দেশের দারিদ্র্য হার ২৪.৩ ভাগে নেমে এসেছে
দেশের দারিদ্র্য হার ২৪ দশমিক ৩ ভাগে নেমে এসেছে। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী দেশে অতি দরিদ্র্য মানুষের হার ১২ দশমিক ৯ ভাগে নেমে এসেছে। পরিবার প্রতি আয় বাড়লেও আয় বৈষম্য কিছুটা বেড়েছে। জীবন যাত্রার মান আগের চেয়ে কিছুটা উন্নত হলেও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ব্যয় জরিপ-২০১৬ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে বিবিএস ভবনে এই জরিপের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের মানুষের আয় ও ভোগ বৈষম্য কিছুটা বেড়েছে। দারিদ্র্যের হার শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পকিল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টক রাজশ্রী এস পালাকার, বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন।
প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে এই প্রকল্পের পরিচালক দিপঙ্কর রায় উল্লেখ করেন, দেশে দারিদ্র্য হার দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৩ ভাগে। গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্যের হার দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৪ ভাগ এবং শহরাঞ্চলে এই হার ১৮ দশমিক ৯ ভাগ। ২০১০ সালের জরিপ অনুযায়ী দেশে দরিদ্র্য মানুষের এই হার ছিলো ৩১ দশমকি ৫ ভাগ। সেসময় গ্রামীণ অঞ্চলে দারিদ্র্যের হার ছিলো ৩৫ দশমিক ২ ভাগ এবং শহরাঞ্চলে এই হার ছিলো ২১ দশমিক ৩ ভাগ। তিনি জানান, প্রতি পাঁচ বছর পর পর খানার আয় ব্যয়ের বিস্তারিত তথ্য পেতে এ ধরণের জরিপ করা হয়। এবারের জরিপে নমুনা আকার বাড়ানো হয়েছে।
প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০১৬ এই সময়ে মানুষের আয়ের মাঝে যে বৈষম্য ছিলো সেটি অল্প হলেও বেড়েছে। তাছাড়া সাধারণ মানুষের খাদ্য বহির্ভূত খাতে ব্যয় আগের চেয়ে বেড়েছে।
ড. জাহিদ হোসেন বলেন, প্রতিবেদনে ভালো খবরটি হলো দেশে দারিদ্র্য হার কমছে। কিন্তু খারাপ খবরটি হলো ২০০৫ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত যে হারে দারিদ্র্য হার কমেছিলো এখন সেটি ধীর হয়েছে। তাছাড়া আয় ভোগের ক্ষেত্রে ব্যবধান কিছুটা হলেও বেড়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এ ধরণের তথ্য নীতি নির্ধারকদের জন্য উপযোগী হবে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করাহয়েছে, ২০০৫ সালে দেশে ৪০ ভাগ মানুষ দারিদ্য সীমার নীচে বাস করতো। এই হার ২০১০ সালে কমে হয়েছে ৩১ দশমিক ৫ ভাগ। অন্যদিকে ২০১৬ সালে এই হার কমে হয়েছে ২৪ দশমিক ৩ ভাগ। সে হিসাবে দারিদ্র্য হার কমার গতি ধীর হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজশ্রী এস পালাকার বলেন, বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচনে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে। গেলো ১৬ বছরে বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানুষের ৫০ ভাগ কমেছে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের ভাত, আটা খাওয়ার পরিমাণ কমেছে এটি ভালো খবর। তাছাড়া সবজি খাওয়া বেড়েছে এবং ডিম গ্রহণের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।