আরিফ কে নিয়ে সিলেটে টালবাহনা
নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে বিএনপির মনোনয়ন পান আরিফুল হক চৌধুরী। তবে দলীয় প্রতীক পেলেও স্বস্তিতে নেই সিলেট সিটি করপোরেশনের সদ্যবিদায়ী এই মেয়র। আরিফের সাথে সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম এবং বিএনপির জোট শরীক জামায়াতের মহানগর আমীর এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
সেলিম আর জুবায়েরর কারণে দলের মনোনয়ন সত্ত্বেও স্বস্থিতে নেই আরিফুল হক। ভোটযুদ্ধে নামার আগে দল আর জোটের বিদ্রোহ ঠেকাতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে তাকে।
আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে তফশীল ঘোষণার পূর্ব থেকেই অবস্থান নেন স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতারা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দলবিচ্ছিন্নতা ও দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের। এ নিয়ে চলে ঢাকা-লন্ডন-সিলেট টানাটানি। নানান কৌশলেও এই বিদ্রোহ দমন করতে পারেনি কেন্দ্রিয় বিএনপি। শেষ পর্যন্ত আরিফকে বেছে নিলেও তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছেন বিদ্রোহি প্রার্থী।
সিলেটে বিএনপির বিদ্রোহি প্রার্থী হিসেবে বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। মনোনয়ন পত্র জমা শেষে তিনি বলেন, নারায়নগঞ্জের নির্বাচন সাক্ষি, দলবিচ্ছিন্ন কেউ নির্বাচনে জয় পান না। তাই তৃণমূলের দাবি বুঝেই আমি প্রার্থী হয়েছি। যাবে বিএনপি দলীয়ভাবে বেছে নিয়েছে তিনি একজন, স্বার্থপর ও পলাতক লোক। বিপদের সময় দলকে তিনি বারবার ফেলে পালিয়েছেন। আবার সুবিধার সময় দলের ভেতর অবস্থান নিয়েছেন। আমি এবং স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতারা লণ্ডন এবং কেন্দ্রিয় বিএনপির কাছে এই কথাই তুলে ধরেছি। তারপর এমন একজন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ায় বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীদের মতো আমিও অত্যন্ত ব্যথিত এবং ক্ষুব্ধ। আমি দলের প্রতি অনুগত কিন্তু তৃণমূলের রাজনীতি করি বলে তাদের দাবিতেই প্রার্থী হয়েছি।
বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী মনোনয়ন পত্র দাখিলকালে মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইনসহ স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অনেকেই সাথে ছিলেন। নাসিম হোসাইনও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন এবং আরিফের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও করেছিলেন তিনি। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, বুকে ক্ষোভ নিয়েও দলের কারণে তারা উনার সাথে এসেছেন। তবে কেউই বিষয়টি মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না।
তিনি বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনে প্রার্থী বাছাইয়ে বিএনপি ভুল করেছে। আমি বিশ্বাস করি, নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে ব্যালেটের মাধ্যমে বিএনপির এই ভুল সিদ্ধান্তের জবাব দেবে।
দলের সিলেটের তৃণমূলের সিংহভাগ নেতাকর্মীরা আরিফুল হকের সাথে নেই বলে মন্তব্য করেন সেলিম।
তবে বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, বিএনপি একটি বড় দল। এর নেতাকর্মীদের মধ্যে মান-অভিমান থাকতে পারে। তবে ধানের শীষের পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধ। ফলে এসব ভুলবুঝাবুঝি থাকবে না।