প্রথম ধাপে সিলেট বিভাগের ১৭ উপজেলায় নির্বাচন
চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ৩ তারিখ তফসিল ঘোষণা করে আগামী ১০ মার্চ দেশের পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এবার পাঁচ ধাপে ভোট হচ্ছে। দেশের ৪৯২ উপজেলার মধ্যে ১০১টিতে প্রথম ধাপে ভোট করতে যাচ্ছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। প্রথম ধাপের ১০১ টি উপজেলার মধ্যে সিলেট বিভাগের ১৭ উপজেলায় হবে ভোট গ্রহণ।
প্রথম ধাপের তালিকায় রয়েছে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর, জামালগঞ্জ, শাল্লা, ধর্মপাশা, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর ও জগন্নাথপুর। হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল, মাধবপুর, চুনারঘাট, হবিগঞ্জ সদর, নবীগঞ্জ, আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং ও লাখাই।
তবে সিলেট ও মৌলভীবাজারের উপজেলাগুলোতে প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণ হবে না। এছাড়া এ দুটি জেলায় কোন ধাপের সাথে ভোটগ্রহণ হবে তাও এখনও নিশ্চিত করে জানায়নি নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, এবার ৪৯২টি উপজেলার মধ্যে ৪৮০টি উপজেলা পরিষদে পাঁচ ধাপে ভোট হবে। এরমধ্যে মার্চে চার ধাপের ভোট হবে। আর শেষ ধাপের ভোট হবে রমজানের পর।
এদিকে উপজেলা পরিষদ ভোটের তফসিলের জন্য ইসির সব প্রস্তুতি শেষ। উপজেলাগুলোর নামসহ চূড়ান্ত তালিকা অনুমোদন শেষে ৩ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করবে ইসি।
প্রথম ধাপে বাকি যেসব উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে :
রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলার সদর, আটোয়ারি, বোদা, দেবীগঞ্জ ও তেঁতুলিয়া; দিনাজপুর সদর, জেলার বীরগঞ্জ, কাহারোল, বিরল, বোচাগঞ্জ, খানসামা, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী, নবাবগঞ্জ, বিরামপুর, হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট; নীলফামারী জেলার সদর, ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ; কুড়িগ্রাম সদর, জেলার ভুরুঙ্গমারী, ফুলবাড়ী, উলিপুর, নাগেশ্বরী, রাজারহাট, রাজিবপুর, চিলমারী ও রৌমারী।
ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর জেলার সদর, সরিষাবাড়ী, মেলান্দহ, ইসলামপুর, বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ ও মাদারগঞ্জ; নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা, দুর্গাপুর, খালিয়াজুরী, কলমাকান্দা, কেন্দুয়া, মদন, মোহনগঞ্জ, পূর্বধলা ও নেত্রকোনা সদর।
রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, চৌহালী কাজিপুর, রায়গঞ্জ, শাহজাদপুর, তাড়াশ ও উল্লাপাড়া; জয়পুরহাট জেলার সদর, পাঁচবিবি, আক্কেলপুর, কালায় ও ক্ষেতলাল।
চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙ্গামাটি জেলার সদর, বাঘায়ছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচর, বরকল, জুড়াছড়ি, কাউয়াখালী, কাপ্তাই, রাজাস্থলী ও বিলাইছড়ি; বান্দরবান সদর, রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা, আলিকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি; খাগড়াছড়ি জেলার সদর, মহালছড়ি, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা, রামগড়, মানিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি ও দীঘিনালা এবং কক্সবাজারের চকরিয়ায় ভোট হবে।
এর সঙ্গে চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান পদ শূন্য হয়েছে এমন উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচন ও ১০ মার্চ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্তত অর্ধ শতাধিক পদত্যাগ অথবা মৃতজনিত কারণে উপনির্বাচন করতে হবে। এ বিষয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি কমিশন সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জানা যায়, আট বিভাগের উপজেলাগুলোকে চার দিনে চার ধাপে ভোট করা হবে। বাকিগুলো কবে মেয়াদোত্তীর্ণ হচ্ছে তা বিবেচনায় নিয়ে আরেকটি ধাপে রমজানের পর ভোট শেষ করা হবে। সেক্ষেত্রে ৫ ধাপে ভোট করা হচ্ছে। এবার উপজেলা ভোটেও ব্যবহার হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন। জেলার সদর উপজেলায় পুরোপুরি ইভিএম ব্যবহার করা হবে।
এদিকে সংসদ নির্বাচনের পর দলীয় প্রতীকে উপজেলা ভোটে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে এখনও ঘোষণা আসেনি। এরই মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে সংসদের ফল প্রত্যাখ্যানের পর দলটি উপজেলায় অংশ নেবে না।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আগামী মে মাসের মধ্যে উপজেলার মেয়াদোত্তীর্ণ হবে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের ভোটে কে এলো কে এলো না তা ইসির বিবেচ্য বিষয় নয়।
জানা যায়, বাংলাদেশে বর্তমানে ৪৯২টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। এর মধ্যে ৪৮০টিতে এবার ভোট হবে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে ১২টি উপজেলায় এ বছর ভোট হবে না। সর্বশেষ ২০১৪ সালের মার্চ-মে মাসে ছয় ধাপে এর অধিকাংশগুলোতে ভোট হয়েছিল। আইনে মেয়াদ শেষের পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা থাকায় এই নির্বাচন করতে হচ্ছে।
১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদ চালু হওয়ার পর ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে এক দিনেই ভোট হয়েছিল। ২০১৪ সালে ছয় ধাপে ভোট করেছিল তৎকালীন ইসি।