গোলাপগঞ্জের মেয়র হতে তৎপর আ. লীগ-বিএনপির একাধিক প্রার্থী
তফসিল ঘোষণার পর পরই তৎপর হয়ে উঠেছেন গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন প্রধান দুই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তারা। আ. লীগ-বিএনপি দুই দলেই একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী তৎপর রয়েছেন।
কারা প্রার্থী হবেন, কোন দলের মনোনয়ন কে পাচ্ছেন- এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যেও রয়েছে আলোচনা।
এতোদিন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের প্রচারণায় ধীরগতি দেখা গেলেও তফসিল ঘোষণার পর থেকে আটঘাট বেঁধে মাঠে প্রচারণায় নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে, উঠান বৈঠক, কুশল বিনিময় ও বিভিন্ন হাট-বাজারে দলীয় কার্যালয়ে কর্মীসভার মধ্য দিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল জব্বার চৌধুরীর মৃত্যুতে শূন্য হওয়া মেয়র পদের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। গত সোমবার সিলেট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভার উপনির্বাচনে দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা খুরশেদ আলম এ তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ৯ সেপ্টেম্বর। ১০ সেপ্টেম্বর বাছাই ও ১৭ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন।
মেয়র পদে লড়তে এ পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন সাবেক মেয়র, আওয়ামী লীগ নেতা জাকারিয়া আহমদ পাপলু, গত নির্বাচনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুর রহমান লিপন, যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাবেল, গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহীন, সিলেট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি মহিউস সুন্নাহ চৌধুরী নার্জিস প্রমুখ।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন, যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাবেল, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন বলে জানা যায়। আর বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, সিলেট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি মহিউস সুন্নাহ চৌধুরী নার্জিস, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আলেকুজ্জামান আলেক, মশিকুর রহমান মহি, গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রুহেল আহমদ প্রমুখ। এদিকে গত নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ধানের শীষ প্রতিকে নির্বাচন করলেও এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উপনির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইতিমধ্যে আ’লীগ ও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রচারণার পাশাপাশি নিজ দলের মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। পাশাপাশি নিজ নিজ পক্ষে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করার তৎপরতাও অব্যাহত রেখেছেন তারা।
মঙ্গলবার উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় জাকারিয়া আহমদ পাপলু, আমিনুল ইসলাম রাবেল ও রুহেল আহমদের নাম কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রীয় নেতারাই এদের মধ্যে থেকে প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন।
গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহীন বলেন, উপনির্বাচনে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো। প্রচারণায় পৌরবাসীর ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু জানান, বিগত নির্বাচনের মত এবারো আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক আমি আশা করছি। আমি জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। বিগত দিনে মেয়র থাকাকালীন সময়ে গোলাপগঞ্জ পৌরসভাকে উন্নয়নের মাধ্যমে প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় উন্নীত করেছিলাম। জনগণ পূর্বের উন্নয়নের কথা বিবেচনা করা আবারো আমায় নির্বাচিত করবে।
আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাবেল বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকেই আমি রাজনীতি ও নানা সামাজিক কাজে যুক্ত আছি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে থেকে তাদের সেবা করতে চাই। দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে মাঠে নেমেছি। আশা করি, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন আমিই পাব।’
প্রসঙ্গত, গত নির্বাচনে সিরাজুল জব্বার চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) হিসেবে মোবাইল ফোন প্রতীকে ৪ হাজার ৫৮২ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুর রহমান লিপন নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে ৩ হাজার ২০৮ ভোট পান এবং তৎকালীন মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাকারিয়া আহমদ পাপলু নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছিলেন ২ হাজার ৪শত ৫ ভোট। বিএনপির প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহিন ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছিলেন ২ হাজার ৩শত ৬০ ভোট