বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে ৫৫ নিয়োগ
সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যাংকে ৫৫ জনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যভুক্ত ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ নিয়োগ দেয়া হবে। এবারের প্রক্রিয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (প্রকৌশল সিভিল) পদে ৩০জন (বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক-১৭জন, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক-৩জন এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন-১০ জন) এবং কর্মকর্তা (প্রকৌশল সিভিল) পদে ২৫জন (রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক-২জন, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন-২৩ জন) শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। উল্লিখিত পদগুলোতে নারী/ পুরুষ উভয়েই আবেদন করতে পারবেন। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে আবেদন প্রক্রিয়া, চলবে ২৯ মার্চ পর্যন্ত। বিস্তারিত লিখেছেন মাহবুব শরীফ
আবেদনের পদসমূহ
প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এবারের প্রক্রিয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (প্রকৌশল সিভিল) এবং কর্মকর্তা (প্রকৌশল সিভিল) এই দুইটি পদে সর্বমোট ৫৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে।
আবেদনের যোগ্যতা
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (প্রকৌশল সিভিল) পদে আবেদনের জন্য আগ্রহী প্রার্থীকে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুর প্রকৌশলে স্নাতক উত্তীর্ণ হতে হবে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট/সমমান এবং তদূর্ধ্ব পর্যায়ের পরীক্ষায় ন্যূনতম দুইটিতে প্রথম বিভাগ/শ্রেণি থাকতে হবে। শিক্ষাজীবনে কোনো তৃতীয় বিভাগ/শ্রেণি গ্রহণযোগ্য হবে না। কর্মকর্তা (প্রকৌশল সিভিল) পদটিতে আবেদন করতে হলে আগ্রহী প্রার্থীকে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুর প্রকৌশলে স্নাতক উত্তীর্ণ হতে হবে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট/সমমান এবং তদূর্ধ্ব পর্যায়ের পরীক্ষায় ন্যূনতম দুইটিতে প্রথম বিভাগ/শ্রেণি থাকতে হবে। শিক্ষাজীবনে কোনো তৃতীয় বিভাগ/শ্রেণি গ্রহণযোগ্য হবে না।
আবেদন প্রক্রিয়া
আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদন করতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট (www.erecruitment.bb.org.bd) এর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, এবারের প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে কোনো আবেদন ফি লাগবে না। প্রার্থীর নাম, পিতা ও মাতার নাম এসএসসি বা সমমানের সনদে যেভাবে লেখা আছে, অনলাইন ফরমে সেভাবে পূরণ করতে হবে। ফলাফলের ঘরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের প্রকাশিত পরীক্ষার ফলাফলের তারিখ উল্লেখ করতে হবে। সঙ্গে দিতে হবে ৬০০ বাই ৬০০ পিক্সেলের ছবি। এছাড়াও ৮০ কিলোবাইটের ছবি এবং ৩০০ বাই ৮০ পিক্সেল ও সর্বোচ্চ ৬০ কিলোবাইটের স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি। অনলাইনে আবেদন করার পর ট্র্যাকিং নম্বরযুক্ত ফরমটি প্রার্থীর নিকট সংরক্ষণ করতে হবে। আবেদনের সময় প্রার্থীদের প্রাথমিকভাবে কোনো কাগজপত্র জমা দিতে হবে না। আবেদনের যাচাই বাছাই শেষে নেওয়া হবে লিখিত পরীক্ষা এবং সর্বশেষে নেওয়া হবে মৌখিক পরীক্ষা। মৌখিক পরীক্ষার সময় প্রার্থীদের সব একাডেমিক পরীক্ষার সনদ, জাতীয়তার সনদ, নাগরিকত্ব সনদ, চারিত্রিক সনদের সত্যায়িত ফটোকপি সঙ্গে আনতে হবে ।
পরীক্ষার ধরন
প্রত্যেক প্রার্থীকেই প্রয়োজনে নিয়োগ সংক্রান্ত কয়েকটি ধাপে অংশগ্রহণ করতে হবে। প্রথমেই প্রার্থীদের বসতে হবে এমসিকিউ পরীক্ষায়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষাও অংশগ্রহণ করতে হবে প্রার্থীদের । এক ঘণ্টার এমসিকিউ পরীক্ষায় ১০০ ও দুই ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষায় বরাদ্দ থাকবে ২০০ নম্বর। এরপর হবে মৌখিক পরীক্ষা। এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষা সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি), তথ্যপ্রযুক্তি, অ্যানালিটিক্যাল অ্যাবিলিটি বিষয়ে প্রশ্ন থাকে। লিখিত পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের মধ্যে বাংলা, ইংরেজি ও গণিতে ৫০ নম্বর করে থাকে। বাকি ৫০ নম্বর বরাদ্দ থাকে বাংলা থেকে ইংরেজি ও ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদে।
