কারাগারে মোবাইল সেবা কতটা পরিবর্তন আনবে?

বাংলাদেশের কারাবন্দিদের জন্য প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হচ্ছে মোবাইল সেবা।

কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বন্দিরা সরকারি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। প্রথমে টাঙ্গাইল কারাগার থেকে শুরু হলেও পর্যায়ক্রমে সব কারাগারে এই ব্যবস্থাটি চালু করা হবে।

কিন্তু এর ফলে বন্দীদের জন্য কী পরিবর্তন আসবে?

কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, ‘এর ফলে বন্দিদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকার কারণে অনেকে হয়তো কারাগারে আসতে পারে না, নিয়মিত দেখা সাক্ষাৎ করতে পারে না। কিন্তু টেলিফোনে যদি পরিবার সম্পর্কে খোঁজখবর পান, তার মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত হবে। সেই সঙ্গে পরিবারের আর্থিক চাপও কমে যাবে।’

সৈয়দ ইফতেখার জানান, এ জন্য প্রতি মিনিটে এক টাকা হারে বন্দিদের চার্জ দিতে হবে। একেকজন বন্দি প্রতি ১৫ দিনে একবার ১০ মিনিট করে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন।

এ ক্ষেত্রে আগেই পরিবারের ঘনিষ্ঠ দুজন সদস্যের মোবাইল নম্বর কারা কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকাভুক্ত করে রাখতে হবে। সেই দুইটি নির্দিষ্ট নম্বরেই তারা কথা বলতে পারবেন। দুই বছর আগে এই উদ্যোগটি নেওয়া হলেও নিরাপত্তার নানা বিষয় সম্পন্ন করে অবশেষে এই সুবিধাটি চালু হচ্ছে।

সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে এসব কথোপকথন হবে, যাতে সবকিছু নজরদারির মধ্যে থাকে। একজন জেল সুপার মনে করলে তিনি সরাসরি কথা শুনতে পারবেন। এসব কথাবার্তাও হবে একজন কারা সদস্যের উপস্থিতিতে।

সাধারণ সদস্যরা কথা বলার সুযোগ পেলেও শীর্ষ সন্ত্রাসী বা জঙ্গিরা এসব সুবিধা পাবে না। কিন্তু কারাগারে এখনো যে অবৈধ মোবাইল ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে, সেটি কতটা ঠেকাতে পারছে কারা কর্তৃপক্ষ?

কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, ‘সেটা বন্ধ করার জন্য আমরা অনেকদূর সফল হয়েছি। কারাগারে নিয়মিত সার্চ হচ্ছে, লাগেজ স্ক্যানার বসানো হয়েছে। ফলে অবৈধ জিনিসপত্রের প্রবেশ রোধ করতে পেরেছি। তবে তারা যে কারাগারের অভ্যন্তরের ভেতরে বসেই হুমকিধামকি বা কথা বলছে, হয়তো তা নয়। হয়তো তারা আদালতে যাওয়ার পথে বা সেখানকার হাজতে বসেও কথা বলতে পারে।

তিনি বলেন, তবে আমাদের নজরদারি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা আশা করছি, সাধারণ বন্দিদের জন্য এই সুবিধা চালু করার পর অবৈধ মোবাইল প্রবেশটাও বন্ধ হয়ে যাবে।-বিবিসি বাংলা

এ বিভাগের অন্যান্য