জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ মাস্টার প্লান বাস্তবায়নের রূপকার: এম এ মান্নান
সিলেটের সময় প্রতিবেদক:
প্রত্যেক সরকারই মনে করে, তার সময়ে দেশে যত উন্নয়ন হয়, আর কোনো সরকারের আমলে হয় না। বর্তমান সরকারের সময়েও প্রতিদিন এ কথা বলা হচ্ছে। উন্নয়ন নিয়ে এ সরকার এতটাই আত্মতুষ্টিতে ভুগছে যে, অতীতের কোনো সরকার যেন এর ধারেকাছেও যেতে পারেনি। এ সরকারের প্রায় দশ বছরের শাসনামলে যে উন্নয়ন হয়েছে তা যেন নজীরবিহীন। তাই সরকার উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে জনসভা করে তাকে ভোট দিয়ে আবারো ক্ষমতায় আনার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছে। জনসভায় আগতদের ওয়াদা করিয়ে ভোট নিশ্চিত করা হচ্ছে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, তার চলমান দুই মেয়াদে যে ইতিহাস সৃষ্টি করা উন্নয়ন হয়েছে, তাতে তাকে পুনরায় ভোট না দেয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এমন আত্মবিশ্বাসী যে, তাদেরকে পুনরায় নির্বাচিত করা ছাড়া জনগণের সামনে যেন আর কোনো বিকল্প নেই।
স্বাবাধীনতার পর থেকে সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনে যত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতি মন্ত্রী এম.এ মান্নানের মতো এতো উন্নয়ন কেউ করেন নি। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এম.এ মান্নান এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর পাল্টে যেতে থাকে এই দুই উপজেলার চিত্র। ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করেন এম.এ মান্নান।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারো বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এম.এ মান্নান। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। বর্তমান সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য এম.এ মান্নান এর আন্তরিক প্রচেষ্টায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হওয়ায় পাল্টে যাচ্ছে প্রবাসী অধ্যুষিত ও হাওর বেষ্টিত দুই উপজেলা জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ। স্বাধীনতার ৪০ বছরে যে উন্নয়ন হয়নি গত ৯ বছরে সেই উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবী করেছেন এই এলাকার জনগণ। রাস্তা-ঘাট-মসজিদ-মন্দির-মাদ্রাসার উন্নয়নের পাশাপাশি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ- জগন্নাথপুরের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় হাসপাতালের আসন বৃদ্ধি, দুই উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন স্থাপন, দুই উপজেলা সড়কে দৃষ্টি নন্দন ব্রীজ-কালভার্ট নির্মান, অধিকাংশ এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার, প্রত্যেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘ‚র্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ ইত্যাদি।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জকে উপজেলায় উন্নীত করে প্রশাসনিক ভবনসহ ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করা হয়। সুনামগঞ্জে মেডিকেল কলেজ ও ট্রেক্সটাইলস ইন্সটিটিউটসহ ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ছাড়া জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীতে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক সেতু নির্মান, ৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউষকান্দি সড়কের কাজ চলমানসহ দুটি উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতি মন্ত্রী এম.এ মান্নান এম.পি। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগ এর সিনিয়র সহ-সভাপতি তহুর আলী বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নে আন্তরিকতার কারনে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুরে অভ‚তপ‚র্ব উন্নয়ন হয়েছে। মন্ত্রী এম.এ মান্নানের রাজনৈতিক সচিব হাসনাত হোসাইন বলেন, প্রতিমন্ত্রী এম.এ মান্নান যেভাবে এই এলাকার উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত করেছেনে, তা সরকারের ভাবম‚র্তিকে ব্যাপকভাবে উজ্জল করেছে।
আজ উন্নয়নের ছোঁয়ায় পাল্টে গেছে এ দুটি উপজেলার দৃশ্যপট। কয়েক বছরের মধ্যে গ্রামে গ্রামে পাকা রাস্তা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, সৌর বিদ্যুৎ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো নির্মানে পুরোদস্তুর পাল্টে গেছে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলা। এ সবের কারিগর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ মান্নান। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বদলে গেছে এ দুটি উপজেলার মানুষের জীবনচিত্র।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, গত ৯ বছরে এ দুই উপজেলার সব রাস্তা প্রায় পাকা হয়ে গেছে। এখন আর কাঁচা রাস্তা নেই।
সরেজমিনে, এ দুটি উপজেলা ঘুরে উন্নয়নের চিত্র দেখা গেছে। প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানের একান্ত প্রচেষ্টায় সুনামগঞ্জে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একনেকে অনুমোদিত হয়েছে, সুনামগঞ্জে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অনুমোদিত হয়েছে। দক্ষিণ সুনামগঞ্জের নোয়াখালিতে কালনী নদীর উপর সেতু নির্মাণের কাজ দ্রæত চলছে, জগন্নাথপুরে ড্রেনের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ডাবর থেকে আউশকান্দি মহাসড়কের কাজ পুনঃসস্কার চলছে, সুনামগঞ্জ পৌর কলেজের কাজ বাস্থবায়ন হচ্ছে। দক্ষিণ সুনামগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ শুরু হবার পথে, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে মডেল থানা নির্মাণ হয়েছে, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে উপজেলা রাসেল মিনি স্টেডিয়াম কাজ সম্পন্ন হয়েছে, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স হয়েছে, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাব স্থায়ী বিল্ডিংয়ের কাজ হচ্ছে, উন্নয়নের ফলশ্রুতিতে বদলে যাচ্ছে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও জগন্নাথপুরসহ দুই উপজেলা। সুনামগঞ্জে সুরমা সেতু নির্মাণেও প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানের অবদান আছে। শুধু সুরমা সেতু নয় সিলেটের মধ্যে বৃহত্তর জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর উপর সেতু নির্মানেও রয়েছে প্রতিমন্ত্রী এম.এ মান্নান এর একক অবদান।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ মান্নানের সাথে আলাপ হলে তিনি বলেন, জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলাসহ সুনামগঞ্জ জেলায় বড় বড় মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যেই এগুলো সম্পন্ন হলে অত্র এলাকার মানুষ ব্যাপক সু-ফল ভোগ করতে পারবেন। উল্লেখ্যযোগ্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে সুনামগঞ্জ বিশ্ব বিদ্যালয় স্থাপন, মেডিকেল কলেজ স্থাপন, পাগলা-জগন্নাথপুর আঞ্চলিক মহা-সড়কে ৯টি ব্রীজ নির্মান, ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে রানীগঞ্জ সেতু নির্মানসহ ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চলছে। এলাকাবাসীর দোয়া ও সমর্থন ফেলে সবসময় আমি সেবা করে যাব ইনশাল্লাহ।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকমল হোসেন বলেন, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম.এ মান্নান এ দুটি উপজেলায় যে উন্নয়ন কাজ করেছেন তা নজির বিহীন। মন্ত্রীকে আগামীতে নির্বাচিত করলে, আরও ব্যাপক উন্নয়ন হবে বলে আশাবাদী।