হবিগঞ্জে প্রথম নারী এমপি হবেন কেয়া চৌধুরী

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

হিমালয়সম প্রতিকূলতা কাটিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর ঈগল প্রতীকে বিজয়ী হয়েছেন। এই বিজয়ে হবিগঞ্জ জেলায় নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন তিনি। তাঁর আগে এই জেলায় কোনো নারী এমপি হতে পারেনি। এমনকি নিকটতম প্রতিদ্বন্ধীও হতে পারেনি কোনো নারী।

শুধু তাই নয়, ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ ও সিলেট জেলার সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হয়েছিলেন কেয়া চৌধুরী। তার আগে বা পরে হবিগঞ্জের কোনো নারী সংরক্ষিত নারী আসনেরও এমপি হতে পারেননি। 

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে কেয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও নিজের পারিবারিক ঐতিহ্য ও ব্যক্তিগত সুনামের কারণে ভোটে জিতেছেন বলে মনে করেন স্থানীয় ভোটাররা।

 

দলীয় নেতারা জানান, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীও হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ ও বাহুবল) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন তিনি। এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরীকে। পরে সমঝোতায় জাতীয় পার্টিকে এই আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল মুনিম চৌধুরীকে (লাঙ্গল) সমর্থন দিলে নৌকার প্রার্থী ডা. মুশফিক মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। পরে আওয়ামী লীগের নেতারা মাঠে চষে বেড়ান লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে। কিন্তু তৃণমূলের জনপ্রিয় কেয়া চৌধুরীর কাছে উভয় দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়। 

দলের নেতারা আরও জানান, কেয়া চৌধুরী দশম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তার বাবা হবিগঞ্জের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড্যান্ট মানিক চৌধুরী ছিলেন সংসদ সদস্য।

মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য মানিক চৌধুরী ২০১৫ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। এলাকায় তাঁর বাবার ইতিবাচক ভাবমূর্তি রয়েছে। এ ছাড়া নৌকার প্রার্থী না থাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেকেই কেয়ার ঈগলের পক্ষে ভোটের মাঠে নামেন। এর ফলও মেলে ভোটে। বড় ব্যবধানেই জয় পেয়েছেন তিনি। কেয়া চৌধুরী ৭৫ হাজার ৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু পান ৩০ হাজার ৬০৩ ভোট। 

জয়ের প্রতিক্রিয়ায় কেয়া চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ীই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হই। স্বতন্ত্র হলেও দলের সবাই আমার পক্ষেই ছিলেন। এ ছাড়া দল-নিরপেক্ষ ভোটাররাও আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। সবার সহযোগিতার কারণেই আমার জয় সম্ভব হয়েছে’।

তিনি জানান, তাঁর আসনটি উন্নয়ন বঞ্চিত। সরকারের উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করে এই এলাকাকে এগিয়ে নেওয়াই তার স্বপ্ন। বিশেষ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নারীদের উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। অতীতের ন্যায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেই কাজ করার প্রতিশ্রতি দেন তিনি।

এ বিভাগের অন্যান্য