যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু, চার বাংলাদেশি গ্রেপ্তার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঃ
শপথ গ্রহণের পর বুধবার প্রথম পূর্ণ দিবস অফিস করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। আর সেই দিনই শুরু হলো নথিপত্রহীন অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড়। নির্বাচনী প্রচারণায় অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকার পালন করতে ক্ষমতা গ্রহণের পরই নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন ট্রাম্প। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে বুধবার।
ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ অভিবাসী সন্দেহভাজন প্রায় ৩শ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গেছে। সন্দেহ হলেই ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করছে তারা।
আইসিই- এর নেতৃত্বে একটি মাল্টি-এজেন্সি বোস্টন, ডেনভার, ফিলাডেলফিয়া, আটলান্টা, সিয়াটেল, ওয়াশিংটন, ডিসি এবং মিয়ামির আশেপাশে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকায় সাদা পোশাকে অভিযান চালিয়ে বুধবার চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। যদিও তার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে নিরাপত্তার কারণে তাদের নাম পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী।
মানবজমিনকে তিনি জানান, বুধবার সকালেই তিনি গ্রেপ্তারের সংবাদ পেয়েছেন। তিনি সকল বাংলাদেশিকে বৈধ আইডি সাথে রেখে চলাফেরা করার পরামর্শ দেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা মিডিয়াকে জানান, আইসিই তাদের নিয়মিত কাজ করবে, আজ (বুধবার ) থেকে শুরু হয়েছে, অবৈধদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া চলতে থাকবে।
চার বাংলাদেশি গ্রেপ্তার:
বিভিন্ন রাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। মিডিয়ার খবর বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন বরো’র ফুলটন থেকে গ্রেপ্তার করেছে চার বাংলাদেশিকে। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এতে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা ঘরের বাইরে বের হওয়ার সাহস পাচ্ছেন না। কিন্তু তাতেও কি রক্ষা আছে। অভিবাসন কর্মকর্তারা বাড়িঘরেও হানা দিতে পারেন। নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনকে অনেকেই বাঙালিপাড়া হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে যারা যুক্তরাষ্ট্রে যান, তাদের বেশির ভাগই প্রথমে ব্রুকলিনে আশ্রয় নেন। অনেকে সেখানেই অবস্থান করেন। বিভিন্ন রকম কাজ জুটিয়ে নিয়ে থেকে যান ব্রুকলিনে। খবরটি মার্কিন প্রশাসনও জানে। ফলে তাদের চোখ যে সেদিকে পড়বে তা হলফ করেই বলা যায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগেই ঘোষণা দিয়েছেন অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করে যার যার দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এমন হুঁশিয়ারির ভয়ে বহু বাংলাদেশি। তাদের সামনে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্টের কর্মকর্তারা সাদা পোশাকে হাজির হচ্ছেন। এ জন্য তাদের আগে থেকে কেউ চিনতে পারছেন না। নিজে আত্মগোপন করারও সুযোগ পাচ্ছেন না। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক বাংলাদেশি মিডিয়াকে বলেছেন- তারা ফুলটনের একটি এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিলেন। অতর্কিতে সেখানে সাদা পোশাকে কয়েকজন কর্মকর্তা গিয়ে উপস্থিত হন। তারা তাদেরকে পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন। কিন্তু তার প্রতিবাদ করেন এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম সংশোধনী অনুযায়ী তিনি পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য নন। তার এমন আচরণ দেখে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। ওই আড্ডায় থাকা অন্যদের ছেড়ে দেয় তারা। এর থেকে কিছুটা দূরে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্টের কর্মকর্তারা। তবে এসব বাংলাদেশির কারও নাম, পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
সূত্র:মানবজমিন