সিলেটে ‘মুক্তিযোদ্ধা চত্বর পাবলিক টয়লেট’ নামকরন নিয়ে প্রশ্ন !

নগরীর দক্ষিণ সুরমা এলাকার কদমতলীতে পাবলিক টয়লেটের নামকরন নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সহায়াতায় স্থাপিত এই টয়লেটের নাম দেয়া হয়েছে ‘মুক্তিযোদ্ধা চত্বর পাবলিক টয়লেট’। সিসিকের এমন দৃষ্টতা নিয়ে জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সচেতন মহল মনে করছেন- মুক্তিযুদ্ধের সাথে জাতির আবেগ-অনুভূতি জড়িত। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ট সন্তান। টয়লেটের এই নামকরনের মাধ্যমে একদিকে যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে। অন্যদিক মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করা হয়েছে।

সবশেষ বৃহস্পতিবার সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এই বিতর্কিত নামকরনযুক্ত পাবলিক টয়লেট উদ্বোধন করেছেন।

এই পাবলিক টয়লেটের নাম নিয়ে ইতিমধ্যে নগরজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। পাবলিক টয়লেটটির নামফলকে দেখা যায় ‘মুক্তিযোদ্ধা চত্বর পাবলিক টয়লেট’ লিখে নামকরণ করা হয়েছে। এতে অনেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করা হচ্ছে বলে সমালোচনা করছেন।

সংস্কৃতি কর্মী দেবজ্যোতি দেবু বলেন- মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাস। মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের জন্মের নায়ক। তাঁদের সম্মানের সাথে বাংলাদেশের সম্মান জড়িত। তাঁদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নামকরণ হওয়া আর একটা পাবলিক টয়লেটের নামকরণ হওয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।

তিনি বলেন- পাবলিক টয়লেট যে জায়গায় তৈরি করা হয়েছে সেই জায়গার একটা নির্দিষ্ট নাম আছে। সেই নাম বাদ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা চত্বরের নাম স্মৃতিফলকে উল্লেখ করার কারণ আমার বোধগম্য হয়নি। কর্তৃপক্ষের কাছে মুক্তিযোদ্ধা শব্দটার গুরুত্ব কতখানি সেটা নিয়ে এই মুহূর্তে আমি দ্বিধান্বিত।

নাট্যকর্মী অরূপ বাউল বলেন- ‘মুক্তিযোদ্ধা চত্বর পাবলিক টয়লেট’ নাম, আসলে ব্যাপারটা একটু দৃষ্টিকটু লাগছে। পাবলিক টয়লেটের নামের আগে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ জুড়ে দেয়ার বিষয়টি আসলেই প্রশ্নবিদ্ধ। এটা বুঝে ভুল, না হেঁয়ালিতে ভুল তা খুঁজে দেখার বিষয়। পাবলিক টয়লেটের আগে মুক্তিযোদ্ধা চত্বর না লিখে কদমতলী পাবলিক টয়লেট লেখা যেত। তিনি এ ব্যপারে নগর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

পরিবেশকর্মী আব্দুল করিম কিম বলেন- পাবলিক টয়লেটের নামের সাথে ‘মুক্তিযোদ্ধা চত্বর’ লাগানোর মানে কি! এটা অবশ্যই উচিৎ হয়নি। এটা অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত এবং ধৃষ্টতাপূর্ণ।

সচেতন নাগরিক কমিটি সিলেট’র সভাপতি জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আজিজ আহমদ সেলিম ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলেন- আমি এখনো দেখিনি, তবে ‘মুক্তিযোদ্ধা চত্বর পাবলিক টয়লেট’ লেখা হলে অবশ্যই আমার আপত্তি আছে।

তিনি বলেন- পাবলিক টয়লেটের প্রয়োজন আছে কিন্তু ‘মুক্তিযোদ্ধা চত্বর পাবলিক টয়লেট’ লেখা হবে কেন? এলাকাটি ‘কদমতলি’ নামেই পরিচিত, তাই কদমতলি পাবলিক টয়লেট নাম দিলেই তো সমাধান হয়ে যায়। এ বিষয়ে সিটি মেয়র অবশ্যই নজর দেবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বিষয়টি নিয়ে জানতে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মোবাইলে বার বার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিভাগের অন্যান্য