নতুন ভাবনার সিনেমা রাত্রির যাত্রী’ ১৪ ডিসেম্বর শুভ মুক্তি‌ পাচ্ছে

আগামী ১৪ ডিসেম্বর ‘রাত্রির যাত্রী’ শুভ মুক্তির ঘোষণা জানালেন ছবিটির পরিচালক হাবিবুল ইসলাম হাবিব। সম্প্রতি এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘রাত্রির যাত্রী’ ছবিটির মুক্তির তারিখ ঘোষণা করেন তিনি। তবে সংবাদ সম্মেলনে ছবিটির মুক্তির দিন নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেন ছবিটির পরিচালক হাবিবুল ইসলাম হাবিব।

তিনি বলেন, আমার ছবির মুক্তির দিনটি নিয়ে জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে ‘শুনছি, একটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেখিয়ে একাধিক নতুন ছবি ওই তারিখে ঢুকে যেতে পারে। সিনেমা নিয়ে এ কোন ধরনের নোংরা রাজনীতি?’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সবার কাছে এমন প্রশ্ন রেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এই পরিচালক।

পরিচালক হাবিবুল ইসলাম হাবিব জার্মানবাংলা টুয়েন্টিফোরকে বলেন, একটি ভালো ছবিকে দর্শকবিমুখ করতে পাশাপাশি সময়ে অন্য একটি ছবি মুক্তি দেয়া সত্যিই দুঃখজনক। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সৃষ্টিশীল নির্মাতারা। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের ভুলে গেলে চলবে না; বর্তমানে সিনেমার ব্যবসা খুবই খারাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সৃজনশীল ও সুস্থধারার একটি ছবিকে কেন্দ্র পাশাপাশি অন্য একটি ছবির মুক্তি কখনই কাম্য হতে পারে না। এতে ব্যবসা সফল ছবিগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন সৃষ্টিশীল নির্মাতারা। বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ড্রাস্টির কথা চিন্তা করেই সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতামূলক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত হবে বলে মনে করেন তিনি।

তিন বছরের নানা উত্থান-পতনের মধ্যে যখন অনেক বড় একটি বাধার মুখোমুখি হলেন, যখন নিশ্চিত হয়ে গেলেন ‘রাত্রির যাত্রী’ হয়তো আর মুক্তি পাবে না, ঠিক তখনই পরিচালক হাবিবুল ইসলাম হাবিবের কাঁধে হাত রেখে পাশে এসে দাঁড়ালেন প্রযোজক সামসুল আলম। কাঁধে হাত রাখা সে শেষ হাতটির হাতে হাত মিলিয়ে হাবিবুল ইসলাম হাবিব ১৪ ডিসেম্বর তার অনেক সাধনার চলচ্চিত্র ‘রাত্রির যাত্রী’ মুক্তি দিতে যাচ্ছেন অবশেষে।

এ ‘রাত্রির যাত্রী’র পেছনে তিন বছরের নানা কষ্টের গল্প আছে। আর তা আছে বলেই এ সিনেমার ‘মিট দ্য প্রেস’-এ কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিচালক হাবিবুল ইসলাম হাবিব। তার ঠিক সামনে বসে থাকা তার সহধর্মিণীও কান্নায় ভেঙে পড়েন। এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে তখন পিনপতন নীরবতা।

অনুষ্ঠানের অতিথি কিংবদন্তি নায়ক ফারুক বলে উঠলেন, ‘আমি কোনো দিন কোনো পরিচালককে এভাবে কাঁদতে দেখিনি। এটা একজন পরিচালকের কান্না নয়। এটা চলচ্চিত্রের বর্তমান পরিস্থিতির কান্না, যা কেউ প্রকাশ করতে পারেনি। হাবিবও এতদিন পারেননি। কিন্তু শেষমেষ আপনাদের সামনে কান্না ধরে রাখতে পারেননি।’

‘রাত্রির যাত্রী’র মিট দ্য প্রেসে উপস্থিত ছিলেন সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রের নায়িকা প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী, চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন, রাত্রির যাত্রীর অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান, নির্মাতা কাজী হায়াৎ, আবু মুসা দেবু, জাজের কর্ণধার আবদুল আজিজ, নাদের চৌধুরী, ডিএ তায়েব, নির্মাতা অনিমেষ আইচসহ অনেকে। নির্মাতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, ‘বাংলাদেশের কোটি মানুষের প্রিয় নায়িকা মৌসুমী আমার সিনেমার প্রধান শিল্পী। তার মতো একজন নায়িকা আমার সিনেমার গল্পকে ভালোবেসে এ রাজধানীর রাস্তায় রাস্তায় রাতের পর রাত কষ্ট করে শুটিং করেছেন। তার কাছে আমি ভীষণ ঋণী। আমি কৃতজ্ঞ মৌসুমীর কাছে।’

ফারুক বলেন, ‘মৌসুমী আমারও ভীষণ প্রিয় একজন নায়িকা। তার সঙ্গে একটি সিনেমায় অভিনয় করেছিলাম, কিন্তু শেষ হয়নি। মৌসুমী এমনই একজন নায়িকা যে কিনা অভিনয়কে ভালোবেসে চরিত্রের গভীরে প্রবেশ করে অন্তর দিয়ে অভিনয় করে। রাত্রির যাত্রীতেও আশা করি তাই করেছে মৌসুমী।’

প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী বলেন, ‘হাবিব ভাই যে কত কষ্ট করেছেন তার স্বপ্নের এ চলচ্চিত্রটির জন্য তা আমি নিজের চোখে দেখেছি। একজন মানুষ তার স্বপ্নপূরণের জন্য এত কষ্ট করতে পারেন তা আমার জানা ছিল না। হাবিব ভাই আজ কেঁদেছেন, তার এ কান্না আমাকেও কষ্ট দিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি রাত্রির যাত্রী হাবিব ভাইয়ের স্বপ্নপূরণ করবে, দর্শকের কাছে অনুরোধ থাকবে আপনারা হলে গিয়ে সিনেমাটি উপভোগ করবেন।’ রাত্রির যাত্রীতে আরও যারা অভিনয় করেছেন তারা হলেন, অরুনা বিশ্বাস, আনিসুর রহমান মিলন, সালাহ উদ্দিন, সম্রাট, শহীদুল আলম সাচ্চু, নায়লা নাঈমসহ অনেকে।

এ বিভাগের অন্যান্য