সিলেটে হাজারো শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে বইপড়া উৎসবের উদ্বোধন

সিলেটে হাজারো শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে বইপড়া উৎসবের উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টারঃ সিলেট তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার প্রত্যয় ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হয়েছে বইপড়া উৎসবের।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে জীবনমান উন্নয়ন প্রয়াসী সংস্থা ইনোভেটর এর আয়োজনে এই উৎসব উদ্বোধন হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন- দেশপ্রেমের শিক্ষা দিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠের কোনো বিকল্প নেই। আর বই হচ্ছে ইতিহাসের ধারক। বৈচিত্র্যময় বই পাঠ আমাদের জীবনকে জ্যোতির্ময় করে তুলে। একাত্তর বাঙালীর জীবনে সে রকমই একটি জ্যোতির্ময় অধ্যায়।

বক্তারা তরুণদের উদ্দেশ্য করে বলেন- ‘মুক্তিযুদ্ধ’ কেবল একটি শব্দ নয়, এর আড়ালে রয়েছে অত্যাচারীর নাগপাশ থেকে মুক্ত হওয়ার তীব্র আকাঙ্খা, সংগ্রাম আর মুক্তি অর্জনের প্রতিজ্ঞা।

দেশপ্রেমিক একটি তরুণ প্রজন্মের মাধ্যমেই কেবল মুক্তিযুদ্ধের অর্জন সমুন্নত রাখা সম্ভব। তারা আরো বলেন- ইনোভেটরের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হওয়ার এ আন্দোলন নতুন পথের সন্ধান দেবে বিভ্রান্ত তরুণ প্রজন্মকে। বক্তারা বলেন- মুক্তিযুদ্ধকে হৃদয়ে ধারণ করা প্রজন্মই গড়ে তুলতে পারে স্বপ্নের সোনার বাংলা।

বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংঙ্গীত শিল্পী অনিমেষ বিজয় চৌধুরীর নেতৃত্বে ও ইনোভেটরের সমন্বয়ক আশরাফুল ইসলাম অনির তত্ত্বাবধানে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

তার আগে বেলা ২টা থেকে সিলেট মহানগরী সহ-প্রত্যন্ত জেলা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন চৌহাট্টা শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে। রিপোর্টিং বুথে উপস্থিতি জানানোর পরপরই তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি করে লাল সবুজ পতাকা।

উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন- ইনোভেটরের মুখ্য সঞ্চালক ও সিটি কাউন্সিলার রেজওয়ান আহমদ।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন- সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট লুৎফুর রহমান, সিলেট জেলা প্রশাসক মো. রাহাত আনোয়ার, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, এভারেস্ট বিজয়ী প্রথম বাংলাদেশী মুসা ইব্রাহিম এবং বিজ্ঞানী ও অষ্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ জহিরুল আলম সিদ্দিকী।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- ইনোভেটরের নির্বাহী সঞ্চালক প্রণবকান্তি দেব। ইনোভেটরের সদস্য জান্নাতুল নাজনীন আশা এবং নওরীন আক্তার কলির যৌথ উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ইনোভেটরের প্রধান সমন্বয়কারী জান্নাতুল ফেরদৌসী তারিন, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মো. শাহরিয়ার আহমদ ও রেদওয়ান আহমদ।

এর আগে অতিথিদের বরণ করে নেন ইনোভেটরের সদস্য ফারহানা আহমেদ সোহা। আলোচনা সভা শেষে স্কুলের শিক্ষার্থীদের রশীদ হায়দারের বিখ্যাত গ্রন্থ ‘শোভনের স্বাধীনতা’ এবং কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাবেয়া খাতুনের ‘মেঘের পর মেঘ’ গ্রন্থটি তুলে দেওয়া হয়।

২৩ ফেব্রুয়ারী এই গ্রন্থের উপর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ‘জ্ঞানের আলোয় অবাক সূর্যোদয়!/এসো পাঠ করি/বিকৃতির তমসা থেকে/আবিষ্কার করি স্বাধীনতার ইতিহাস’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ইনোভেটর ২০০৬ সাল থেকে এই বই পড়া উৎসবের আয়োজন করে আসছে।

এ বছর মোট ৮২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৯’শ ৮৪জন শিক্ষার্থী এই উৎসবে অংশ নেয়। অনুষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও সিলেটের শিল্প, শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের অন্যান্য