সিলেটে ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি নগরী বিদ্যুৎবিহীন

সিলেটে আকস্মিকভাবে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে বহু ঘর-বাড়ি, গাছপালা, ফসলাদি ও বৈদ্যুতিক সংযোগের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের পর কয়েক ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিলো পুরোনগরী। শুক্রবার রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিলো পুরো শহর। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়। ঝড়ের সাথে ছিলো প্রবল বৃষ্টি। প্রচন্ড বেগে নগরীর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ওই ঘূর্ণিঝড়ের স্থায়িত্ব ছিলো প্রায় ২০ মিনিট। ঘূর্ণিঝড়ে নগরীর বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ড ও ব্যানার খুলে পড়ে। অনেক বস্তি এলাকায় ঘরের চাল উড়ে যায়। প্রচন্ড বাতাসের কারণে অনেক বাসাবাড়ি ও রাস্তাঘাটের উপর গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে এবং বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে। এদিকে ঝড় শুরু হবার পরপরই পুরো শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঝড়ের সাথে প্রবল বৃষ্টি এবং ধমকা হাওয়া থাকায় পথচারীরা পড়েন বেকায়দায়। ঝড় শুরু হবার সাথে সাথে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পথচারীরা তখন বিপণীবিতানগুলোর বারান্দায় ভিড় করেন। ঝড় থেমে যাবার পর বৃষ্টি না থামায় দীর্ঘ সময় তারা এভাবেই দোকানপাটের সামনে আশ্রয় নেন। তখন শহরের রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। রিক্সা কিংবা অন্য কোনো যানবাহন পেতে বেগ পেতে হয়েছে পথচারীদের। যে কারণে অনেকেই সময়মতো পৌঁছতে পারেননি। বাদামবাগিচা এলাকার বাসিন্দা রাজা মিয়া জানান, ঘূর্ণিঝড়ে আউটার স্টেডিয়ামের পাশের টিনের তৈরী মসজিদ উড়ে গিয়ে পড়ে পাশের বাসিন্দা আব্দুল মতিনের বাসায়। এসময় ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা ওই ঘরের এক মহিলা আহত হন। পশ্চিম পীরমহল্লা এলাকার বাসিন্দা শিল্পী চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিশেষ করে টিনের তৈরী অনেক বাসার চাল উড়ে যায়। আম্বরখানা এলাকার পথচারী নিয়াজ জানান, ঝড়ে আম্বরখানার একটি হোটেলের গ্লাস ভেঙ্গে যায়। একইভাবে ভেঙ্গে পড়ে মুসলিম সাহিত্য সংসদের প্রাঙ্গনে থাকা মেলার স্টল। মাছুদিঘীর পাড় এলাকার বাসিন্দা জাফর খান ও নোমান জানান দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। বিউবো বিক্রয় ও বিতরণ (২) বিভাগের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী ইকরাম হাসান চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তুফানে অনেক স্থানে লাইন ছিঁড়ে পড়ে যায়। তবে ঝড় থামার পরপরই কাজ শুরু হয়েছে। শহরের মতো সিলেটের বিভিন্ন উপজেলাতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কিছু ঘরবাড়ি। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে শেষ হয় ঘূর্ণিঝড়। এতে প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ি ও বিপুল সংখ্যক গাছপালা ভেঙ্গে যায়। পাশাপাশি আবাদী ফসল নষ্ট ও বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে ক্ষতির মুখে পড়েন বহু জনসাধারণ।

এ বিভাগের অন্যান্য