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সাধারণত ২৫ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয়। সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সাধারণত একই ধরনের হয়ে থাকে। বিগত বছরগুলোর নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন অনুসরণ করলে এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষায় ভালো করা যাবে।
বেতনসীমা
চূড়ান্তভাবে একজন নিয়োগপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (প্রকৌশল সিভিল) বেতন হিসেবে ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী পাবেন ২২ হাজার থেকে ৫৩ হাজার ৬০ টাকা পর্যন্ত। একজন কর্মকর্তা (প্রকৌশল সিভিল) বেতন হিসেবে পাবেন ১৬ হাজার থেকে ৩৮ হাজার ৬’শ ৪০ টাকা। এছাড়াও রয়েছে নিয়ম অনুযায়ী অন্যান্য সুবিধা।
বয়সসীমা
উল্লিখিত পদগুলোতে আবেদন করতে হলে ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখ পর্যন্ত আবেদনকারীর বয়সসীমা হতে হবে সর্বোচ্চ ৩০ বছরের মধ্যে। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য। বয়স সংক্রান্ত বিষয়ে কোন প্রকার এফিডেভিট গ্রহণযোগ্য হবে না।
পূর্বপ্রস্তুতির বিষয়সমূহ
সরকারি সব ব্যাংকে এই পদের জন্য প্রায় একই প্রশ্ন করা হয়। সে জন্য বিগত বছরের প্রশ্নগুলো অনুশীলন করলে ভালো ধারণা পাওয়া যাবে। মাধ্যমিক শ্রেণির বইগুলোও খুব কাজে দেবে। বেসিক নলেজ ভালো থাকতে হবে মনে রাখতে হবে যার বেসিক যত ভালো সে পরীক্ষায় তত ভালো করবে।
বাংলা
শুরুতে যে পরীক্ষাটা হবে তা হলো এমসিকিউ পরীক্ষা। এতে থাকবে বাংলা ব্যাকরণ অংশের প্রবাদ প্রবচন, উপসর্গ, সন্ধি বিচ্ছেদ, সমার্থক শব্দ, বাংলা পরিভাষা, বাগধারা, পদ, সমোচ্চারিত শব্দ, এক কথায় প্রকাশ, বিপরীত শব্দ, শুদ্ধ বানান, বচন, সমাস, কারক, বিভক্তিসহ নানা বিষয়ে প্রশ্ন। বিভিন্ন উপন্যাসের লেখকের নাম, বিভিন্ন গ্রন্থের নাম, বিভিন্ন উপন্যাসের চরিত্রের নাম, রচয়িতা, পঙক্তিমালা, জন্ম-মৃত্যুকালসহ উপন্যাস, নাটক ও সাহিত্যের অন্যান্য অংশ থেকে প্রশ্ন থাকে। রচনামূলক পরীক্ষায় সাম্প্রতিক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে রচনা ও বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ থাকে।
ইংরেজি
বর্তমান সময়ে ইংরেজি ছাড়া পরিক্ষার কথা কল্পনাই করা যায় না। এই পরীক্ষাতেও তার ব্যতিক্রম নয়। ইংরেজি গ্রামার অংশে এমসিকিউ পরীক্ষায় গ্রামারের নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। রচনামূলক অংশে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইংরেজি রচনা আসতে পারে। বাংলা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদও থাকে। বাজারে বিভিন্ন প্রকাশনীর গ্রামার বই পাওয়া যায়। সেসব বই ছাড়াও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির পাঠ্য ইংলিশ গ্রামার বইগুলো অনুশীলন করলে আপনার প্রস্তুতি বেশ ভালো হবে।
গণিত
অন্য বিষয়গুলোর মতো পাটিগণিত ও বীজগণিত দুই অংশ থেকেই প্রশ্ন করা হয় এমসিকিউ এবং রচনামূলক পরীক্ষায়। পাটিগণিতে লসাগু, গসাগু, শতকরা, সুদকষা, অনুপাত-সমানুপাত, ঐকিক নিয়মসহ নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। বীজগণিতে উত্পাদক নির্ণয়, সমীকরণ, মূলদ, অমূলদ সংখ্যা, অসমতা, সূচক ও লগারিদমের সূত্রের প্রয়োগ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। সব সময়েই নিচের ক্লাসের বইগুলো বেশি কাজে আসে। সে ক্ষেত্রে চাইলে নবম ও দশদ শ্রেণির বইগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
সাধারণ জ্ঞান
বরাবরই সকল নিয়োগ পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞানকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। বাংলাদেশ প্রসঙ্গ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় সাধারণ জ্ঞান অংশে। চোখ রাখতে পারেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্র-পত্রিকা ও নিউজভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে।
সাধারণত শুধু এমসিকিউ পরীক্ষায়ই সাধারণ জ্ঞানের বিষয়ে প্রশ্ন আসে। জাতীয় বা বাংলাদেশ বিষয়গুলোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ভৌগোলিক অবস্থা, ভাষা আন্দোলন, ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সভ্যতার ইতিহাস, শিল্প ও বাণিজ্য, অর্থনীতি, কৃষি, সর্বশেষ বাজেট, জিডিপি, অর্থনৈতিক সমীক্ষা, সরকার, রাজনীতি ও বিচারব্যবস্থাসহ সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাবলির বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। আন্তর্জাতিক বিষয়ের মধ্যে বিশ্বরাজনীতি, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিভিন্ন দেশ, মুদ্রা, আন্তর্জাতিক আইন, বিচার, দিবস, সন্মেলন, পুরস্কার, সম্মাননা, খেলাধুলাসহ সাম্প্রতিক সময়ের বিশ্বের নানা ঘটনা নিয়ে সাজানো হয় প্রশ্নাবলি।