এবার সুনামগঞ্জে নির্বাচনী পরিক্ষার প্রশ্ন ফাঁস !

এটা কোনো পাবলিক পরীক্ষা নয় স্কুলের নির্বাচনী পরীক্ষা চলছে আর তাতেই

সুনামগঞ্জ জেলা শহরের পরিক্ষার্থীরা পরিক্ষার একদিন আগেই প্রশ্নপত্র পেয়ে যাচ্ছে হাতের নাগালে। একই প্রশ্নপত্রে আগের দিন এক বিদ্যালয়ে, পরের দিন আরেক বিদ্যালয়ে এসএসসি’র নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে, পরীক্ষার আগেই অপর স্কুলের শিক্ষার্থীদের হাতে পৌছে যাচ্ছে প্রশ্নপত্র! ঘটনাটি ঘটেছে পৌর শহরের লবজান চৌধুরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায়।

স্থানীয় সুত্রঃ জানায়, ২০১৭ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায় লবজান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৩ অক্টোবর সোমবার ভূগোল ও পরিবেশ পরীক্ষা ছিল। পরদিন মঙ্গলবার ছিল বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ পরীক্ষা। দুটি বিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র নিয়ে দেখা যায়, উভয় স্কুলে প্রশ্নপত্রে হুবহু মিল রয়েছে। কেবল মাত্র বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে পরিক্ষা নেওয়া হচ্ছে অপর বিদ্যালয়ে। একই শহরে প্রায় কাছাকাছি দুটি বিদ্যালয় অবস্থিত হওয়ার ফলে আগেরদিন লবজান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রশ্ন একদিন আগে পেয়ে যাচ্ছে বুলচান্দ স্কুলের শিক্ষার্থীরা। এভাবে প্রতিটি পরিক্ষার প্রশ্নপত্র পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছে বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানায়, ‘লবজান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে যে সাবজেক্ট আজ পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে, সেটা হুবহু প্রশ্নপত্রে পরের দিন আমাদের নেয়া হয়। এভাবে শুরু থেকেই নেওয়া হচ্ছে যার ফলে সবাই ওই প্রশ্নগুলো ফলো করে পরিক্ষায় যায়। শিক্ষার্থী আরও জানায়, আমার এক চাচাতো বোন লবজান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে, তার প্রথম দিনের প্রশ্ন এবং আমাদের ২য় দিনের প্রশ্নের হুবহু মিল থাকায়, আমি প্রত্যেক দিনই তার প্রশ্ন দেখে পড়াশুনা করেছি, সকল প্রশ্নেই হুবহু মিলছে।’ ১১ অক্টোবর লবজান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা শুরু হয়। একই দিনে ভিন্ন রুটিনে একই প্রশ্নে বুলচান্দ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষাও শুরু হয়। শহরের একেবারে কাছাকাছি এলাকায় এই দুটি বিদ্যালয়ের অবস্থান। কাজে অনেক শিক্ষার্থী একে-অপরের আত্মীয়-স্বজন বা প্রতিবেশি হওয়া শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রশ্নপত্র পেয়ে যায়।

এ ব্যপারে বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক প্রশ্নপত্রে এমন মিল থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের কাছেও ধরা পড়েছে। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রধান শিক্ষককেও বিষয়টি আমরা জানিয়েছি। তবে এখনো এই বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’

লবজান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছাত্তার জানান, ‘আমরা আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে পাণ্ডুলিপি নিয়েই প্রশ্নপত্র ছাপার জন্য প্রেসে পাঠিয়েছি। পরীক্ষাও নিয়ম মোতাবেক নেওয়া হয়েছে। কেউ যদি এই প্রশ্ন প্রেস থেকে নিয়ে নিজেদের বিদ্যালয়ের নামে চালিয়ে নেয়, এ দায় আমাদের নয়।’

এব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান , ‘একই প্রশ্নপত্র দিয়ে দুই বিদ্যালয়ের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। কোন বিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, এটি আমার জানা নেই। এমন হলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

এ বিভাগের অন্যান্য