মেলার নামে সিলেটে আবারও বাবলুর প্রতারণা?

সিলেটের সময় ডেস্ক:

সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে সিলেটে আবারো ৫ম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৯ আয়োজন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মেলার স্টল বরাদ্দের জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে মেলার ষ্টল বিক্রির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এই মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা এম.এ.মইন খান বাবলু। মেলার নাম করে বারবার ওই বাবলুর প্রতারণার শিকার হয়েছেন সিলেটের সাধারণ মানুষ। আবারও নতুন করে শুরু করেছে মেলা। অথচ মেলার নামে এই প্রতারণার কথা জানেন না মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি।

বিগত সময়ে বাংলাদেশ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সোসাইটির উদ্যোগে প্রতিবন্ধীদের সাহায্যার্থে সিলেট সদর উপজেলার বটেশ্বর এলাকায় মেলার আয়োজন করা হয়। উর্ধ্বতনমহল কিংবা স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ব্যাতিরেকে মেলার বসালেও প্রশাসনের অনুমতি ছিলনা প্রতিবন্ধী শিল্প পণ্য মেলা। নাম শুনে যে কারোরই দরদ জাগতে পারে। বাস্তবে দৃশ্যপট ভিন্ন। এবারও প্রতিবন্ধীদের সহায়তার নাম ভাঙ্গিয়ে আবারও মানুষের সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে মেলার আয়োজন চেষ্ঠা করেন আলোচিত মেলা ব্যবসায়ী মঈন খান বাবলু ওরফে মেলা বাবলু।

স্থানীয়রা জানান, মেলা বাবলু এই মেলার আয়োজক। আর অন্ধ কল্যাণ সংস্থার নাম দিয়ে সিলেটে ফের মেলার ফন্দি করতে ছিলেন তিনি। অনুমোদন না থাকা স্বত্বেও কতিপয় ক্ষমতাসীন নেতাদের শেল্টারে মেলার নামে লটারী খেলার আয়োজন করতে চেয়েছিলেন বাবলু। কিছু দিন পূর্বে তৃণমূল নারী উদ্যোক্তার কাঁধে ভর করে মেলার আয়োজন করা হয়। অসহায়কে সাহার্য্য, রোগারোগ্য ব্যাধিতে ব্যক্তির চিকিৎসা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে চিকিৎসা এসবের নামে- বেনামে মেলার আয়োজন করা হয়। কিন্তু যার জন্য মেলার আয়োজন করা হয় তারা কোন সহযোগীতা পান না। আর পেলেও তা নামমাত্র। মেলার পুরো অর্থ ভাগাভাগি করে নেওয়া হয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও মেলা বাবুলের মধ্যে। অর্থমন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন সময়ও মেলার আয়োজন করা হয়। সিলেটে ঘন ঘন মেলা আয়োজন নিয়ে বিপাকে রয়েছেন ব্যবসায়ীরাও। এ নিয়ে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ মনোভাব বলেন, প্রশাসন অনুমতি দিয়ে আমাদের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেন। তিনি আরো বলেন ক্ষমতাশীন দলের কয়েকজন নেতাদের শেল্টারে মেলার আয়োজন করেন বাবলু।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগেও সিলেটে বিভিন্ন নামে একাধিক মেলার আয়োজন করেন মঈন খান বাবলু। প্রশাসন থেকে সুবিধা পাওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন নেতাদের শেল্টার নেন। বিনিময়ে নেতারদের দেওয়া হয় মেলা থেকে অর্জিত অর্থের ভাগ।

গত বছরের ৮ আগস্ট বিভাগীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ফটক সংলগ্ন এলাকায় মাসব্যাপী ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মেলার আয়োজন করা হয়। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে ছিল বাবলুর প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বেনারশি মসলিন অ্যান্ড জামদানি সোসাইটি। অথচ মেলায় লটারী বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা আয় করলেও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে দেওয়া হয় নামে মাত্র ৫ লাখ টাকা।

একইভাবে গত ঈদুল ফিতরের সময় নগরের টুকেরবাজার তেমুখী সংলগ্ন মাঠে তাঁত বস্ত্র শিল্প মেলার আয়োজন করেন বাবলু। মাস ব্যাপী শুরু হওয়া মেলা চলে আড়াই মাস। অর্থাৎ পবিত্র ঈদুল আজহার সময় একই স্থানে মেলার বদলে অবৈধ গরুর হাট করে মেলার সমাপ্তি টানেন বাবলু।

