ফেসবুক লাইভে এসে লোক জড়ো করে কার্যালয় ছাড়লেন ইউপি চেয়ারম্যান সাহেল

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

সুনামগঞ্জের একটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে ধরতে তাঁর কার্যালয়ে গিয়েছিল একদল পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুক লাইভে গিয়ে গ্রেপ্তারের পক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে বলেন তিনি। একপর্যায়ে মসজিদের মাইকেও ঘোষণা দিয়ে লোকজন ডাকা হয়। প্রায় ২০ মিনিট লাইভে পুলিশের সঙ্গে তর্কবির্তকের পর একটি মোটরসাইকেল নিয়ে পুলিশের সামনেই কার্যালয় ছেড়ে যান ইউপি চেয়ারম্যান।

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। ওই চেয়ারম্যানের নাম সাহাব উদ্দিন ওরফে সাহেল। পুলিশ বলছে, সাহাব উদ্দিন ও তাঁর লোকজন পুলিশের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। মারধরও করা হয়েছে। তাঁরা এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

সাহাব উদ্দিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি ছাতক পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম চৌধুরীর ভাগনে। ছাতক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন গত নির্বাচনের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। তিনি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন।

সাহাব উদ্দিনের ফেসবুক লাইভে দেখা যায়, একদল পুলিশ সদস্য তাঁর কার্যালয়ে ঢুকে তাঁকে বের হওয়ার অনুরোধ করছেন। কিন্তু সাহাব উদ্দিন চেয়ারে বসে তাঁকে গ্রেপ্তারের পক্ষে কোনো কাগজপত্র আছে কি না, পুলিশকে দেখাতে বলছেন। পুলিশের অনুরোধে কাজ হচ্ছে না। তাঁর সঙ্গে সেখানে থাকা অন্য লোকজনও পুলিশকে কাগজপত্র বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করছেন। একপর্যায়ে তিনি সেখানে থাকা লোকজনকে এলাকার মসজিদের মাইকে তাঁকে ধরে নেওয়ার চেষ্টার বিষয়টি জানিয়ে ঘোষণা দেওয়ার জন্য বলেন। এ সময় ঘরের মধ্যে থাকা কিছু লোককে পুলিশের সঙ্গে তর্ক করতে দেখা যায়। প্রায় ২০ মিনিট এভাবে পুলিশের সঙ্গে তাঁর কথা–কাটাকাটি হয়।

লাইভের শেষ দিকে সাহাব উদ্দিনের পাশে থাকা লোকজনকে বাইরে একটি মোটরসাইকেল প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দেওয়ার বিষয়টি শোনা যায়। একই সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের যাতে কেউ মারধর না করেন, এটিও বলেন একজন। এরপর সাহাব উদ্দিন বলেন, তিনি যেখানেই থাকেন না কেন ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে বলে এলাকাবাসীকে লাইভে আশ্বস্ত করেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, লোকজন বেশি জড়ো হওয়ায় পুলিশ একসময় অসহায় হয়ে পড়ে। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর কক্ষ থেকে বের হয়ে পুলিশের সামনেই ওই মোটরসাইকেলে করে সেখান থেকে চলে যান। লোকজন বেশি হওয়ায় পুলিশ তখন তাঁকে আর ধরার চেষ্টা করেনি।

এ ব্যাপারে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া হাসান জানান, ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজার পুলিশ ফাঁড়ি থেকে কয়েকজন পুলিশ ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে ধরতে গিয়েছিলেন। সদর মডেল থানার নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁকে ধরতে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু পুলিশের সংখ্যা কম হওয়ায় সমস্যা হয়েছে। ওসি আরও বলেন, মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকার লোকজন জড়ো করা হয়। পরে পুলিশকে মারধর করে ওই ইউপি চেয়ারম্যান পালিয়ে যান। তাঁরা আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য সাহাব উদ্দিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিভাগের অন্যান্য