সুনামগঞ্জ-২ আসনে নাছিরের পরিবর্তে মাঠ কাপাতে প্রস্তুত মাহবুব চৌধুরী
মবরুর সাজু:
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে আগাম নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রম ও গণসংযোগ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীরা । প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এই আসনে আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত এ আসনে অবশ্য প্রত্যেকবারই দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও তেমনই ঘটবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে এবার ভাটির রাজনীতি পাল্টে যাচ্ছে। শুরু হয়েছে নতুন মেরু করণ । জানাযায় সুনামগঞ্জের ২ আসনেই নিজ দলের নবীন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের চ্যালেঞ্জে জিতে চূড়ান্ত নির্বাচনী লড়াইয়ে নামতে হবে প্রবীণদের। এ আসনে প্রবীণদের পাশাপাশি এবার মাঠে রয়েছেন শক্তিশালী অনেক নবীন মনোনয়ন প্রত্যাশী। নানা কারণে অনেক আসনেই মনোনয়ন দৌঁড়ে পিছিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি- দু’ দলের প্রবীণরা। নির্বাচন নিয়ে এমন জটিল সমিকরণ থাকায় এবার আগাম পর্যবেক্ষণ করে সম্ভাব্য ফলাফল নির্ধারণ করা বেশ কঠিন। তবে প্রার্থী যাঁকেই করা হোক না কেন, সার্বিকভাবে জেলার পাঁচটি আসনের চারটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কারণ হিসেবে গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় জয়কারের যুগে জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৮টিতেই বিজয়ী হয় বিএনপি। আর সদর আসন দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির দখলে থাকায় সেটির ফলাফল নির্ধারণ করবে দলটি একক নাকি জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করে ওপর। দিরাই, শাল্লায় অতীতে এই আসনে নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি দ্বৈত লড়াই হতো আওয়ামী লীগের প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও বিএনপির নাছির উদ্দিন চৌধুরীর মধ্যে। সুরঞ্জিতের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তা উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে এখন এই আসনের সংসদ সদস্য। এদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভাটি বাংলায় বিএনপির মোড় পাল্টে দিতে এ আসনে বরাবরের মতো নয় এবারও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরীর সাথে মনোনয়ন লড়াইয়ে রয়েছেন আরেক বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী, ওয়ান ইলিভেনের পরিস্থিতি ডিঙ্গানো সিলেট মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক,ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব চৌধুরী নির্বাচনী এলাকায় দীর্ঘদিন জণগণের কল্যাণে কাজ করে বেশ আলোচনায় রয়েছেন। এলাকার ভোটররা জানান দিরাই শাল্লায় বেশ কাজ করে এলাকায় জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছেন মাহবুব । এদিকে মাহবুব চৌধুরী বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে বলেন নাছির উদ্দিন জাতীয় পার্ট থেকে চলে আসা নেতা, তিনি দিরাই শাল্লায়, শুরু থেকে পরাজয় করে আসছেন এতে দলের জন্যে মঙ্গল নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদাজিয়া ও তারেক রহমান আশা করি পরিবর্তনর দিকে হাত বাড়াবেন । দেশের মানুষ, ভাটির মানুষ পরিবর্তন চায় । আমি সংসদ সদস্য হলে মানুষের জীবন মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখব, তবে নেত্রীর সিদ্ধান্তই আমাদের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলেন জানান। লড়াইয়ে সুশাসনই আমাদের ভিশন,সুনীতি-জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে আমরা বদ্ধ পরিকর । সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত এ আসনে অবশ্য প্রত্যেকবারই দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও তেমনই ঘটবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা সীমাবদ্ধ থাকবে মূলত আওয়ামী লীগ, বিএনপি মধ্যে। স্থানীয় রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিদের মতে, নির্বাচনী বৈতরণী পেরোনোর বেলায় দিরাই এবং শাল্লায় এখনও ব্যক্তি ইমেজই মুখ্য ভূমিকা রাখে। তবে আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এ আসনে ধানের শীষ প্রতীককে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নৌকার জয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নানা কৌশলে এগোচ্ছেন। তবে দুই দলেই অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে।বিএনপির অন্তর্দ্বন্দ্ব এখানে প্রায় এক দশকের পুরনো। দলের দিরাই উপজেলার সাবেক সভাপতি প্রয়াত আবদুস শহীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একাংশ কাজ করেছে দীর্ঘ দিন। এই অংশের সমর্থকরা আবদুস শহীদ চৌধুরীর ছেলে যুক্তরাজ্য বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেলকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। পোস্টার, লিফলেট ও ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছেন তারা। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে থাকায় সেখানেও পাবেলের পক্ষে তার সমর্থকরা কাজ করছেন।