মুনিবুর রহমান সরকার, বাউল মুছলন্দর মিয়া, পৃষ্ঠপোষক সংগীতানুরাগী আবুল আজাদ, সাবিনা ইয়াসমিন সাব্বী, ইয়াসমিন আক্তার পিংকী, মাহমুদা আক্তার মাহবুব, এনামুল হক তালুকদার প্রমুখ। কার্যকরী পরিষদের সহ সভাপতি বাউল ফকির গোলাম মস্তফা মিয়া, বাউল আব্দুর রহমান, হেলাল উদ্দিন সরকার, তকছির আলী, রনেশ ঠাকুর, চক্রবর্তী, শাহ মুহিত সরকার, জালাল নূরীসহ অন্যান্য সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষাবিদ, কবি ও লোকসংস্কৃতি গবেষক প্রফেসর ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ বলেন, বাউল শিল্পীরা ¯্রষ্টাকে ভালোবাসেন, সংগীত সাধনার মাধ্যমে ¯্রষ্টাকে খুঁজে ফিরেন। মানুষকেও ¯্রষ্টার দিকে ধাবিত করতে চেষ্টা করেন। কিন্তু সমাজে তারা আজ সবচেয়ে অবহেলিত, নিগৃহীত। সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টাই এসমস্যা থেকে উত্তরণের একমাত্র পন্থা। এর মাধ্যমে সিলেটের বাউল শিল্পীরা সমস্ত বাংলাদেশের বাউল শিল্পকে নেতৃত্ব দেবেন।