২২শে সেপ্টেম্বরের পর ঐক্য প্রক্রিয়ার অভিন্ন কর্মসূচি

নির্বাচন সামনে রেখে বৃহৎ রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার নেতারা। এ পর্যন্ত তিন দলের যুক্তফ্রন্ট ও গণফোরামের মধ্যে ঐক্যের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। ঐক্যপ্রক্রিয়ার পক্ষ থেকে আগামী ২২শে সেপ্টেম্বর নাগরিক সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ওই সমাবেশে সরকারের বাইরে থাকা প্রায় সব দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হবে। দলের বাইরেও বিশিষ্ট ব্যক্তি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদেরও সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। প্রত্যাশা অনুযায়ী সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে সমাবেশ থেকেই বৃহৎ জাতীয় ঐক্যের ঘোষণা আসতে পারে। পরে জাতীয় ঐক্যের ব্যানারে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও নির্বাচন ব্যবস্থার দাবিতে অভিন্ন কর্মসূচিও আসতে পারে বলে নেতারা আভাস দিয়েছেন।

জাতীয় ঐক্য গড়তে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে ২২শে সেপ্টেম্বরের সমাবেশ হবে। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার পক্ষ থেকেই রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।

গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, জাতীয় ঐক্যকে সামনে নিয়ে আমরা কাজ করছি। বৃহৎ জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে ২২শে সেপ্টেম্বর আমরা সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যের ঘোষণা এলে আমরা অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামব। নির্বাচন সামনে রেখে গণফোরাম দলীয় কর্মসূচি পালন করছে বলে জানান তিনি।

এদিকে অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্টের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি’র সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেন, ২২শে সেপ্টেম্বরের সমাবেশ নিয়ে গণফোরাম কাজ করছে। তারা আমন্ত্রণ জানাবে। জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের গণফোরামের ঐকমত্য হয়েছে। এখনও জোটগত কর্মসূচি ঠিক হয়নি। তবে আমরা দলীয় কর্মসূচি নিয়ে কাজ করছি। তিনি বলেন, জেএসডি বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় কর্মসূচি পালন করছে। সভা-সমাবেশ করছে। সামনে কয়েকটি জেলায় কর্মসূচি রয়েছে। যুক্তফ্রন্টের শরিক বিকল্পধারা বাংলাদেশও দলীয় কর্মসূচি পালন করছে। অন্য শরিক নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকেও সভা-মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

ঐক্যপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত নেতারা জানিয়েছেন, আপাতত সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার লক্ষ্য রয়েছে। কোনো কারণে অনুমতি না মিললে ভিন্ন ভেন্যুর চিন্তা করা হবে। সমাবেশে বিএনপিসহ সরকারের বাইরের সব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। আওয়ামী লীগ ও সরকারের শরিক দলগুলোকে সৌজন্য হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি-না এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি উদ্যোক্তারা। বিএনপি ও ২০ দলের অন্য শরিকদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও জামায়াতকে এ ঐক্য প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় ঐক্য গড়তে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন যুক্তফ্রন্ট ও গণফোরাম নেতারা। সর্বশেষ গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বাসায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে যুক্তফ্রন্ট ও গণফোরাম ঐক্য প্রক্রিয়ায় একসঙ্গে কাজ করতে একমত হয়। বৈঠকে নেতারা সামনের করণীয় ঠিক করতে একটি সাব-কমিটি গঠনের কথাও জানান। বৈঠকে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এ আগে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর অব. আবদুল মান্নানের বাসায় বৈঠক করেন নেতারা। এ প্রক্রিয়ায় এখন পর্যন্ত যুক্ত না হলেও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন ঐক্যপ্রক্রিয়ার নেতারা। কাদের সিদ্দিকী সম্প্রতি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচন বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

এ বিভাগের অন্যান্য