এছাড়া গত বছরের ৬ জানুয়ারি সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বারের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে ছিলেন বাবলু। নামে আন্তর্জাতিক হলেও ওই মেলায় ফুটপাতের পণ্য তুলে ব্যাপক সমালোচিত হন। পাশাপাশি লটারীর টিকিট ও মেলাঙ্গনে প্রবেশ টিকিট নগর থেকে গ্রামে গাড়ি যোগে বিক্রি করা হয়। ওই মেলা থেকে এক দূরারোগ্য ব্যধিতে নিহত জনৈক সাংবাদিককে সহায়তার আশ্বাস দিলেও সিকি আনাও দেওয়া হয়নি। এভাবে মেলার নামে প্রতারণা করে চলেছেন বাবলু।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেট চেম্বার অব কমার্সের এক নেতা বলেন, আর্থিক সাহায্যের খাত দেখিয়ে সিলেটের মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে মেলার আয়োজন করা হয়। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে মেলার আয়োজন করা হয় ওই খাতকে বঞ্চিত রাখেন উদ্যোক্তারা। অতীতে তৃণমূল নারী উদ্যোক্তার কাঁধে ভর করে অসহায়কে সাহার্য্য, দুরারোগ্য রোগীদের চিকিৎসার সাহায্য, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে চিকিৎসা এসবের নামে লাক্কাতুরা গলফ ক্লাব সংলগ্ন মাঠে তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির (গ্রাসরুটস)-এর উদ্যোগে মাসব্যাপী মেলার আয়োজন করেন বাবলু। এই মেলার লটারিতে মোটরসাইকেল বিজয়ী অনেকেই তাদের কাগজপত্র পাননি। এমন কি এই মেলায় রুবেল অটো নামক যে শোরুম থেকে বিজয়ীদের মোটরসাইকেল দেয়া হয়েছিলো সেই শোরুমের মালিককে তার কোম্পানীর পাওনা টাকা পরিশোধ করেননি বাবলু।

অভিযোগ রয়েছে যাদের সহযোগীতার উদ্দেশ্যে মেলার আয়োজন করা হয় তারা বাবলুর এই সকল মেলা থেকে কোনো সহযোগীতা পাননি। আর পেলেও তা শুধু নামমাত্র। মেলার পুরো অর্থ ভাগাভাগি করে নেওয়া হয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও বাবুলের মধ্যে। এদিকে সিলেটে ঘনঘন মেলা আয়োজন নিয়ে বিপাকে রয়েছেন ব্যবসায়ীরাও।

জানা যায়, সিলেটে বিভিন্ন নামে একাধিক মেলার আয়োজন করেন মঈন খান বাবলু। প্রশাসন থেকে সুবিধা পাওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন নেতাদের সহযোগীতা নেন তিনি। বিনিময়ে নেতারদের দেওয়া হয় মেলা থেকে অর্জিত অথের ভাগ। বিভাগীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ফটক সংলগ্ন এলাকায় মাসব্যাপী ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মেলার আয়োজন করা হয়। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে ছিল বাবলুর প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বেনারসি মুসলিন অ্যান্ড জামদানি সোসাইটি। এই সময় মেলায় লটারি বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা আয় করলেও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে দেওয়া হয় নামে মাত্র ৫ লাখ টাকা।

একইভাবে গত ঈদুল ফিতরের সময় নগরের টুকেরবাজার তেমুখী সংলগ্ন মাঠে তাঁত বস্ত্র শিল্প মেলার আয়োজন করেন বাবলু। মাস ব্যাপী শুরু এই মেলা চলে আড়াই মাস। এই মেলার মূল উদ্দেশ্য ছিলো পবিত্র ঈদুল আজহার সময় একই স্থানে মেলার বদলে অবৈধ গরুর হাট করার । পরে সেখানে বসানো হয় অবৈধ গরুর হাট।

এ বিষয়ে মঈন খান বাবলু বলেন, বিভিন্ন সময় মেলার আয়োজন করলেও সহযোগীতার জন্য করে থাকি। আগে তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা মেলা থেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে ৫লাখ টাকা দিয়েছি। রুবেল অটোর সাথে কিছু টাকা লেনদেনের কথাও তিনি স্বীকার করেন।

রুবেল অটো শোরুমের মালিক রুবেল আহমদ বলেন, লাক্কাতুরা গলফ ক্লাব সংলগ্ন মাঠে তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির (গ্রাসরুটস) উদ্যোগে মাসব্যাপী মেলায় আমার শোরুমের মোটরসাইকেল দেয়া হয়েছিলো। এখনও এই টাকা আমি পাইনি। টাকা না পাওয়ায় আমি মোটরসাইকেলের কাগজ বাবলুর কাছে সমজিয়ে দেইনি।

এসকল প্রতারণার কথা জানেন না বলে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হাসিন আহমদ।

এ বিভাগের অন্যান্য