অষ্টম টেস্ট ভেন্যু হিসেবে ৩ নভেম্বরে অভিষেক  সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

॥ স্টেডিয়াাম নিয়ে বেশ উদগ্রীব সিলেটবাসী টেস্টে যেমন খেলা হয় সেটাই দেখা যাবে॥

মবরুর আহমদ সাজু সিলেট :

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভিষেক টেস্টে ৩ নভেম্বর মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। সিলেটে অনুষ্টিত প্রথম টেস্টে স্বাগতিক বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে দল। অথচ চা বাগানসহ নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের জন্য সুপরিচিত সিলেটে পাহাড়বেষ্টিত এই স্টেডিয়াামে প্রথম খেলা হবার কথা ছিলো প্রায় ৫ বছর আগে। ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ড যখন বাংলাদেশ সফর করে তখন তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবার কথা থাকলেও পুরোপুরি প্রস্তুত না থাকার কারণে সেবার ম্যাচটি আয়োজিত হয়নি । তার পরের বছর ২০১৪ সালে শ্রীলংকার বাংলাদেশ সফরকালেও শেষ ওয়ানডেটি সিলেটে হবার আলোচনা চললেও, শ্রীলংকান জাতীয় দল একটি ম্যাচের জন্য সেখানে সফর করতে রাজি হননি। ২০১৩ সালে জুন থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ঢেলে সাজানো হয় এই স্টেডিয়ামটি। তখন মূল ভবন, গণমাধ্যমের জায়গা ও ফ্লাডলাইট বসানো হয়।বাংলাদেশের একমাত্র গ্রীন গ্যালারী সিলেটের স্টেডিয়ামটিতেই আছে। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের ওয়ার্ল্ড টি টোয়েন্টিতে বাছাই পর্বের ৬টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় এই স্টেডিয়ামে।এছাড়া ২০১৬ সালের অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপেও এই স্টেডিয়ামে খেলা হয়।২০১৭ সালের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ প্রথম বারের মত সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মোট ৮টি ম্যাচ হয়।বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার আজকের ম্যাচ ঘিরে উল্লসিত সিলেটের ক্রিকেটপ্রেমীরা।সিলেটের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটভক্তের সাথে কথা বলে জানা যায় আসছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভিষেক টেস্টে ৩ নভেম্বর মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল এই ম্যাচের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছেন তারা। কলেজ পড়–য়া রুবেল মিয়া জানান এটাই তার প্রথম ক্রিকেট খেলা দেখার অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। তাই সে খুবই উদগ্রীব। সিলেটের ক্রীড়ামোদিদের কাছ থেকে জানতে চাইলে টেস্ট ম্যাচটি সিলেটের ক্রীড়ানুরাগীদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিকেট বিশ্লষকরা জানান “বাংলাদেশের মানুষ সিলেট স্টেডিয়াাম নিয়ে বেশ উদগ্রীব। এই মাঠটিতে খেলা হবার কথা বহুদিন আগে। তবে অন্যান্য শহরে যেমনটা গোটা শহরে সাজসাজ রব থাকে সিলেটে শুধু ক্রিকেটপ্রেমীরাই খেলার প্রতি আকৃষ্ট।” বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শফিউল আলম নাদেল বিবিসি বাংলাকে জানান, জাতীয় দল ও সফরকারী দল উভয়ই উইকেট মাঠ ঘুরে দেখেছেন। তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এখানেই প্রস্তুতি নিচ্ছে দুদল। তবে টেস্টে যেমন খেলা হয় সেটাই দেখা যাবে আশা করেন তিনি। ইতোমধ্যে টেস্ট ম্যাচ খেলতে এরই মধ্যে সিলেট পৌঁছেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। টিম বাংলাদেশ সিলেট স্টেডিয়ামে অনুশীলনও করছে। তবে অনুশীলন দেখার সুযোগ নেই সিলেটের দর্শকদের।বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় বারের মতো সিলেটে এসেছে। টেস্ট খেলতে প্রথমবার সিলেট আসা টাইগারদের। সেজন্য দর্শকদেরও আগ্রহ একটু বেশি। তাই অনেকেই ক্রিকেটারদের অনুশীলন দেখতে স্টেডিয়ামের গেইটে যাচ্ছেন। তবে তাদেরকে সেখান থেকে ফিরে আসতে হচ্ছে। গ্যালারিতে বসেও প্র্যাকটিস দেখার সুযোগ নেই দর্শকদের।জানা গেছে, নিরাপত্তার জন্যই বিসিবি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। তবে ম্যাচের সময় দর্শকরা টিকিট নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। গত দুই তিন দিন প্রচুর দর্শককে অনুশীলন দেখার জন্য স্টেডিয়ামের গেইটে ভীড় করতে দেখা যায়। তবে প্রধান ফটকে দায়িত্বরত আনসার সদস্যসহ নিরাপত্তা সদস্যরা কাউকে ভিতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।গতকাল সকালে রাহিদ নামের একজন তরুণ তার বন্ধুকে নিয়ে স্টেডিয়ামে টাইগারদের অনুশীলন দেখতে যান। তিনি গেইটে প্রতিবেদককে জানান, তারা গ্যালারিতে বসে অনুশীলন দেখতে চেয়ে ছিলেন। এসময় আনসার সদস্যরা জানান, ভেন্যু ম্যানেজার জয়দ্বীপ দাস সুজকের অনুমতি লাগবে। প্রতিবেদক বিষয়টি ভেন্যু ম্যানেজার সুজককে জানালে তিনি নিরাপত্তাকর্মীদের বলতে বলেন। তবে টাইগার ক্রিকেটের ওই সমর্থকদের আর অনুশীলন দেখার সুযোগ হয়নি।অভিযোগ করেন, আমাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তবে আমাদের সামনেই তাদের পরিচিত জনদের দেখে দেখে মাঠে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছেন গেইটের নিরাপত্তা কর্মীরা।কিন্তুু উল্টো চিত্রও আছে। দর্শকদের জন্য আইন ‘কঠোর’ হলেও দায়িত্বরতদের জন্য আইন শিথিল হতে দেখা গেছে। স্টেডিয়ামে দায়িত্বপালনরত একজন কর্মীকে দেখা যায় বাংলাদেশ দলের ড্রেসিং রুমের সামনে পরিচিত জনদের নিয়ে খেলোয়াড়দের সাথে ছবি তুলে দিচ্ছেন।সিলেটে প্রথমবার এসেছে টেস্ট দল। সেজন্য হয়তো দর্শকদের একটু আগ্রহ ক্রিকেটারদের কাছ থেকে দেখার বা অনুশীলনে সুযোগ দেখার। তবে নিরাপত্তার কড়াকড়ির জন্য আপাতত তাদের সেই সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার মিডিয়া বিভাগের কর্মকর্তারা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য