প্রেমের টানে বাংলাদেশে, মালয়েশিয়ার তরুণী এখন ভাঙ্গার বধূ

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

অনলাইনে ফুলের ব্যবসা করতে গিয়ে পরিচয়।এরপর প্রেমের সম্পর্ক। অবশেষে সেই সম্পর্ককে পূর্ণতা দিতে বাংলাদেশে আসেন মালয়েশিয়ার এক তরুণী। এর পর গতকাল রবিবার রাতেই ঢাকার একটি হোটেলে ফরিদপুরের শামীম হোসেনকে (৩৫) বিয়ে করেন তিনি। মালয়েশিয়ার তরুণী এখন ভাঙ্গার বধূ।

শামীম হোসেন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের শরীফাবাদ খারদিয়া গ্রামের মহিউদ্দিন শেখের ছেলে। আর মালয়েশিয়ার তরুণী সুয়াইলা বিনতে আব্দুর রহমান (৩৭) কামপুন জুম্বাল আপ্পান বাহাও শ্রাম্বান শহরের মৃত আব্দুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা। তিনি ওই দেশে একটি রেস্টুরেন্টে চাকরি করেন।

নবদম্পতি সূত্রে জানা যায়, শামীম হোসেন পাঁচ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় যান। তার ভিসা ছিল কনস্ট্রাকশনের। তিন বছর আগে সুয়াইলা অনলাইনে ফুলের ব্যবসা করতেন। সে সময় তার সঙ্গে শামীমের পরিচয়। এরপর প্রেমের সম্পর্কের পর ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেন তারা। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য অবশেষে পরিবারের সবাইকে রাজি করিয়ে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে আসেন সুয়াইলা।

বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন এই তরুণী। রাতেই ঢাকায় একটি হোটেলে ২ লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শামীম ও সুয়াইলা। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভাঙ্গায় শ্বশুরবাড়িতে যান এই তরুণী। এ সময় নববধূকে এক নজর দেখতে গ্রামবাসীরা ভিড় জমান শামীমের বাড়িতে।

এদিকে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণে ভীষণ খুশি বর শামীম হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি কনস্ট্রাকশনের ভিসায় যাই, ওই দেশের আইনে মালয়েশিয়ার নাগরিককে বিয়ে করা নিষিদ্ধ থাকায় বিয়ে করতে পারি নাই। শুধু অপেক্ষার প্রহর গুনছি। তিন বছর ধরে ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক। আমার ভিসার মেয়াদ শেষ হলে গত ডিসেম্বরে আমি দেশে চলে আসি।’

শামীম হোসেন বলেন, ‘ওর সঙ্গে আমার প্রতিনিয়ত কথা হতো। সুয়াইলা অবশেষে বাংলাদেশ এসে ঘর বাঁধতে রাজি হয়। তার পরিবারের সঙ্গে অনেক সংগ্রাম করে সবাইকে রাজি করে বাংলাদেশের চলে আসে সে। রাতেই তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। কিছুদিন পরে হয়তো আমাকে স্বামী হিসেবে মালয়েশিয়ার ভিসা দিয়ে নতুন করে নিয়ে যাবে।’

‘তবে আমরা বার্ধক্য সময়ে দেশেই ফিরে আসব- এই কথাও হয়েছে। সুয়াইলারা তিন ভাই ও তিন বোন, সে সবার ছোট’, বলেন শামীম হোসেন।

জানতে চাইলে নববধূ সুয়াইলা তার ভাষায় বলেন, ‘বাংলাদেশের তথা শ্বশুরবাড়ির মানুষের ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ। আমি আপাতত ঘর বাঁধতে এক মাসের ছুটি নিয়ে শামীমের কাছে ছুটে আসি। আমার শামীমের সঙ্গে বিয়ে হয়ে গেল এতে আমি খুব খুশি।’

এ ঘটনায় প্রতিবেশী এক রাজনীতিবিদ ফিরোজুর রহমান নিরু খলিফা বলেন, ‘আমরা গ্রামবাসী শামীমের দম্পতির জন্য দোয়া করি, তারা যেন সুখী হয়। গ্রামের মানুষ আমরা সবাই খুশি।’

এদিকে ঘারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনসুর আহমেদ মুন্সী বলেন, ‘শুনেছি মালয়েশিয়ান একটি মেয়ে আমার ইউনিয়নের ছেলেকে বিয়ে করতে চলে এসেছে। আমি ওদের বিষয়ে কোনো সহযোগিতা লাগলে অবশ্যই করব এবং আমরা ইউনিয়নবাসী খুশী।’

এ বিভাগের অন্যান্য