বিচ্ছিন্ন কব্জি জোড়া লাগলো
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে হাত দুই টুকরো হয়ে যায় লিটন মিয়ার। সংঘর্ষে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাঁর বাম কব্জি নিচের অংশ। সেই বিচ্ছিন্ন হওয়া হাত একটি প্যাকেটে মুড়িয়ে লিটন মিয়াকে নিয়ে সিলেট আসেন তাঁর স্বজনরা। সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে টানা প্রায় ৯ঘন্টার দীর্ঘ অস্ত্রোপচার শেষে বিচ্ছিন্ন হওয়া কব্জি জোড়া লাগিয়েছেন চিকিৎসা।
বাংলাদেশের চিকিৎসা জগতে এমন অস্ত্রোপচার বিরল উল্লেখ করে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এরকম বড় অস্ত্রোপচার আর হয়নি। সিলেটের মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে সোমবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এ অস্ত্রোপচার চলে বলে জানিয়েছেন এতে নেতৃত্ব দেওয়া সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক এন্ড রিকনস্ট্রাক্টিভ সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আব্দুল মান্নান।
মঙ্গলবার রাতে তিনি জানান, অস্ত্রোপচারের পর রোগী এখন অনেকটাই ভালো আছে। তার হাত পুরোপুরি ভালো হবে কী না তা জানার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
জানা যায়, সোমবার বিকেলে দিরাইয়ের রফিনগরে হাওরে হাঁস চরানো নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে মারা যান এরশাদ (২৮) নামের এক ব্যক্তি। আহত হন অন্তত ২০জন। আহতদের মধ্যে লিটন মিয়ার (২৫) বাম হাত কব্জির নিচ থেকে কেটে যায়। শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় হাত। বিচ্ছিন্ন সেই হাত প্যাকেটে মুড়িয়ে লিটন মিয়াকে নিয়ে সোমবার রাতে নগরীর মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে আসেন তাঁর স্বজনরা। রাত সাড়ে ১০টায় শুরু হয় লিটন মিয়ার হাতের অস্ত্রোপচার। যা চলে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। দীর্ঘ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো হয় লিটন মিয়ার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া হাত।
অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেওয়া ডা. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, এরআগে সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে দুটি হয়েছিলো। এরমধ্যে একজন রোগীকে বাঁচানো যায়নি। আরেকজন ভালো আছে।
তিনি বলেন, এরকম বড় অস্ত্রোপচার দেশেই খুব কম হয়েছে। তবে যেগুলো হয়েছে তার সবগুলোই সরকারি হাসপাতালে। বেসরকারি হাসপাতালে দেশে এরআগে এতো বড় ও সফল অস্ত্রোপচার হয়নি।
তিনি জানান, এই অস্ত্রোপচারে তাঁর সঙ্গে আরও ছিলেন- ডা. বাকিবিল্লাহ, ডা. ফয়ছল আহমদ মুহিন, ডা. নুরুল আমিন শোভন, ডা. পল্লব শর্মা ও ডা. দেলোয়ার হোসেন।