আমার জীবনের উদ্দেশ্য এলাকার জন্য কাজ করা: পরিকল্পনামন্ত্রী
সিলেটের সময় ডেস্ক :
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, একটা সময় আমি পায়ে হেঁটে, সাঁতার কেটে স্কুলে যেতাম। চিন্তা করতাম গ্রামে কেনো ভালো প্রতিষ্ঠান হয় না। যখন চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জের ডিসি ছিলাম তখন গ্রামে বেশি কাজ করতাম। ময়মনসিংহে কাজ করার সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা হয়েছিল। তখন তাকে উচ্চ সম্মান দেখিয়েছি। তিনি তখন বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা আমাকে মনে রেখেছেন। তখনই চাকরি ছেড়ে তার সাথে কাজ করতে চেয়েছিলাম। তিনি না করেছেন। আমাকে মায়া করেছেন। আমি নিজের জন্য কিছু করি না, আমার নিজের কোনো মুনাফা নেই, আমি কোনো তদবির করি না। এলাকার মঙ্গলের জন্য কাজ করি। আমার জীবনের উদ্দেশ্য এলাকার জন্য কাজ করা এবং করে যাচ্ছি।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়ার রথপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, নৌকায় ভোট দেন আমি সেটা বলবো না। শুধু বলবো আপনারা ন্যায় বিচার করবেন। মুনাসিব করবেন। উন্নয়ন দেখবেন। সুনামগঞ্জের উন্নয়নের দিকে তাকান। অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলায়। সারা দেশে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে আওয়ামীলীগ সরকার৷ আপনারা যদি মনে করেন এ সরকার দেশ, দশের জন্য কাজ করে তাহলে অবশ্যই সরকার ও সরকারের প্রতীকের প্রতি সুবিচার করবেন বলে আমার বিশ্বাস। শেখ হাসিনা আমাকে স্নেহ করেন। কাজ নিয়ে গেলে কাজ দেন। আমি সুনামগঞ্জের উন্নয়নে আরও অনেক কাজ করতে চাই। আপনারা সবাই সে সুযোগ দিবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা উন্নয়নে বিশ্বাস করি। শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্যের উন্নয়ন চাই আমরা। বার বার সংসদে পাঠিয়েছিলেন বলেই আজ দিরাই রাস্তার মুখে মেডিকেল কলেজ দেখছেন। এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয়। আরও দেখবেন। অনেক কিছুই দেখবেন যা একসময় সুনামগঞ্জবাসী কল্পনাও করেনি। এ জন্য সুযোগের দরকার।
মন্ত্রী বলেন, একটি দুষ্টের দল আছে। দুষ্ট লোকেরা, ঘৃণ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করছে। অবরোধ হরতাল এখন আর মানুষ চান না। নির্বাচন বানচালে নানান ধরণের ফন্দিফিকির করছে। অরাজকতা করতে হবে চায়। সাধারণ মানুষকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখাই এখন তাদের মূল উদ্দেশ্য। রেললাইনে কেটে, বাসে আগুন দিয়ে তারা জনগণের ক্ষতি করছে৷ বিশ্বের বড় বড় দেশের বারান্দায় গিয়ে আমাদের নামে অভিযোগ দিচ্ছে। এসবে লাভ হবে না। পাগলা, শান্তিগঞ্জের মতো গ্রামে আসতে হবে। তারা চাইলে আপনারাও ক্ষমতায় যাবেন। সাধারণ মানুষ এখন আর হরতাল অবরোধ চায় না। মানুষকে ভোটে পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটে মানুষকে পাঠাবেন। পান পাতার নির্বাচনে আপনারা আমাকে দেখেছিলেন। তখন প্যাঁচ করে আমাকে ৩ হাজার ভোটে হারানো হয়েছিলো। আমি একদম গ্রাম থেকে উঠে আসা পরিবারের লোক। শেখ হাসিনা আমাকে বার বার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আপনারা আমাকে ভোট দিয়েছেন শেখ হাসিনা আমাকে কাজে লাগিয়েছেন। মন্ত্রণালয় দিয়েছেন। আমি কাজ নিয়ে গেলে কাজের অনুমোদন দেন, বিশ্বাস করেন। এটা আমার সৌভাগ্য।
এ সভায় সভাপতিত্ব করেন পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নূরুল হক।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আহমদের পরিচালনায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন- শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি, অর্থনীতিবিদ, মান্নানপুত্র সাদাত মান্নান অভি, সহ-সভাপতি তেরাব আলী, সাধারণ সম্পাদক মো. হাসনাত হোসেন, পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার, আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত চৌধুরী টপ্পা, পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাজিদুর রহমান সাজিদ, ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সুশীল চন্দ্র দাশ ও উপজেলা যুবলীগ নেতা আফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সাজিদুর রহমান সাজিদ ও গীতা পাঠ করেন সঞ্জিত চক্রবর্তী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন, দোলন রানী তালুকদার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আসাদুর রহমান আসাদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, দপ্তর সম্পাদক সেলিম রেজা, সদস্য এডভোকেট নূর আলম, প্রবীণ মুরব্বি আইয়ুব উদ্দিন বুদ্ধি, ইউপি সদস্য আলী আহমদ, জফরুল হক জফর, প্রবীণ মুরব্বি লুৎফুর রহমান, নূরুল ইসলাম, শওকতুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, নরেশ দাশ, ডা: জিল্লুল হক, অনিল চক্রবর্তী, ভানু দাশ, অনিল দাশ, আবদুল আলীম, অজিত সূত্রধর, পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল ইসলাম লালন, প্রাক্তন মেম্বার নূরুল হক, কবিন্দ্র দাশ, আ.লীগ নেতা ছৈয়দুল হক, আজিজির রহমান, আবদুল কাইয়ুম, জয়নাল আবেদীন, যুবলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য আজাদুল হক আজাদ, ইউপির সাবেক সদস্য মকবুল হোসেন, যুবলীগ নেতা নিজাম উদ্দিন, শ্রমিক লীগ নেতা বাছির তালুকদার, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মনসুর আলম সুজন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ, পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. আজাদ হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অপু চন্দ্র পাল, ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা নিকুঞ্জ সূত্রধর ও সজল সূত্রধর প্রমুখ।
এরপর ব্রাহ্মণগাঁওয়ের লোকনাথ মন্দিরে শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ অষ্টপ্রহর ব্যাপী নাম ও লীলা সংকীর্তন পরিদর্শন করেন মন্ত্রী মান্নান। কীর্তনের আয়োজন করেন- পুষ্পাঞ্জলি যুব সংঘ। এসময় মন্দির পরিচালনা কমিটি, পুষ্পাঞ্জলি সংঘের সকল সদস্য ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।