শিগগিরই আসছে ‘গোল্ডেন রাইস’ : কৃষিমন্ত্রী
সাধারণ মানুষের ‘ভিটামিন-এ’র ঘাটতি পূরণে সরকার শিগগিরই ধানের নতুন জাত ‘গোল্ডেন রাইস’ উন্মুক্ত করবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ইরি) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, এশিয়ায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে ইরির একটা বিরাট অবদান রয়েছে। আমাদের গরিব মানুষ অনেক সময়ই পুষ্টিকর খাবার খেতে পারে না, কিনতে পারে না। ভিটামিন-এ একটা আমাদের বিরাট সমস্যা। বাংলাদেশ রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (ব্রি) ও ইরি মিলে গোল্ডেন রাইস আবিষ্কার করেছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘এটা এখন আমাদের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্সের অপেক্ষায় আছে। এই ব্যাপারে তারা আলাপ করেছে, এটা যাতে তাড়াতাড়ি রিলিজ হয়।’
‘আমরা যেহেতু চাল খাই, তাই চালের মধ্যেই ভিটামিন-এ ও ক্যারোটিন থাকলে তা পুষ্টি সমস্যা সমাধানে বিরাট অবদান রাখবে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের মানুষ তো শুধু চালই খায়, তারা চালের ওপর নির্ভরশীল। সারাদেশেই এটার একটা বিরাট প্রভাব পড়বে। আমার আশা করছি গোল্ডেন রাইসটা খুব তাড়াতাড়ি বাংলাদেশে রিলিজ হবে।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমেরিকার ড্রাগ অ্যান্ড ফুড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এটার ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে। কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার সরকারও এটার ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে যে গোল্ডেন রাইস নিরাপদ, শরীরের জন্য এতে কোনো ঝুঁকি নেই, এটা নিরাপদ। আরও কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে। আমরা আশা করছি আমরাও অতিদ্রুত ‘ক্লিয়ারেন্স’ পাব। পরিবেশ মন্ত্রণালয় এজন্য কমিটি করেছে।’
বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ এর মতোই গোল্ডেন রাইসের উৎপাদন পাওয়া যাবে জানিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘গোল্ডেন রাইসটা বেশ প্রমিজিং বলে আমরা মনে করছি। একটা নতুন অধ্যায় যোগ হবে।’
তিনি বলেন, ‘চালটার রং হবে গোল্ডেন। খরচ সাধারণ চালের মতোই হবে। অতিরিক্ত কোনো খরচ হবে না।’
পরিবেশের উপর এর প্রভাবের বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে- আমাদের পরিবেশের কোনো ক্ষতি করবে কি না এবং নিরাপদ কি না…এটার মধ্যে জিএমও (জেনেটিক্যালি মডিফাইড) আছে তো। তাই সবার একটা ধারণা আছে, এটার সাথে খারাপ কোনো উপাদান যোগ হচ্ছে কি না।’
দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই গোল্ডেন রাইসের ছাড়পত্র পাওয়া যাবে বলে মনে করেন কৃষিমন্ত্রী।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, এ ছাড়া আমাদের উপকূলীয় এলাকাতে এমন জাতের দরকার… যা আমরা লবণাক্ত অবস্থার মধ্যে আরও বেশি ধান উৎপাদন করতে পারি। এটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। এগুলোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।