আজকের মধ্যে কাজে ফিরতে চিকিৎসকদের প্রতি নির্দেশ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতায় আরজি কর হাসপাতালের শিক্ষানবিশ নারী চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে চলমান চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে আজ মঙ্গলবারের মধ্যে কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। গতকাল সোমবার আরজি কর মামলার শুনানির সময়ে শীর্ষ আদালত এই নির্দেশ দেন।
এদিকে ওই ঘটনার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি গত রবিবার বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার প্রবাসী ভারতীয় বিক্ষোভ করেছেন। এদিন বিশ্বের ২৫টি দেশের ১৩০টিরও বেশি শহরে বিক্ষোভ হয়েছে বলে সংগঠকরা জানিয়েছেন।
তবে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বলেও শীর্ষ আদালত জানিয়েছেন। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রর ডিভিশন বেঞ্চে গতকাল আরজি কর মামলায় দ্বিতীয় দফার শুনানি হয়। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী গীতা লুথরা। তিনি বলেন, শুধু কলকাতা নয়, বিভিন্ন জেলা হাসপাতালেও জুনিয়র চিকিৎসকরা হুমকির মুখে।
পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না হলে তাঁরা কাজ করতে পারছেন না। কর্মবিরতি প্রসঙ্গে লুথরা বলেন, জুনিয়র চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করলেও সিনিয়ররা কাজ করছেন। তাই চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়নি।
এদিকে শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, কর্মবিরতির জেরে ২৩ জন রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। প্রায় ছয় লাখ রোগী বিপদে।
দুই পক্ষের প্রশ্নোত্তরের পর পর প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ রাজ্যকে নিতে হবে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় কাজ করবেন এসপি এবং জেলা শাসকরা। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি বসানো থেকে শুরু করে আরো নানা পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিন্তু জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফিরতেই হবে।
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, আগামীকাল বিকেল ৫টার মধ্যে কাজে যোগ দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজে না ফিরলে রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেই পারে। সিনিয়র ডাক্তাররা কাজ করছেন বলে কর্মবিরতি চলবে এটা হতে পারে না।
বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে গত রবিবার বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার প্রবাসী ভারতীয় বিক্ষোভ করেছেন। এদিন বিশ্বের ২৫টি দেশের ১৩০টিরও বেশি শহরে বিক্ষোভ হয়েছে বলে সংগঠকরা জানিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রথমে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, তাইওয়ান ও সিঙ্গাপুরে ছোট-বড় বিভিন্ন দল বিক্ষোভ শুরু করার পর ধীরে ধীরে তা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন, এনডিটিভি