উপজেলায় নৌকা পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু

জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হতে না হতেই শুরু হয়েছে উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি। তৈরি রাজশাহী আওয়ামী লীগও। আগামী মার্চে ভোট হচ্ছে ধরে নিয়েই তৈরি হচ্ছেন নেতারা। দলীয় মনোনয়ন পেতে স্থানীয় এমপিদের কাছাকাছি ভিড়তে শুরু করেছেন তারা।

এবার প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে হবে উপজেলা নির্বাচন। ফলে এবার ভোট নিয়ে ক্ষমতাসীন দলে আছে বাড়তি আগ্রহ। যদিও জাতীয় নির্বাচনে হেরে যাওয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের আগ্রহে ভাটা পড়েছে।

২০১৪ সালের নির্বাচনে মোটেও ভালো করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। গোদাগাড়ীতে এ কে এম আসাদুজ্জামান আসাদ, তানোরে গোলাম রাব্বানী, পবায় মুনসুর রহমান, মোহনপুরে আব্দুস সালাম, পুঠিয়ায় শাহরিয়ার রহিম কনক, চারঘাটে ফখরুল ইসলাম ও বাঘায় আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজিজুল আলম হেরে যান। জেতেন কেবল বাগমারায় জাকিরুল ইসলাম সান্টু ও দুর্গাপুরে নজরুল ইসলাম।

তাদের মধ্যে গোলাম রাব্বানী, জাকিরুল ইসলাম সান্টু, আহসানুল হক মাসুদ সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন ফরম তোলেন। কিন্তু দলের প্রতীক পাননি। মনোনয়ন চাওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে তাদের বিরোধ ছিল চরমে। তবে নির্বাচনের মধ্যেই সেই বিরোধ মিটেছে। এক কাতারে এসে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন সবাই।

গোদাগাড়ীর উপজেলা চেয়ারম্যান ইসহাক আলী বিএনপির সমর্থনে গতবার নির্বাচিত হলেও এখন তিনি আওয়ামী লীগের নেতা। ফলে এবার কপাল পুড়তে পারে এ কে এম আসাদুজ্জামান আসাদের। তবে এ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমসহ আরও দু-একজন এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে সবার কাছে দোয়া চাইছেন।
তানোরে গতবারের প্রার্থী গোলাম রাব্বানির পাশাপাশি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনও মনোনয়ন চাইছেন।

পবায় গতবারের প্রার্থী মুনসুর রহমানের পাশাপাশি মনোনয়নের দৌড়ে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইয়াসিন আলী, সাধারণ সম্পাদক মাজদার রহমান সরকার ও জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ফারুক হোসেন ডাবলু।
মোহনপুরে এবার আব্দুস সালাম ছাড়াও উপজেলা নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন আরও কয়েকজন নতুন মুখ।

বাগমারায় বর্তমান চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টুকে মোকাবেলা করতে হবে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অনিল কুমারসহ আরও কয়েকজন নতুন মুখকে। অনিলের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুসম্পর্ক আছে। আর সান্টুর সঙ্গে গত পাঁচ বছর ধরেই চলছিল বিরোধ। যদিও জাতীয় নির্বাচনের আগে সেই বিরোধ মিটেছে।

দুর্গাপুরে আবার মনোনয়ন চাইবেন নজরুল ইসলাম। তবে সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ ও পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জাল হোসেনসহ আরও কয়েকজন নেতা আগ্রহী ভোটে লড়তে।

পুঠিয়ার আহসানুল হক মাসুদ জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নের লড়াইয়ে ছিলেন। এবার তিনি উপজেলায় মনোনয়ন চাইবেন কি না তা নিশ্চিত নয়। তবে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক ছাত্রনেতা গোলাম ফারুক ও শাহরিয়ার রহিম কনক দলীয় মনোনয়ন চাইবেন।
চারঘাটে এবারও উপজেলায় মনোনয়ন চাইবেন আওয়ামী লীগের নেতা ফখরুল ইসলাম ও একরামুল হক।

বাঘায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলু, বাঘার সাবেক মেয়র আক্কাস আলী ছাড়াও আরও দু-তিনজন এবার মনোনয়ন চাইতে পারেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘যেকোনো নির্বাচনের জন্য দীর্ঘ দিনের প্রস্তুতি রাখতে হয়। উপজেলা নির্বাচন নিয়েও আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। উপজেলায় প্রার্থী হতে চান, এমন দলীয় অনেক নেতা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। অবশ্যই যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য আমরা দলের কাছে সুপারিশ করব।’

এ বিভাগের অন্যান্য