রাজপথে জনগণের পার্লামেন্ট হবে: বাম জোট

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেছেন, ‘আমি, ডামি’র নির্বাচনের পার্লামেন্ট জনগণের পার্লামেন্ট নয়, এটা লুটেরা ব্যবসায়ী ও একদলীয় কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতাসীনদের ক্লাব। বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি হলো জনগণের পার্লামেন্ট, এখানে জনগণের কথা বলা হলো। এরপর দুদক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সামনে অবস্থান করা হবে। এভাবে বামপন্থীরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নির্বাচন প্রভৃতি বিষয়ে রাজপথে জনগণের পার্লামেন্ট বানাবে।

 

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে এ সব কথা বলেন তাঁরা।

অবিলম্বে কোটি টাকার ঊর্ধ্বে ঋণ খেলাপিদের তালিকা ও কিভাবে সংশ্লিষ্ট ঋণ পেয়েছিল তার তথ্য প্রকাশ এবং অর্থ পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবিতে আয়োজিত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাধারণ সম্পাদক ও বাম জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স। সমাবেশে বক্তৃতা করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ, সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের নেতা আব্দুস সাত্তার, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধরণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, সিপিবি নেতা ডা. সাজেদুল হক রুবেল প্রমুখ।

সমাবেশে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘লুটেরাদের প্রশ্রয় দিয়ে ব্যক্তিখাত গড়ে তোলা যায় না।

এটা হয় স্বজন তোষণমূলক পুঁজিবাদ। এটা হয় শাসক দলের ব্যক্তিখাত ও বাইরের ব্যক্তিখাত শাসকদল পরিবর্তিত হলে এরা পরিবর্তিত হয়। এই ব্যক্তিখাত দাঁড়ায় না।’ 

তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ কম দেখানোর জন্য নানা পদ্ধতি বের করা হয়।

এতে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় না। খেলাপি ঋণ বেড়ে চলে, চলছে। এর মধ্য দিয়ে প্রকৃত শত্রুদের আড়াল করা হচ্ছে।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘এদের শক্তির উৎস ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এখন এসব দল এদের পক্ষে চলে গেছে।

’ তিনি খেলাপি ঋণ গ্রহীতাদের তালিকা প্রকাশ, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং এদের বিদ্যুৎ, পানির লাইন কেটে দেওয়ার দাবি জানান।

বাম জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘দেশের আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনার দায় বাংলাদেশ ব্যাংক এড়িয়ে যেতে পারে না।’ তিনি দলীয় প্রভাবমুক্ত হয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দেশপ্রেমিক অর্থনীতিবিদদের পরামর্শে পরিচালনায় আহ্বান জানান। তিনি ব্যাংকের তথ্য উন্মুক্ত ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। 

সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘সরকার শুধু লুটেরাদের পাহারাদার নয়, এরা এই লুটের অংশীদার। এদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন, গণসংগ্রাম গড়ে তুলে মুক্ত বাজারের অর্থনীতি বিদায় করে সমাজতান্ত্রিক অভিমুখীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’ বেনামে ঋণের সাথে যুক্ত ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘২০০৮ সালের পর দেশের টাকা ফেরত আনা হলো, অথচ আওয়ামী দলীয় লোকদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে কারোর টাকা ফেরত আনা হলো না। এখন কিছু গোষ্ঠী, পরিবার সরকারের ছত্রছায়ায় ব্যাংক লুটপাট করে চলেছে। দুর্নীতিবাজ ব্যাংক পরিচালকদের অপসারণ করা হচ্ছে না। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং পুরস্কৃত করা হচ্ছে।’

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা-কর্মীরা সোমবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমবেত হয়। এরপর সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি তোপখানা-পল্টন-মতিঝিল হয়ে বাংলাদেশে ব্যাংকে গেটের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়।

এ বিভাগের অন্যান্য