ওসমানীনগরে চোরাই চিনি ছিনতাইকালে বিএনপির দুই নেতাসহ আটক ৬

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

ভারতীয় চোরাই চিনি ছিনতাই চক্রের মূলহোতা ও সিলেট মহানগর বিএনপির দুই শীর্ষ নেতা মান্নান ও সুমনসহ মোট ছয়জনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা।

রবিবার মধ্যরাতে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের সাদিপুর সেতু এলাকা থেকে স্থানীয় জনতা তাদেরকে আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে ভারতীয় চিনি ভর্তি ২৫০ বস্তার একটি ট্রাক, দু’টি মাইক্রোবাস ও দু’টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

এ সময় ভারতীয় চোরাই চিনি ও অন্যান্য ভারতীয় চোরাই পণ্যের ভাগবাটোয়ারাকারী কাওছার আহমদ ও জুমায়েল ইসলাম জুমেল পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনতা।

আটককৃত মহানগর বিএনপির দুই শীর্ষ নেতা মান্নান ও সুমন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ সিদ্দিকী বলয়ের বলে জানা গেছে।

এদিকে চিনি ছিনতাইকালে মান্নান ও সুমনের আটকের সংবাদ পেয়েই মধ্যরাতে তাড়াহুড়া করে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।

আটক ও বহিষ্কৃত নেতারা হলেন, সিলেট মহানগরীর ২৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ সুরমার বারখলা গ্রামের মৃত ছানা মিয়ার ছেলে মো. সোলেমান হোসেন সুমন (৪২) ও ২৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং ভার্থখলা গ্রামের মৃত দিলু মিয়ার ছেলে মো. আবদুল মান্নান (৪৩)। ছিনতাইকালে জড়িত অপর চার সহযোগী হলেন- সিলেট সদর উপজেলার বটেশ্বরস্থ মলাইটিলার মৃত করম আলীর ছেলে মনির আহমদ (৩২), জৈন্তাপুরের বাঘেরখালের মমতাজ আলীর ছেলে তোফায়েল আহমদ (২৬), একই এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে মো. শাহীন আহমদ (২৫) ও গোয়াইনঘাটের ফতেপুর তৃতীয়খন্ডের মঈন উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪২)।

পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর থেকে দক্ষিণ সুরমার বাইপাস সড়ক ও চণ্ডিপুল এলাকা হয়ে ওঠে ভারতীয় চিনি ছিনতাইয়ের নিরাপদ স্থান। প্রতিদিনই সেখানে চিনি ভর্তি ট্রাক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। আর ওই ছিনতাই চক্রকে শেল্টার দিচ্ছেন দুই বিএনপি নেতা। রবিবার রাতে জৈন্তাপুর থেকে ভারতীয় ২৫০ বস্তা চিনি ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। তখন কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে ওই ট্রাকের পিছু নেয় চারজন চোরাকারবারী। পথিমধ্যে চিনি ভর্তি ট্রাকটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে একদল ছিনতাইকারী। তারা একটি মাইক্রোবাস (নোহা) ও দুইটি মোটরসাইকেল নিয়ে চিনি ভর্তি ট্রাকটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে শুরু হয় হট্টগোল। এমন সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে দুই বিএনপি নেতাসহ ছয়জনকে আটক করতে সক্ষম হলেও অন্যরা গাড়ি রেখে পালিয়ে যান। এদের মধ্যে কাউছার ও জুমেল নামের দুই ব্যক্তি ছিলো। তখন জনতা পুলিশকে খবর দিলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাদিপুর সেতুর সামনে থেকে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় পুলিশ চিনি ভর্তি ট্রাক, দুইটি মাইক্রোবাস ও দুইটি মোটরসাইকেল আটক করে। এ সময় ছয়জনকে পুলিশ আটক করতে সক্ষম হলেও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজন পালিয়ে যায়।

ওসমানীনগর থানার ওসি (তদন্ত) আরাফাত জাহান চৌধুরী জানান, সাদিপুর সেতুর সামনে থেকে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় জব্দ করা হয়েছে ভারতীয় চিনিভর্তি একটি ট্রাক, দুটি মাইক্রোবাস ও দু’টি মোটরসাইকেল। এদের মধ্যে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত চারজন এবং চিনির চালান ছিনতাইয়ের চেষ্টার দায়ে দুই বিএনপি নেতাকে আটক করা হয়।

এ বিভাগের অন্যান্য